Saturday, April 25, 2015

শোক নয়, প্রতিরোধ:যুগান্তর

কবর জিয়ারত, স্বজনদের শোক, বন্দনা, বুক ফাটা কান্না, সরকার, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কিংবা বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পুষ্পস্তবক অর্পণ, শ্রমিক সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা ইত্যাদি বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে রানা প্লাজা ধসের দু’বছর পূর্তি পালিত হল। দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার ভোর থেকেই সাভারে রানা প্লাজা ভবনের অস্থায়ী বেদিতে ছিল সর্বস্তরের মানুষের ঢল। পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও নীরবতা পালনের মধ
্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দোয়া-মাহফিল, আলোচনা সভা, মানববন্ধন, র‌্যালি ও বিক্ষোভ মিছিল পালন করা হয়। এদিন রাজধানীতেও বিভিন্ন সংগঠনের ব্যাপকভিত্তিক কর্মসূচি পালন করে। শোকবিহ্বল পরিবেশ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করতে শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রস্তুতির কোনো কমতি ছিল না। এদিন নিহত শ্রমিকদের স্মরণে রানা প্লাজা শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ শ্রম অধিকার ফোরাম, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, রানা প্লাজা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সমিতি, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, ঢাকা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ মনোনীত প্রতিনিধিরা তাদের কর্মসূচি পালন করেছে। ২০১৩ সালের এ দিনে জীবিকার তাগিদে কর্মক্ষেত্রে এসে অর্থলোলুপ ভবন মালিক ও গার্মেন্ট মালিকের রোষানলে পড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক। তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করতে পারেনি বলেই সেদিন শ্রমিকরা অনিরাপদ ভবনেও কাজ করতে বাধ্য হয়। যার শেষ পরিণতি ঘটে প্রায় সাড়ে ১১শ’ শ্রমিকের তাজা প্রাণ বলির বিনিময়ে। রানা প্লাজা ধসের দুই বছর পার হলেও এখনও খোঁজ মেলেনি ১৫৯ শ্রমিকের। এসব নিখোঁজ শ্রমিক স্বজনদের হাহাকার ও তীব্র হতাশাও এদিন ভারি হয়ে উঠে। এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই ক্ষতিপূরণ পাননি। যারা পেয়েছেন তাও অপর্যাপ্ত। এ ব্যাপারে সরকার-উদ্যোক্তা কিংবা বায়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকারও অভিযোগ উঠেছে। এ রকম নানা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির মধ্য দিয়েই বিশ্বের শিল্প বিপর্যয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে শোকবিহ্বল এ দিনটি পালিত হয়েছে। জুরাইন কবরস্থান- স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় বাকরুদ্ধ আশপাশের লোকজন : বারে বারে মূর্ছা যাচ্ছিলেন সীমা ও তার বৃদ্ধ বাবা অলি মুসল্লি। জুরাইন কবরস্থানে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে থাকা, ঘাসে ঢাকা প্রিয় স্বজনের কবরের ওপর বাবা-মেয়ে আছড়ে পড়ছিলেন বুকফাটা কান্নায়। পাশেই বিলাপ করছিলেন ছোট ভাই সোহেল। খানিকটা দূরে মেয়ের ছবি জড়িয়ে বুক থাপড়াচ্ছিলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা লিয়াকত আলী শেখ। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় স্বজন হারিয়েছেন তারা। টানা আর্তনাদ করছিলেন সব বয়সীরা। সব মানবিক অনুভূতিকে এক লহমায় স্তব্ধ করে দেয়া সেই দৃশ্যের সাক্ষী ছিলেন যারা, বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন তারাও। রানা প্লাজা ধসে নিহত ১ হাজার ১৩৫ জনের মধ্যে ২৯১ জনের কবর দেয়া হয়েছে জুরাইন কবরস্থানে। ওই সময় যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। রানা প্লাজা ট্রাজেডির দুই বছরপূর্তি উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল জুরাইন কবরস্থানে এসেছিল নিহত পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা ও আশপাশের লোকজন। সরেজমিন দেখা যায়, ২৯১টি কবরের মধ্যে ১৫-২০টি কবরে ডিএনএ নম্বর সংবলিত নেইম প্লেট রয়েছে। অধিকাংশ কবর ভেঙে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে পড়ে রয়েছে। ডিএনএ নেইম প্লেটগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কোনো কোনো ভাঙা কবরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে ৫-৬টি নেইম প্লেট। বাঁশের টুকরোতে লাগানো নেইম প্লেটগুলো মরিচা ধরে এক প্রকার ছাই হয়ে রয়েছে। আর বাঁশের টুকরোগুলো উইপোকা এমনভাবে খেয়েছে যার অস্থিত্ব মেলা দায়। গোপালগঞ্জ থেকে আসা লিয়াকত আলী শেখ মেয়ের কবর খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ব্যাকুল হয়ে ৫৪ নম্বর কবরটি খুঁজছিলেন। ওই নম্বরের ডিএনএ প্লেটটি খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। এদিক-ওদিক ছুটছিলেন আর কাঁদছিলেন। ৬৫ বছর বয়সী লিয়াকত আলী বললেন, এত কবর কী করে বুঝব মেয়ের কবর কোনটি। গত বছর নম্বর ছিল, এ বছর পাচ্ছি না। আমার মেয়ের কবর কোনটি একটু বের করে দাওনা বাবা। তার কান্না বাঁধ মানছিল না। বললেন, ১৫ বছর বয়সী মেয়ে রাফিজা প্রাণ হারায়। বয়স বাড়িয়ে চাকরি নিয়েছিল সে। ২ মেয়ের মধ্যে রাফিজা ছিল ছোট। ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, ২ বছর হয়ে গেল এখনও পর্যন্ত কবরগুলো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। দরিদ্র মানুষদের নিয়ে কেন এত প্রতারণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা পেয়েছেন জানিয়ে লিয়াতক আলী শেখ জানান, একটি মহল তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়াসহ মোবাইলের মাধ্যমে কখনও ১০ কখনও ২০ হাজার টাকা চাচ্ছে। বলা হচ্ছে, টাকা না দিলে তার মেয়ের স্বামী রয়েছে বলে মিথ্যে প্রচারণা চালাবে। বানানো স্বামীই সব টাকা পাবে। প্রাণনাশের হুমকি ও প্রতারণার মাধ্যমে টাকা চাওয়া হয়েছিল ০১৭৩৩৪৪৬০২২ ও ০১৮১৫৫৩৬১৭৭ নম্বরে। এ দুটি নম্বর দিয়ে আশুলিয়া থানায় জিডি করা হলেও পুলিশ এখনও কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। দুপুর আড়াইটায় মেয়ের কবর জিয়ারত করতে এসেছিলেন অলি মুসল্লি। সঙ্গে ছিলেন মেয়ে সীমা, ছেলে সোহেল ও ৭ মাসের নাতনি মীম। মেয়ে শিউলী আক্তারের কবরে পড়ে বিলাপ করছিলেন তিনি। কবরের ঘাস টেনে টেনে আর্তনাদ করছিলেন সীমা ও সোহেল। কেউ কাউকে সান্ত্বনা দিতে পারছিল না। তাদের কান্নায় আশপাশে থাকা সাধারণ লোকজনও কাঁদছিলেন। তাদের একজন মনোয়ারা বেগম। জানালেন, এখানে তার কোনো স্বজনের কবর নেই, তবু এ দিনটিতে ঘরে থাকতে পারেননি। কবরের দেয়াল ঘেঁষেই তার বাড়ি। নিহতদের স্বজনরা প্রায় এসে আর্তনাদ করেন কবরে পড়ে। অলি মুসল্লি বলেন, তার মেয়ের (শিউলী) বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর নির্যাতনে সংসার ভেঙে যায়। জীবন বাঁচাতে গার্মেন্টে চাকরি নিয়েছিল শিউলী। মেয়ের সঙ্গেই সাভারে থাকতেন তারা। দোষীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে বললেন, কেউ যেন তাদের নিয়ে প্রতারণা না করেন। সীমা বললেন, শিউলী ছিল তার বড় বোন। একসঙ্গেই দু’জন থাকতেন। বোনের এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। ছোট ভাই সোহেল জানান, নিহতদের স্বজনদের চাকরির ব্যবস্থা কেউই করছেন না। বললেন- সহায়তা নয়, ক্ষতিপূরণ চান তারা। নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, রানা প্লাজা ধসে নিহতদের সহায়তা ও নানা প্রতিশ্র“তির নামে সরকার তথা সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো ভাঁওতাবাজি করছেন। নিহতরা সহায়তা নয়, ন্যায্য অধিকার, ক্ষতিপূরণ চায়। নিহতদের কবরগুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কবর রক্ষাসহ ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪৮ লাখ টাকা দেয়া হোক। তিনি বলেন, কমনওয়েলভুক্ত দেশগুলোতে যে আইন মেনে চলে তা হলো ফ্যাটাল অ্যাক্সিডেন্ট অ্যাক্ট। সেখানে বলা আছে লস্ট অব আনিং অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিককে তার আজীবন আয়ের পরিমাণ হিসেব করে অর্থ প্রদান করতে হবে। সেই অনুযায়ী প্রায় ৪৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। রান্না প্লাজায় নিহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান কিংবা সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে প্রায় ১২৭ কোটি টাকা জমা