শের এই ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রতিদিনই তাঁরা সমাবেশ করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করে আসছেন। বাংলা নববর্ষের দিনে দুপুরের পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মানুষের ঢল নামে। এত মানুষের ভিড় সামাল দিতে সেখানে পুলিশের কোনো তৎপরতা ছিল না। এই সুযোগে একশ্রেণির যুবকদের হাতে অনেক নারী লাঞ্ছনার শিকার হন। এসব দৃশ্য পুলিশের স্থাপন করা সিসি ক্যামেরায়ও ধরা পড়ে। কিন্তু পুলিশ গণমাধ্যমে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েই দায় শেষ করেছে। তারা কাউকেই ধরতে পারেনি। ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছিলেন, বর্ষবরণের কোনো কিছুই পুলিশের নজরদারির বাইরে ছিল না। সেখানে যা ঘটেছে, তার সবই পুলিশের ১৩১টি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। বর্ষবরণের দিনের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মোহাম্মদ ইব্রাহিম ফাতেমীকে সভাপতি করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য দুজন হলেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান ও ডিবির উপকমিশনার (পূর্ব) জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর। প্রথম দফায় কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। কমিটি সেই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। এখন নতুন করে আবার সাত দিনের সময় নিয়েছে। জানতে চাইলে কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছিল, কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। ঘটনার শিকার কোনো নারীও আসেননি। ছাত্র ইউনিয়নের কয়েকজন ছাড়া ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। বর্ষবরণের দিনের ঘটনায় পুলিশের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ছাত্র ইউনিয়নের নেতা লিটন নন্দীসহ কয়েকজন লাঞ্ছনাকারীদের সঙ্গে মারামারি করছেন। জানতে চাইলে লিটন নন্দী বলেন, যে ক্যামেরায় মারামারি দেখা গেছে, সেই ক্যামেরার আওতার বাইরে দক্ষিণ পাশে তার কিছুক্ষণ আগে আরও একটি ঘটনা ঘটে। সেখানে এক তরুণীকে প্রায় বিবস্ত্র করা হয়। তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই বলছি, একটা সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছে।’ পুলিশ সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি মামলাও করা হয়। মামলার তদন্তে সহায়তার জন্য রমনা অঞ্চলের পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ও সহকারী কমিশনারকে সদস্য করে অন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। কিন্তু ঘটনার ২২ দিন পরও মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, আদৌ কাউকে শনাক্ত করা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় প্রথম আলোকে বলেন, অনেক লোকের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এত লোকের ভেতর থেকে প্রকৃত অপরাধীকে বের করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ কারণে তদন্তে সময় লাগছে। পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্ষবরণের দিনের ওই ঘটনার পর পুলিশের রমনা অঞ্চলের ডিসি আবদুল বাতেন বলেছিলেন, ওই স্থানে বিবস্ত্রের কোনো ঘটনা সিসিটিভির ফুটেজে তাঁরা দেখেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী বলেন, ‘কিছু ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটতে ফুটেজে দেখা যায়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে লাঞ্ছিত করার মতো কোনো ঘটনা চোখে পড়েনি।’ পুলিশ ও প্রক্টরের বেফাঁস মন্তব্যের পর থেকে আন্দোলন গড়ে ওঠে। বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবাদ শুরু করে। এর প্রতিবাদে অপরাধীদের কুশপুত্তলিকা দাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও জনতার প্রতিবাদ নিয়ে নাটিকা পরিবেশন, মশাল মিছিল, প্রতিরোধ পর্ব পালন, মোমবাতি প্রজ্বালন, রোড পেইন্টিং, নারী সমাবেশসহ সবই হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি তদন্ত শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে প্রামাণিক তথ্য চায় কমিটি। তথ্য জমাদানের সময় পেরিয়ে গেলেও কমিটির কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণ জমা পড়েনি বলে জানা গেছে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Thursday, May 7, 2015
বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার তদন্ত থেমে আছে:প্রথম অালো
শের এই ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রতিদিনই তাঁরা সমাবেশ করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করে আসছেন। বাংলা নববর্ষের দিনে দুপুরের পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মানুষের ঢল নামে। এত মানুষের ভিড় সামাল দিতে সেখানে পুলিশের কোনো তৎপরতা ছিল না। এই সুযোগে একশ্রেণির যুবকদের হাতে অনেক নারী লাঞ্ছনার শিকার হন। এসব দৃশ্য পুলিশের স্থাপন করা সিসি ক্যামেরায়ও ধরা পড়ে। কিন্তু পুলিশ গণমাধ্যমে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েই দায় শেষ করেছে। তারা কাউকেই ধরতে পারেনি। ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছিলেন, বর্ষবরণের কোনো কিছুই পুলিশের নজরদারির বাইরে ছিল না। সেখানে যা ঘটেছে, তার সবই পুলিশের ১৩১টি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। বর্ষবরণের দিনের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মোহাম্মদ ইব্রাহিম ফাতেমীকে সভাপতি করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য দুজন হলেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান ও ডিবির উপকমিশনার (পূর্ব) জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর। প্রথম দফায় কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। কমিটি সেই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। এখন নতুন করে আবার সাত দিনের সময় নিয়েছে। জানতে চাইলে কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছিল, কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। ঘটনার শিকার কোনো নারীও আসেননি। ছাত্র ইউনিয়নের কয়েকজন ছাড়া ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। বর্ষবরণের দিনের ঘটনায় পুলিশের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ছাত্র ইউনিয়নের নেতা লিটন নন্দীসহ কয়েকজন লাঞ্ছনাকারীদের সঙ্গে মারামারি করছেন। জানতে চাইলে লিটন নন্দী বলেন, যে ক্যামেরায় মারামারি দেখা গেছে, সেই ক্যামেরার আওতার বাইরে দক্ষিণ পাশে তার কিছুক্ষণ আগে আরও একটি ঘটনা ঘটে। সেখানে এক তরুণীকে প্রায় বিবস্ত্র করা হয়। তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই বলছি, একটা সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছে।’ পুলিশ সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি মামলাও করা হয়। মামলার তদন্তে সহায়তার জন্য রমনা অঞ্চলের পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ও সহকারী কমিশনারকে সদস্য করে অন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। কিন্তু ঘটনার ২২ দিন পরও মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, আদৌ কাউকে শনাক্ত করা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় প্রথম আলোকে বলেন, অনেক লোকের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এত লোকের ভেতর থেকে প্রকৃত অপরাধীকে বের করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ কারণে তদন্তে সময় লাগছে। পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্ষবরণের দিনের ওই ঘটনার পর পুলিশের রমনা অঞ্চলের ডিসি আবদুল বাতেন বলেছিলেন, ওই স্থানে বিবস্ত্রের কোনো ঘটনা সিসিটিভির ফুটেজে তাঁরা দেখেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী বলেন, ‘কিছু ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটতে ফুটেজে দেখা যায়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে লাঞ্ছিত করার মতো কোনো ঘটনা চোখে পড়েনি।’ পুলিশ ও প্রক্টরের বেফাঁস মন্তব্যের পর থেকে আন্দোলন গড়ে ওঠে। বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবাদ শুরু করে। এর প্রতিবাদে অপরাধীদের কুশপুত্তলিকা দাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও জনতার প্রতিবাদ নিয়ে নাটিকা পরিবেশন, মশাল মিছিল, প্রতিরোধ পর্ব পালন, মোমবাতি প্রজ্বালন, রোড পেইন্টিং, নারী সমাবেশসহ সবই হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি তদন্ত শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে প্রামাণিক তথ্য চায় কমিটি। তথ্য জমাদানের সময় পেরিয়ে গেলেও কমিটির কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণ জমা পড়েনি বলে জানা গেছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment