২১৭ রান করেও ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। যে বোলিং করেছেন হিথ স্ট্রিকের স্কোয়াড তাতে ম্যাচে জয় পাওয়ারই কথা। প্রথম ১৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৮ রান সংগ্রহ করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছে পাঁচ উইকেট, যার মধ্যে ছিলেন ক্রিস গেইল, ক্রিক এ্যাডওয়ার্ড, ড্যারেন ব্রাভো, লেন্ডি সিমন্স ও অধিনায়ক ডোয়াইন ব্রাভো। টপ অর্ডারের এ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে দ্রুত হারিয়ে প্রচণ্ড প্রেসারের মধ্যে ব্যাটিং করছিলেন দিনেশ রামাদিন
ও কাইরন পোলার্ড। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০.৪ ওভারে ৮৩/৫। আসলে সূচনা করে দেন অভিজ্ঞ মাশরাফি। দলের রান যখন ষষ্ঠ ওভারেও মাত্র ৯। তখন নিজেকে প্রেসার মুক্ত করতেই অফ সাইডের বলটি মারতে গিয়েছিলেন থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সোহাগ গাজী সেটা লুফে নেন অনায়াসে। গেইল আউট। বেশ কিছু ম্যাচে গেইল মাশরাফি বা সোহাগ থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছিলেন না। এ ম্যাচেও শেষ পর্যন্ত ওই দুইয়ের হাতেই তিন রান করে বিদায় নিতে হলো। এরপর ২০ রানে একটা ঝড় যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আল আমিন ব্রাভোকে আউট করার পর ওই একই রানে ক্রিক এ্যাডওয়ার্ডকেও বোল্ড করেন মাহমুদুল্লাহ। দুই রানের মাথায় সিমন্সকে আল আমিন আউট করলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ধস শুরু। ২২/৪। এরপর ৩৪ রানে আল আমিন আবারো সফল। এবার আউট করে দেন ডোয়াইন ব্রাভোকে। ম্যাচ যেন হাতের নাগালেই চলে আসে বাংলাদেশের। ক্যারিবীয়রা এ প্রচণ্ড প্রেসার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য রামাদিন ও পোলার্ড ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। এর আগে প্রথম ইনিংসে সফল ব্যাটসম্যান ছিলেন এনামুল বিজয়। খুলনায় এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৪১ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু। পরের ম্যাচেই সেঞ্চুরি (১২০) বিজয়ের। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আবারো সেঞ্চুরি করলেন বাংলাদেশের ওপেনার কাল গ্রানাডায়। ক্যারিয়ারের ২০তম ম্যাচে তৃতীয় সেঞ্চুরি, যার দু’টিই ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে। বাকি সেঞ্চুরি তার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। আসলে কাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে টসে হেরে প্রথম ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে যে ২১৭/৯ রান করেছে বাংলাদেশ, তা ওই এনামুলের অপরাজিত সেঞ্চুরির সুবাদেই। ম্যাচের সূচনা থেকেই অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন ধুঁকছিলেন, তখন এনামুলের ব্যাটই ছিল সরব। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সাথে যে ৪১ রানের পার্টনারশিপ তাতে সূচনাটা ভালো হলেও পরের ব্যাটসম্যানরা মোটেও সুবিধা করতে পারেননি। দীর্ঘক্ষণ ক্রিজে থেকে অধৈর্য তামিম শেষ পর্যন্ত উইকেট থ্রো করেই আসেন। ব্রাভো বুঝতে পেরেছিলেন, তামিমকে। তাই তার ভুলের জন্য অপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত সফল হন। কারণ প্রস্তুতি ম্যাচে ৯১ করা তামিমকে আউট করতে পারলেই বড় টেনশন যে কমে! কমলোই। ওয়ানডে ম্যাচে ২১৭ রান এ আর কী। যদিও গ্রানাডার সেন্ট জর্জে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে ওভারপ্রতি ৫ এর ওপর রান ওঠেনি। সে দিক থেকে আর গোটা ত্রিশেক রান হলে লড়াইটা জমতো! কিন্তু ওই রান কতটা আর নিরাপদ রাখতে পারবে মুশফিকদের। ইনিংসে এনামুল বিজয়ের ব্যাটিংই সব। তার পর তামিম ও নাসিরের ২৬ করে রানই সর্বোচ্চ। বিজয় ৭৮ বলে ৫০ করে সেঞ্চুরি করেছেন ১৩৩ বলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের সুইংয়ের বিরুদ্ধে কিছুটা অনভ্যস্ত বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও বিজয় শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। সেঞ্চুরি করতে একটি ছক্কা ও ৯টি চার হাঁকানোর পর ১০৯ রানে আরো দু’টি বাউন্ডারি যোগ করেন। ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে অধিনায়ক ডোয়াইন ব্রাভো নেন চার উইকেট। মুশফিক ১২, মাহমুদুল্লাহ করেন ১১ রান।
No comments:
Post a Comment