Saturday, May 9, 2015

জিতলেও কঠিন সময় ক্যামেরনের সামনে:প্রথম অালো

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়েও বড় জয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের দল কনজারভেটিভ পার্টি। তবে এমন জয়ের পরও শেষ পর্যন্ত খুব স্বস্তিতে থাকবেন না ক্যামেরন। তিনি বরং পরিণত হতে পারেন আরও অপ্রতিভ প্রধানমন্ত্রীতে। বিশ্লেষকেরা গতকাল শুক্রবার এ মন্তব্য করেছেন। খবর এএফপির। ডানপন্থী লিবারেল ডেমোক্র্যাটস (লিবডেম) দলের সঙ্গে জোট করে পাঁচ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকতে হয়েছে মধ্য ডানপন্থী ক
নজারভেটিভদের। তবে এবারের নির্বাচনের ফল বলছে, তারা নিজে নিজেই সরকার গঠন করতে পারবে। নির্বাচনী প্রচারণার পুরোটা সময়জুড়ে মনে হয়েছিল, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ ও মধ্য বামপন্থী বিরোধী লেবারদের অবস্থা সমানে সমান। নির্বাচন-পূর্ব জনমত জরিপগুলোতেও সেই আভাস দেওয়া হয়েছিল। এমনকি সর্বশেষ জরিপগুলোতে বলা হচ্ছিল, উভয় দল ২৭৩টি করে আসন পেতে পারে। কিন্তু শেষ মুহূর্তের জোয়ারে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেছে। অবশ্য বিশ্লেষকেরা বলছেন, লিবডেমদের আসনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় জোটের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকছে না। তাই প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনকে গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের রাজনীতির অধ্যাপক টনি ট্র্যাভারস বলেন, ‘ডেভিড ক্যামেরনই সম্ভাব্য একটি সংখ্যালঘু কনজারভেটিভ সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকছেন—এটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে। আমার মতো অনেকে অনেক আগে থেকেই এমনটি প্রত্যাশা করে আসছেন।’ ট্র্যাভারস মনে করেন, ক্যামেরন কনজারভেটিভদের সমমনা নর্দান আয়ারল্যান্ডের দলগুলো বা লিবডেমদের টিকে যাওয়া এমপিদের সমর্থন পেতে পারেন। নির্বাচনের এই ফলে ক্যামেরনের ব্যক্তিগত অবস্থান দৃঢ় হলেও সরকারে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে তাঁকে সংগ্রাম করতে হতে পারে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্যাট্রিক ডুনলেভি বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে যেটা স্ববিরোধী সেটা হলো, ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টিকে গেছেন। কিন্তু তিনি একটি সংখ্যালঘু সরকারের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, যে সরকারের উল্লেখযোগ্য কোনো কিছু করার থাকবে না।’ লিবডেম দলের পতনের বড় প্রভাবও ক্যামেরনের ওপর পড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক লিবডেম আসনই কনজারভেটিভদের ঝুলিতে গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষক ডুনলেভি বলছেন, ক্যামেরন নিজের জোটের শরিকেরই পেট কেটে নাড়িভুঁড়ি বের করে দিয়েছেন। এতে করে দলটির অস্তিত্বই এখন বিলীন হতে চলেছে। উদারপন্থী কনজারভেটিভ দাবিদার ডেভিড ক্যামেরন লিবডেম ও কনজারভেটিভ ডানপন্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধ রচনাকারী হিসেবে অতীতে জোট সরকারে শক্ত অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু উদারপন্থীদের অনুপস্থিতিতে তিনি আরও ডানপন্থার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ক্যামেরনের নেতৃত্বে সরকার হওয়ার অর্থ হচ্ছে ২০১৭ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য ইইউতে থাকা না থাকা নিয়ে গণভোট করবেন। গতকালও এ কথা বলেছেন ক্যামেরন। তিনি বলেছেন, ব্রাসেলসের সঙ্গে লন্ডনের সম্পর্কে সংস্কার এনেই তবে ভোটারদের দ্বারস্থ হবেন তিনি। তিনি চান সংস্কার হওয়া ইইউতে যুক্তরাজ্য থেকে যাক। এলএসইর ইউরোপীয় রাজনীতির অধ্যাপক সারা বি. হবোল্ট বলেন, ক্যামেরন অতীতে ইইউর সহযোগীদের সঙ্গে বৈরিতার সৃষ্টি করলেও এখন তাঁদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে। তিনি বলেন, ক্যামেরনকে খুব দ্রুত ব্রাসেলসে গিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে।

No comments:

Post a Comment