পড়ে। যার মধ্যে মাত্র ২৭ কোটি ৬২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। বাকি টাকা কোথায়, খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে রতন বলেন, ২০১৩ সালে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সংসদে বলেছেন রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১২৭ কোটি টাকা জমা হয়েছিল। জুরাইন কবরস্থানের সিনিয়র ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. সোয়াইব হোসেন জানান, কবরগুলো সংস্কারের দায়িত্ব তার নয়। কবরগুলো ভেঙে যাচ্ছে, নেইম প্লেটগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, লৌহ বা স্টিল দিয়ে নেইম প্লেট প্রতিটি কবরের সামনে বসানো হলে চিহ্ন মুছে যাবে না। নিহতদের স্বজনরাও সহজে তাদের স্বজনের কবর জিয়ারত করতে পারবেন। শোক নয়, প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান শ্রমিক সংগঠনগুলোর : রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের উপযুক্ত ভরণ-পোষণ ও ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্র নিরাপদ করতে শ্রমিকদের আরও বেশি প্রতিবাদী হয়ে উঠার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন গার্মেন্ট ও শ্রমিক সংগঠনগুলো। রানা প্লাজা ধসের দুই বছরপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার বিভিন্ন সংগঠনগুলোর উদ্যোগে আযোজিত বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও আলোচনা কর্মসূচিতে এসব সংগঠনের নেতারা এ আহ্বান রাখেন। তারা শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, শোক নয়, দাবি আদায় করতে হলে শ্রমিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান ৪ সংগঠনের : শোক নয়, শ্রমিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চা, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ ও জাতীয় গণফ্রন্ট। সংগঠনগুলোর উদ্যোগে সাভারের রানা প্লাজা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে তারা রানা প্লাজা ধসে শ্রমিক হত্যার বিচার, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও ট্রেড ইউনিয়নের অধিকারের দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিকদের প্রতি এ আহ্বান রাখেন। বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন : রানা প্লাজা শ্রমিকরা এখনও ক্ষতিপূরণের আশায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। এখনও অনেক শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। হতাহত শ্রমিকদের পোষ্যদের পুনর্বাসনও অনিশ্চিত। জীবন-জীবিকা নিরাপত্তাহীন। এখনও বিচারের আওতায় আনা হয়নি দায়ী ব্যক্তিদের। বিশ্বের সবচেযে বড় শিল্প বিপর্যয়ে হতাহতেদের স্মরণে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি। এসব দাবিতে বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন এক মানবন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে। কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে তারা ৬ দফা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। ন্যাশনাল পিপলস শ্রমিক পার্টি : ন্যাশনাল পিপলস শ্রমিক পার্টির এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বিজিএমইএর হাঁকডাক ও হম্বিতম্বির শেষ ছিল না। সব ধরনের পুনর্বাসনের উদ্যোগই তারা নেবেন। কিন্তু সেসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি। বক্তারা বলেন, বিজিএমইএর প্রত্যেক সদস্য ১ লাখ টাকা করে দিলেও বিজিএমইএ তহবিলে ন্যূনতম ৫০ কোটি টাকা হওয়ার কথা, যার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। তারা কত তহবিল পেলেন সেটিও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। অথচ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন যে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল : এক বিবৃতিতে এ সংগঠনটি এখনও দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তি না দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকার শুধু গণতন্ত্র হত্যাকারী ফ্যাসিবাদাই নয়, এ সরকার খুনি বর্বর গার্মেন্ট মালিকদেরও রক্ষক।  

No comments:

Post a Comment