Monday, May 25, 2015

সরকার পতনে ৩৭ জেলায় শিবিরের নাশকতার ছক:যুগান্তর

বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ৩৭ জেলায় একযোগে বড় ধরনের সহিংসতা ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল ছাত্র শিবিরের। এতে জড়িত ছিল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ২২ নেতাসহ মহানগর, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৩৮ নেতা। অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতাচ্যুত করার এ পরিকল্পনার মূলে ছিল তাদের অভিভাবক সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠন বিএনপির নির্দেশনা ও কৌশলের বাস্তবায়ন। শিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক এনামুল কবিরকে পুলিশি জিজ্ঞাস
াবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ১০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ২০ ফেব্র“য়ারি গ্রেফতার হন এনামুল কবির। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। ১৭ মে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- ছাত্র শিবিরের এ পরিকল্পনার সঙ্গে ইতোপূর্বে জেএমবির দেশব্যাপী আত্মঘাতী হামলার অনেকাংশে মিল রয়েছে। পরিকল্পনার সঙ্গে গুম, গ্রেফতার না হওয়া নেতাকর্মীরা এখন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সুসংগঠিত হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত তেলের ডিপোসমূহ ও বন্দরের পণ্য গমনাগমনে প্রথমে হুমকি ও পরে নাশকতার মাধ্যমে সরকারের দৃঢ় অবস্থানকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে সরকার পতনের আন্দোলন ত্বরান্বিত করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। এ ক্ষেত্রে তেলের ডিপোসমূহে কর্মরত জামায়াত-শিবিরের মতাদর্শের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। চট্টগ্রাম-পরবর্তী নাশকতার পরিকল্পনার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিবিরের আপ্যায়ন সম্পাদক মোহসিনুল কবীর ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোস্তফা মনোয়ারকে গ্রেফতারে নির্দেশ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়- পরিকল্পনাকারীদের একজন গ্রেফতার হওয়ায় সাময়িকভাবে নাশকতার আশংকা কমে গেলেও দেশ-বিদেশে অবস্থানরত জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতাদের গতিবিধি নজরদারি করা যেতে পারে। পাশাপাশি পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ৩৮ শিবির নেতাকে আটকের নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে। এছাড়া তেলের ডিপোসমূহের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জনবল তালিকা সংগ্রহ করে ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের যাবতীয় তথ্যাদি যাচাই-বাছাই করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশাপাশি তেলের ডিপোসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে আইনশৃংখলা বাহিনীকে আরও সতর্ক করার সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে। পরিকল্পনায় জড়িত যারা : প্রতিবেদনে বলা হয়- পরিকল্পনার সঙ্গে শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক রাজশাহীর মো. নাবিদ আনোয়ার, সাহিত্য সম্পাদক কুমিল্লার ইয়াছিন আরাফাত, মাদ্রাসা সম্পাদক চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন, পাবলিক প্রকাশনা সম্পাদক কুমিল্লার সাজ্জাদ হোসেন, আবাসন সম্পাদক মৌলভীবাজারের শাহীন খান, শিক্ষা সম্পাদক কুমিল্লার মোবারক হোসেন, প্রচার সম্পাদক কুমিল্লার মনির আহম্মেদ, আপ্যায়ন সম্পাদক সাতক্ষীরার মহসিনুল কবীর, যোগাযোগ সম্পাদক শেরপুরের রিয়াদ হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক গাইবান্ধা/কুড়িগ্রামের মোস্তাক আহম্মেদ, তারবিয়াত সম্পাদক গাজীপুরের শ্রীপুরের রাকিব আহমদ, মানবাধিকার সম্পাদক নোয়াখালীর মাহফুজুল হক, বিজ্ঞান সম্পাদক পাবনার সিরাজুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বগুড়ার মোস্তফা মনোয়ার, স্কুল সম্পাদক কক্সবাজারের আ স ম মাসরুর হোসাইন ও নুরুল হক, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক সিরাজগঞ্জের গোলাম কিবরিয়া, সমাজসেবা সম্পাদক বাগেরহাটের শেখ মোহাম্মদ এনামুল কবীর, সমাজকল্যাণ সম্পাদক যশোরের সাইদুর রহমান, কলেজ সম্পাদক ফেনীর রাশেদুল হাসান এবং কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য ভোলার শরীফ রায়হান ও বরিশালের রেজাউল হক। জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতাদের মধ্যে যারা জড়িত তাদের মধ্যে রয়েছেন- চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উত্তরের নুরুল আমিন, ডবলমুড়িং দক্ষিণের এমএইচ সোহেল (মো. হোসেন সোহেল), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি জামালপুরের মোস্তাফিজুর রহমান, নোয়াখালীর সভাপতি গিয়াস কামাল সাজু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আশরাফুল আলম, বরিশাল মহানগর সভাপতি রহমত উল্যাহ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আসাদ উল্যা, সিলেট মহানগর সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি হোসাইন আহমদ, কুমিল্লা মহানগর সভাপতি শাহ আলম, রাজশাহী মহানগর সভাপতি ডা. আনোয়ার হোসেন, খুলনা মহানগর সভাপতি আজিজুল ইসলাম, রংপুর মহানগর সভাপতি আল আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাঈনউদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনিছুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সভাপতি তামিম হোসেন।  

No comments:

Post a Comment