Wednesday, July 23, 2014

সাক্ষী হিসেবে দুই র‌্যাব সদস্যের জবানবন্দি:প্রথম অালো

নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় র‌্যাব-১১-এর দুই সদস্য সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মনোয়ারা বেগম তাঁদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ নিয়ে এ মামলায় চারজন সাক্ষী প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দিলেন। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জবানবন্দি দেওয়া এই দুই কর্মকর্তা হলেন নৌবাহিনীর সদস্য আবদুস সালাম ও পুলিশের পরিদর্শক আবদুস সামাদ।
এঁরা দুজনই সাতজনকে অপহরণের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সামাদ ছিলেন টহল পরিদর্শক। ঘটনার দিন নজরুল ইসলাম ও চন্দন সরকারের গাড়িকে তাঁর দলই গতিরোধ করেছিল। আর আবদুস সালাম ছিলেন নৌকার দায়িত্বে। নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতজনকে অপহরণের পর চোখ বেঁধে নদীতে নেওয়ার কাজ করেছিলেন সালাম। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এই দুই র‌্যাব সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়। ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আদালত তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুই র‌্যাব কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, কমান্ডারের নির্দেশেই তাঁরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন। কীভাবে এসব ঘটেছে তার বিবরণও দেন তাঁরা। এর আগে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লে. কমান্ডার এম এম রানা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশ এ মামলায় ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এর আগে ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম ও তাঁর কলেজপড়ুয়া মেয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাঁরা আদালতে বলেন, তাঁদের চোখের সামনেই র‌্যাব কয়েকজনকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তবে যাঁদের তুলে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের কাউকেই তাঁরা চেনেন না। তুলে নেওয়ার সময় একজনের ঘাড়ে পিস্তল নিয়ে আঘাত করতে দেখেন। যাঁকে আঘাত করা হচ্ছিল তাঁর মুখে দাঁড়ি ছিল। আর যিনি আঘাত করছিলেন তিনি সাদা গেঞ্জি ও সাদা রঙের প্যান্ট পরা ছিলেন। ঘটনার সময় একটি মাইক্রোবাস, দুটি র‌্যাবের পিকআপ ও দুটি কার ওই স্থানে ছিল বলে তাঁরা উল্লেখ করেন। গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ফতুল্লা মডেল থানায় কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল হত্যার ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। পত্রিকার এসংক্রান্ত খবর বিবেচনায় নিয়ে ৫ মে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন। আদালত এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া আদালত এ ঘটনা নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাবের মহাপরিচালক ও সিআইডির প্রধানকে পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন।

No comments:

Post a Comment