Monday, May 11, 2015

মাদকের বিরুদ্ধে সাত দেশ একজোট হচ্ছে:কালের কন্ঠ

মাদকদ্রব্য পাচার নিয়ন্ত্রণে একজোট হতে যাচ্ছে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশ। জাতিসংঘের ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের (ইউএনওডিসি) উদ্যোগে সাতটি দেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে গঠিত হচ্ছে নতুন একটি সংস্থা। এটির নাম সাউথ এশিয়ান রিজিওনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন সেন্টার, সংক্ষেপে সারিক। সংস্থাটিতে বাংলাদেশ ছাড়া থাকছে ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মি
য়ানমার। সার্কভুক্ত অন্য দেশ পাকিস্তান ইউএনওডিসির উদ্যোগে গঠিত আরেকটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকায় সারিক থেকে বাদ পড়ছে। আর অবস্থানগত গুরুত্বের কারণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মিয়ানমারকে। সারিকের কার্যালয় হবে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে। সম্প্রতি সেখানে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইউএনওডিসির রিজিওনাল অফিস অব সাউথ এশিয়ার পক্ষ থেকে সারিকের বিষয়ে সদস্য দেশগুলোকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে সাতটি দেশের চার সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ৩১ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত নয়াদিল্লিতে ইউএনওডিসির রিজিওনাল অফিস অব সাউথ এশিয়ার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক আমির হোসেন, পরিচালক (অপারেশন) প্রণব কুমার নিয়োগী, উপপরিচালক আবুল হোসেন এবং সহকারী পরিচালক মো. মানজারুল ইসলাম অংশ নেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সারিকের মাধ্যমে মাদকদ্রব্যের পাচার নিয়ন্ত্রণে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান এবং যৌথ তদন্ত করা হবে। এতে সাতটি দেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের আওতায় আসছে। তবে বাংলাদেশের কাছে সারিক গুরুত্ব পাচ্ছে মিয়ানমারের কারণে। মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধে বছরের পর বছর দেশটির সহায়তা চাইছে বাংলাদেশ। সারিকের মাধ্যমে দুই দেশ পাচার রোধে একই সংস্থার অধীনে চলে আসছে। সারিকের বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মিয়ানমারের সঙ্গে গত ৫ ও ৬ মে দ্বিতীয় দিপক্ষীয় বৈঠক করেছে বাংলাদেশ। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থাসহ স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়ন এবং যোগাযোগের মাধ্যমে সারিকের সদস্য হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিএনসি। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আমির হোসেন গতকাল রবিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এক্সপার্ট গ্রুপ (বিশেষজ্ঞদল) মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় এ সংস্থার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে মাদক সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান করবে। অভিযানে সহায়তা করবে। যৌথ তদন্তও করবে। এখানে মিয়ানমার থাকছে, তাই আমরা খুবই উৎসাহিত।' আমির হোসেন আরো বলেন, 'পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ইউএনওডিসির উদ্যোগে এমন আঞ্চলিক সহায়তা সংস্থা তৈরি হয়েছে। এখানে সার্কের পাকিস্তান থাকছে না। তবে যুক্ত হচ্ছে মিয়ানমার। সীমান্ত এলাকা দিয়ে ইয়াবা পাচার রোধে আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠক করছি। সারিকের মাধ্যমে এই কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে বলে মনে করছি।' সূত্র জানায়, এশিয়া অঞ্চলে সারিকের মতো আরো দুটি সংস্থা আছে। সাতটি দেশ নিয়ে একটি সংস্থা আছে, যার নাম সেন্ট্রাল এশিয়ান রিজিওনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (কারিক)। এই সংস্থার সদস্য আজারবাইজান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান। পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরান মিলে আরেকটি জয়েন্ট প্ল্যানিং সেল (জেপিসি) নামের আরেকটি আঞ্চলিক সংস্থা গঠন করেছে। তবে এই সেলের কোনো কার্যালয় নেই।

No comments:

Post a Comment