Saturday, July 26, 2014

কর্মসূচি নিয়ে অন্ধকারে শরিকেরা:প্রথম অালো

খালেদা জিয়ার ঘোষিত ঈদের পরে সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে এখনো অন্ধকারে আছে তাঁর নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক দলগুলো। জোটের শরিক ছয়টি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা এখনো জানেন না, ঈদের পর কী হতে যাচ্ছে, আন্দোলনের ধরন কী হবে বা কী ধরনের কর্মসূচি থাকবে। বিএনপির পক্ষ থেকে শরিক দলগুলোকে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই অবহিত করা হয়নি। রমজানের শুরুতে একাধিক ইফতার
অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০-দলীয় জোটের নেত্রী খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন, ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঈদের পরের আন্দোলনে সরকার ভেসে যাবে। জোটের শরিক দুটি দলের দুজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এ নিয়ে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি আন্দোলন কর্মসূচি সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারেননি। তবে খালেদা জিয়া ওমরাহ্ শেষে সৌদি আরব থেকে ফিরলে জোটের বৈঠক করবেন বলে ফখরুল আশ্বস্ত করেছেন। ২০-দলীয় জোটের শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ঈদের পর তাঁদের আন্দোলন কেমন হবে। জবাবে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আন্দোলন নিয়ে তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি। তাই তাঁর কাছে পরিষ্কার কোনো ধারণা নেই। তিনি বলেন, ‘আমার যেটা ধারণা, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জোটের কোনো দৃশ্যমান কর্মসূচি নেই। ঈদের পর হয়তো কিছু কর্মসূচি আসবে। এর মাধ্যমে আন্দোলন শুরু হবে বলে মনে হয়।’ বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ২২ জুলাই বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের একজন সদস্য। জামায়াতের ওই নেতা আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চান। জবাবে বিএনপির ওই নেতা বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ঈদের পর জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করে আন্দোলনের রূপরেখা অবহিত করবেন। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিএনপির ওই নেতা প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনের ঘোষণা হলেও পরিকল্পনা সম্পর্কে বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতাই কিছু জানেন না। তাঁর ধারণা, সৌদি আরবে খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচনা করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন। তার আলোকে ঈদের পর আন্দোলনের করণীয় ঠিক করা হবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশে ফিরে এসে দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক না করা পর্যন্ত আন্দোলন নিয়ে কোনো কিছুই পরিষ্কার হবে না। অবশ্য বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেন, অতীতেও আন্দোলনে নামার আগে জোটের সব শরিকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নজির বিএনপিতে নেই। মূলত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে জোটের বৈঠকে তা জানিয়ে দেওয়া হতো। তবে বিএনপির চেয়ারপারসন আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বরাবরই জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন। জোটের একটি সূত্র জানায়, গত জুনে জোটের সর্বশেষ বৈঠকে ঈদুল ফিতরের পর আন্দোলন শুরুর বিষয়টি খালেদা জিয়া জোটের নেতাদের জানিয়েছিলেন। ওই বৈঠকে শরিক দলের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা আন্দোলনের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব প্রথম আলোকে বলেন, ৫ জানুয়ারি যে একতরফা নির্বাচন হয়েছে, তার কোনো গণভিত্তি নেই। বিএনপি তাই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সব সময় যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। জোটের ও দলের বৈঠকে আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত হবে।

No comments:

Post a Comment