উগ্রবাদী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) প্রধান মুফতি শায়খ জসিমউদ্দিন রাহমানী গ্রেফতার হওয়ার পরও ঢাকায় সংগঠনটি ‘সেল’র মাধ্যমে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেল সদস্যরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তারা ভাগ ভাগ হয়ে কাজ করছেন। তাদের প্রধান নির্দেশক এবিটির প্রধান জসিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা রানা। এ রানা ‘থাবাবাবা’ ব্লগের ব্লগার রাজীব হাসান শোভনের খুনিদের একজন। রানা এখন পাকিস্ত
ানে। সেখান থেকে নির্দেশনা দিয়ে কাজ করাচ্ছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। এবিটি সেলের অবস্থান সুপ্ত রাখা হয় ধরা পড়ার ভয়ে। সূত্র জানায়, রানা কিছুদিন আগে সেলের বনানীকেন্দ্রিক একটি গ্র“পের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছে। গোয়েন্দারা ওই গ্র“পকে নজরদারিতে আনার চেষ্টা করে। ফোনে সেল সদস্যদের কিছু পরামর্শ দিয়েছে রানা। ওই সময় কারাবন্দি জসিমউদ্দিন রাহমানীর সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দেয় এ পলাতক খুনি। ডিবি সূত্র জানায়, ২০১৩-এর ১৫ ফেব্র“য়ারি ব্লগার রাজীব হত্যার পর আÍগোপন করে সাবেক শিবির নেতা রানা। রাজীব হত্যার দায়ে প্রথম দফায় গ্রেফতার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র ফয়সাল বিন নাইম, মাকসুদুল হাসান অনিক, এহসানুর রেজা রোমান, নাঈম সিকদার ও নাফিস ইমতিয়াজকে গ্রেফতারের পর রানার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এদের গ্রেফতারের পর জসিমউদ্দিন রাহমানী ও পরে ধানমণ্ডি এলাকা থেকে সাদমান ইয়াসিরকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ সাদমান সেলের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে। ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, তাবলিগ জামায়াতের মুসল্লির বেশে গত বছর মার্চ মাসে পাকিস্তানে পালিয়ে যায় রানা। ডিবি কর্মকর্তা বলেন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের টেনে এনেছে। তাদের জিহাদি চেতনায় উদ্বুব্ধ করতে গোপনে সভা ও সেমিনার করে থাকে এবিটি। ইদানীং তারা নিজেদের জোরালো কর্মকাণ্ডের জানান না দিলেও গোপনে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম যুগান্তরকে বলেন, রাজীবের খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের পরই আনসারুল্লাহর সন্ধান পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটভিত্তিক কাজ করা এ উগ্রপন্থী সংগঠনটি হত্যার উদ্দেশে দেশের বুদ্ধিজীবীদের তালিকাও করেছিল। কিন্তু ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে এ নাশকতা ও নৈরাজ্য মোকাবেলায় সচেষ্ট হয়েছে। ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, রানা বর্তমানে পাকিস্তানে পালিয়ে আছে। আর সেখান থেকে ওর নির্দেশনায় সুপ্ত সেলের কার্যক্রম চলছে। বলা যায়, পাকিস্তানেই এখন সুপ্ত সেলের সদর দফতর। এবিটি নিয়ে কাজ করা ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (বর্তমানে জাপানে উচ্চ শিক্ষার জন্য ছুটিতে আছেন) এসি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এবিটির সুপ্ত সেলে ৫ থেকে ৭ জন করে সদস্য আছে। এদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে তাদের সবাইকে জিহাদি চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা হয়। তারা ধর্মের নামে নাশকতামূলক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে। বেশিরভাগ সদস্যই নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
No comments:
Post a Comment