Thursday, May 21, 2015

সমঝোতার স্বার্থে নীতি বদলাবে:প্রথম অালো

সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা প্রতিষ্ঠায় নীতি বদলের পথে হাঁটছে শ্রীলঙ্কা। গৃহযুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগার বাহিনীকে পরাজিত করার ষষ্ঠ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার বক্তব্য এ ইঙ্গিত মিলেছে। খবর বিবিসির। শ্রীলঙ্কার দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের সময় ঠিক কী ঘটেছে সেই সত্য প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার কথাও বলেন গত জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া সিরিসেনা। উত্তর-পূ
র্ব শ্রীলঙ্কার তামিল অধ্যুষিত এলাকাগুলো নিয়ে পৃথক দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষে লড়াই চালিয়ে আসা এলটিটিইকে ২০০৯ সালের ১৮ মে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী। এরপর থেকে দিনটিকে ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছিল দেশটি। তবে বিভেদের অবসান ঘটিয়ে জাতিগত মৈত্রী পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আগ্রহ দেখানো নতুন সিরিসেনা সরকার দিনটিকে ‘স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘স্মরণ দিবস’ পালন উপলক্ষে গত মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘লড়াইটা যখন শেষ হয়, তখন আমরা সবাই খুশি ছিলাম। কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে কি আমরা খুশি হতে পারি? আমরা আমাদের জনগণের হৃদয় ও মন জয় করতে পারিনি। হৃদয় ও মন জয় করতে পারলেই শুধু প্রকৃত পুনর্মিত্রতা অর্জন করা সম্ভব হবে।’ মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গত রোববারই একটি বিবৃতি দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে শ্রীলঙ্কার নতুন সরকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে। কিন্তু সিরিসেনার বক্তব্যকে দেশটির নীতি বদলানোর ইঙ্গিত হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জাতীয়তাবাদী মাহিন্দা রাজাপক্ষে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিশেষ করে গৃহযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও সার্বিকভাবে তামিলদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বরাবরই পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করেন। গত জানুয়ারির নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে অধিকতর উদারপন্থী সিরিসেনা জয়ী হওয়ার পর অভিযোগগুলো আমলে নেওয়ার দাবি জোরালো হয়। সিরিসেনার প্রশাসন যে সত্যিই নীতি বদলের পথে হাঁটছে, তার আরেক ইঙ্গিত গৃহযুদ্ধে নিহত তামিলদের স্মরণে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া। নিহত বেসামরিক তামিলদের স্মরণে গত সোমবার একটি স্মরণ অনুষ্ঠান হয়। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটার পর এই প্রথম এ ধরনের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হলো। আবার যে মুল্লাইতিভু জেলার মুল্লিভাইক্কাল সৈকতে স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, সেনাবাহিনী ও তামিল গেরিলাদের মধ্যে চূড়ান্ত লড়াইটা হয়েছিল সেখানেই। অনুষ্ঠানে অংশ নেন উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সি ভি ভিগ্নাস্মরণসহ তামিল অঞ্চলের রাজনীতিকেরা। জাতিসংঘের হিসেবে, শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটে।

No comments:

Post a Comment