শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আলাদা কমিশন ছাড়া যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হবে না। গতকাল রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি প্রতিদিনের কাজ বিধায় এটি একটি জটিল ব্যাপার। আলাদা কমিশন গঠনের বিষয
়টি নিয়ে ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে যেকোনো ধরনের জটিলতা এড়াতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া হবে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে এবং নতুন পে কমিশন হলে বিভিন্ন বেতন স্কেলের মধ্যকার পার্থক্য নিরসন হবে। এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের পরিবারের সদস্যসংখ্যা চারের পরিবর্তে ছয় হিসাব করে শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি নির্ধারণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে আন্তস্কুল ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে ক্রীড়া ক্ষেত্রে ও পাঠ্যবহির্ভূত কার্যক্রমে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা গঠন এবং মেধা বিকাশে পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। মন্ত্রণালয়গুলোর কর্মকাণ্ডে আরও গতিশীলতা আনতে প্রতিটি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী আখতার হোসেন এবং মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা সম্ভব নয়। তা ছাড়া ব্যক্তিজীবনে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। অতএব কেউ ধর্মের নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার হ্রাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় শতভাগ ছেলে ও মেয়ে এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। এর পরও স্কুল পর্যায়ে ঝরে পড়া রোধে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি এগিয়ে নিতে সর্বস্তরের জনগণ, অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। দিবাযত্ন কেন্দ্রে প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা চালুর প্রস্তাব নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, সচিবালয়ে স্থাপিত দিবাযত্ন কেন্দ্রে (ডে-কেয়ার সেন্টার) প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা যায় কি না, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আজ সোমবার সভা ডাকা হয়েছে। উল্লেখ্য, এ কেন্দ্রে সচিবালয়ের কর্মজীবী মায়েদের শিশুদের রাখা হয়। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী দুর্গম ও হাওর এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার জন্য বিদ্যমান নীতিমালা শিথিল করার পরামর্শ দিয়ে প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান করার আহ্বান জানান। পাহাড়ি এলাকায় আবাসিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দেন তিনি।
No comments:
Post a Comment