কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ৮ মিনিটে হিগুয়েইনের গোল এবং ৩৩ মিনিটে ডি মারিয়ার আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ। এ দুই ঘটনা বিশেষ করে ডি মারিয়ার মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার পর দলের অন্যদের ইনজুরি এড়াতে ভীষণ সাবধানি হয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বাকিটা সময় একপ্রকার রক্ষণাত্মক খেলে ম্যাচ জিতে নেয় সাবেলা-মেসি বাহিনী। এত দিন যে ডিফেন্স লাইন নিয়ে খোদ আর্জেন্টিনার রক্ষণকর্মীদেরই ভয় আর টেনশন ছিল, কোয়ার্টার ফাইনাল জেতার পর ওই রক্
ষণপ্রাচীর নিয়ে কী যে সন্তুষ্টি আকাশি-নীল জার্সিধারীদের। জাবালেতা, মাশকেরানো, গ্যারেরা ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের কৃতকর্মের পক্ষে কথা বলছিলেন অনর্গল। যদিও আর্জেন্টাইন মিডিয়ার প্রশ্ন ছিল কেন এক গোল দিয়ে এত রক্ষণাত্মক খেলা? এক গোলের কী ভরসা আছে। প্রশ্নের স্বার্থেই প্রশ্ন করা। শেষ পর্যন্ত ওই আর্জেন্টাইন সাংবাদিকেরাই প্রশংসা করেন ডিফেন্সের। আর গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো তো বলেই দিলেন, বেলজিয়ামের বিপক্ষে দুর্দান্ত ডিফেন্ডিংয়ের জন্য ১০-এ ১০ নম্বর পাওয়ার যোগ্য রক্ষণভাগ। দ্বিতীয় রাউন্ডে ১২০ মিনিটের ম্যাচ খেলে যে কান্তি ভর করেছিল, তা কাটিয়ে ওঠা যায়নি, সেমিফাইনালের জন্য বাকি শক্তি সঞ্চয় করা হয়েছে ইত্যাদি কত কথা জাবালেতা, মাশকেরানো আর রোমেরোদের। আসলে বেলজিয়ামের আক্রমণভাগ অতটা ুরধার ছিল না বলেই রক্ষা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে জাবালেতা, মাশকেরানোদের আসল পরীক্ষা হবে আজই। বিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের আক্রমণভাগে যে আছেন রোবেন, স্নেইডার, ভ্যান পার্সির মতো দুনিয়াকাঁপানো খেলোয়াড়রা। রোবেন তো একাই এক শ’। বাম পায়ের এই ক্ষীপ্র গতির ফরোয়ার্ড একাই বিধ্বস্ত করেছিলেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে, যা স্প্যানিশদের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায়ের রাস্তা প্রশস্ত করে দেয়। রোবেন-স্নেইডারকে বলা হয় নেদারল্যান্ডসের মেসি। আর ভ্যান পার্সি তো সুযোগ পাওয়ামাত্রই বল জালে পাঠাতে সিদ্ধহস্ত। এই গতি আর পায়ের কাজওয়ালা ফরোয়ার্ডদের বিপক্ষ আর্জেন্টিনার ডিফেন্স লাইন আজ বালুর বাঁধের মতো ভেঙে পড়তে পারে। গ্রুপে যাদের মোকাবেলা করেছিল আর্জেন্টিনা; সেই ইরান, নাইজেরিয়ার চেয়ে বহু গুণে এগিয়ে নেদারল্যান্ডসের ফরোয়ার্ড লাইন। অথচ ইরান-নাইজেরিয়ার আক্রমণভাগ কি নাস্তানাবুদই না করেছিল মেসিবাহিনীর ডিফেন্সকে। সুইজারল্যান্ড ও বেলজিয়ামের ফরোয়ার্ডরাও সামর্থ্যানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে ফাটল ধরিয়েছে দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের রক্ষণপ্রাচীরে। এদের চেয়ে যোজন যোজন উঁচুতে অবস্থানরত স্নেইডার, রোবেনরা। এদের যদি আজ ঠেকাতে পারেন গ্যারে, জাবালেতা, মাশকেরানোরা, তাহলে ওপরে গোলের কাজটা করে ফেলতে পারবেন মেসি হিগুয়েইন-অ্যাগুয়েরোরা। অবশ্য প্রথমপর্বের ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে আর্জেন্টিনার রক্ষণকর্মীরা এখন বেশ গোছানো। নকআউট পর্বের গত দুই ম্যাচে তা দেখা গেছে; কোনো গোল খায়নি তারা। গত ম্যাচে রোজোর অনুপস্থিতি বুঝতেই দেননি জোসে মারিয়া বাসান্তা, মার্টিন ডেলিচেমিসরা। আর আজ তো সাসপেনশন কাটিয়ে ফিরছেন লেফট ব্যাক ও হেডে গোল করতে দক্ষ রোজো। একই সাথে প্রতিদিনই যে ভালো খেলবেন রোবেন, স্নেইডাররা; এমন তো নয়। আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা আজ এদের ব্যাড ডে-ই কামনা করবেন।
No comments:
Post a Comment