সিলেটে তাবলিগ জামাতের আমির ইব্রাহিম আবু খলিল (৫৫) হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী ফাতেহা মাশরুকা (৪০) গতকাল মঙ্গলবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন ফাতেহা মাশরুকা। এরপর গতকাল দুপুরে তাঁকে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত
ে হাজির করা হয়। মহানগর হাকিম (আমলি আদালত-১) মো. শাহেদুল করিম তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বেলা একটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত জবানবন্দি দেন তিনি। সিলেটে নিজ বাড়িতে তাবলিগের নেতা খুনআদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে ফাতেহা বলেছেন, তাবলিগ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সংসারের দিকে কোনো মনোযোগ ছিল না আবু খলিলের। এরপরও তিনি আরও দুটো বিয়ে করায় স্বামীর প্রতি ফাতেহার ক্ষোভ বেড়ে যায়। সম্প্রতি দিল্লিতে এক চিল্লা (৪০ দিন) দিয়ে দেশে ফিরে তিনি চলে যান দিনাজপুরে এক স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। সেখান থেকে বরিশালে তাবলিগে থাকা দুই ছেলের সঙ্গে দেখা করে বাড়িতে ফিরে আসেন। সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে বাড়ির সম্পত্তি ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দেওয়ার বিষয়টি স্বামীকে জানান ফাতেহা। কিন্তু স্বামী রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষোভের বশে তাঁকে হত্যা করেন। ফাতেহার জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, শয়নকক্ষে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রথমে খলিলের মাথায় লোহার পাত দিয়ে আঘাত করেন তাঁর স্ত্রী। পরে খলিল জেগে উঠে ছটফট শুরু করলে ফাতেহা দড়ি দিয়ে দুই হাত বেঁধে ছুরি দিয়ে পেটে উপর্যুপরি আঘাত করেন। রক্তক্ষরণে খলিল কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়লে স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ছুরি চালান। পরে মরদেহ উপুড় করে মাথায় বালিশ দিয়ে রাখেন। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. রহমত উল্লাহ প্রথম আলোকে জানান, জবানবন্দি দেওয়ার পর ফাতেহাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। সিলেট নগরের সওদাগরটুলায় নিজ বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে গত সোমবার সকালে খলিলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ওই বাড়ি থেকে খলিলের স্ত্রী ফাতেহাকে আটক করা হয়। ফাতেহা খলিলের প্রথম স্ত্রী। খলিল আরও দুটো বিয়ে করেছেন। ঘটনার পরপরই বাড়ি থেকে ফাতেহা, তাঁর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে ও বাসার এক গৃহকর্মীকে আটক করা হয়।
No comments:
Post a Comment