Tuesday, April 28, 2015

১৭ বছরে বস্তিবাসী তিন গুণ বেড়েছে:প্রথম অালো

দেশের মোট বস্তিবাসীর অর্ধেকের বেশি বাস করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে। ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার বস্তিতে তাদের বসবাস। এসব বস্তিতে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ দরিদ্র মানুষ থাকে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ বস্তিশুমারির মাঠপর্যায়ের প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, সারা দেশে এখন সাড়ে ২২ লাখ মানুষ বস্তিতে বাস করে। গত ১৭ বছরে বস্তিবাসী বে
ড়েছে তিন গুণ। ১৯৯৭ সালে বস্তিতে বাস করত সাত লাখের কিছু বেশি মানুষ। ‘বস্তিতে শুমারি ও ভাসমান লোকগণনা ২০১৪’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গত বছরের ২৪ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে লোকগণনার কাজ করে বিবিএস। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এই শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। বস্তির সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে শুমারির খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধুনিকীকরণ ও শহরের পরিচ্ছন্নতার জন্য খাসজমিতে গড়ে ওঠা বস্তি উচ্ছেদ করা হলেও পরে তা বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট আকারে গড়ে উঠেছে। এ কারণে গত ১৭ বছরে বস্তিবাসী ও বস্তির সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। জানতে চাইলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশিষ্ট জনসংখ্যাবিদ এ কে এম নূর উন নবী প্রথম আলোকে বলেন, কাজের সন্ধানে গ্রামের গরিব মানুষ শহরে এসে বস্তিতে থাকে। গ্রামেই কাজের সুযোগ করে দিলে শহরে আসা বন্ধ হবে, নতুন বস্তিও গড়ে উঠবে না। তাঁর মতে, অর্থ ও জনবলের অভাবে দেশে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বস্তিবাসীকে ন্যূনতম শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে না। আবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষেও বস্তিবাসীকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব নয়। কেননা, সারা দেশে স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এমনিতেই চাপে থাকতে হয়। বিবিএসের ‘বস্তিতে শুমারি ও ভাসমান লোকগণনা ২০১৪’ অনুযায়ী, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ৩ লাখ ৬ হাজার ৮৪৭টি পরিবার বা খানার বসবাস, যা বস্তিতে বাস করা মোট পরিবারের ৫১ শতাংশ। দেশে মোট বস্তির মধ্যে ১৬ শতাংশ বা ২ হাজার ২১৬টি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায়। এসব বস্তিতে মোট ১ লাখ ২৮ হাজার পরিবার বসবাস করে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ১ হাজার ৬৪৪টি বস্তিতে ১ লাখ ৪২ হাজার পরিবার থাকে। উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বস্তির সংখ্যা ১২ দশমিক ৬০ ভাগ বা ১ হাজার ৭৫৬টি। এসব বস্তিতে বাস করে ৪১ হাজার ৬১১টি পরিবার। দেশের ছোট-বড় ১৩ হাজার ৯৩৮টি বস্তিতে মোট ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯০টি পরিবার বসবাস করে। প্রতিটি পরিবার বা খানার গড় সদস্যসংখ্যা ৩ দশমিক ৭৩। শুমারির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট বস্তিবাসীর ৭০ শতাংশই বাস করেন সিটি করপোরেশন এলাকায়। এসব এলাকার বস্তিতে প্রায় ১৬ লাখ লোক বাস করেন। মূলত সিটি করপোরেশন ও পাশের এলাকায় শিল্পকারখানা গড়ে ওঠায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া খুলনা, কুমিল্লা, বরিশাল, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও রংপুর সিটি করপোরেশনে বিপুলসংখ্যক বস্তি গড়ে উঠেছে। ১৯৯৭ সালে আগের বস্তি শুমারিটি হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে বস্তিতে বাস করতেন ৭ লাখ ৯ হাজার ৬৭৫ জন। ২০১৪ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮৪ জনে। এ সময়ে নতুন করে ১০ হাজার ৯৪৭টি বা প্রায় ১১ হাজার বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৯৭ সালে সারা দেশে বস্তির সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৯১টি। প্রকল্পের পরিচালক জাফর আহমেদ খান বলেন, মাঠপর্যায়ের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন তা বিশ্লেষণ করার কাজ চলছে। শিগগিরই তা প্রকাশ করা হবে। সারা দেশে মোট বস্তিবাসী সাড়ে ২২ লাখ দেশের মোট বস্তিবাসীর অর্ধেকের বেশি বাস করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ১ লাখ ২৮ হাজার পরিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১ লাখ ৪২ হাজার পরিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৪১ হাজার ৬১১টি পরিবার

No comments:

Post a Comment