র হাতে নেওয়া হয়। এতে পুলিশের মাধ্যমে এ ধরনের মামলার তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। আবার আইন অনুযায়ী, দুদকের অনুমোদন ছাড়া এসব মামলা মহানগর দায়রা আদালতও নিতে পারেন না। অচলাবস্থা দূর করতে আইন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়, দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬২-এ, ৪৬২-বি, ৪৬৬-৪৬৯, ৪৭১ ধারার অপরাধ আগে পুলিশ তদন্ত করত ও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিচার করতেন। এখন এ অপরাধগুলো দুদকের আওতায় যাওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেট তা আমলে নিতে পারছেন না। এতে বিচারাধীন মামলার বিচারেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কারণ, ওই ধারার অপরাধ বিচারের জন্য পর্যাপ্ত বিশেষ জজ আদালত নেই। এতে অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা বেড়ে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। এমন লক্ষাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, দণ্ডবিধির এসব মামলার বেশির ভাগ যেকোনো পক্ষের ভুল-বোঝাবুঝির কারণে দায়ের হয় এবং পরে দুই পক্ষের মধ্যে আপসের চেষ্টা করা হয়। দুই পক্ষের সম্মতিতে অনেক সময় অভিযুক্তদের জামিনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুদক আইনের আওতায় বলে ম্যাজিস্ট্রেট জামিন দিতে পারে না। আইন মন্ত্রণালয় চিঠিতে জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতারণা-মূলক বিশ্বাসভঙ্গ বা জাল দলিল করা বিষয়ে দণ্ডবিধি ৪০৮, ৪০৯ এবং ১৬৭ ধারা দুদক ২০০০ সালে আইনের তফসিলভুক্ত আছে। তাই ৪২০, ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৬৯ ও ৪৭১ ধারার আর দরকার নেই। একই বিষয়ে দুদকও একটি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামত তৈরির অংশ হিসেবে পুলিশ বিভাগের কাছে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা ও করণীয় জানতে চায়। সেই প্রক্রিয়ায় পুলিশ আবার এ ধরনের মামলা গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষমতা চাচ্ছে। এতে দুদক আইন আবার সংশোধনী আনতে হবে। ফিরে যেতে হবে আগের অবস্থানে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধনী) আইন ২০১৩ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ পর্যালোচনা করে মতামতসহ একটি সংশোধনী প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তৈরি করেছে। আগামী রোববার তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হতে পারে। জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মনে করি, অবশ্যই এসব মামলার তদন্তের ক্ষমতা পুলিশ কর্মকর্তাদের থাকা উচিত। দুদক কোনো দিনও এসব মামলার দায়িত্বে ছিল না এবং এ ধারাগুলো দুদকের তফসিলেও ছিল না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিচারব্যবস্থার গতিশীলতা আনতে এসব ধারার অপরাধ দুদকের তফসিল থেকে বাদ দিযে আইন সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফৌজদারি মামলার সঙ্গে দণ্ডবিধি ৪২০ ধারা সম্পৃক্ত থাকে। বর্তমানে এ মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতারক ও জালিয়াত চক্র এ সংশোধনের কারণে লাভবান হয়েছে বলে মনে করে পুলিশ। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এখন দুদক আইন সংশোধন করলে তা যেন ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর (আগের সংশোধনীর তারিখ থেকে) থেকে কার্যকর করা হয়। তা না করা হলে ওই সময়ের পর থেকে থানায় করা হাজার হাজার মামলার কার্যক্রম অবৈধ হয়ে যাবে এবং বাদী সুবিচার থেকে বঞ্চিত হবেন। মানি লন্ডারিং আইনের অধীনে বর্ণিত অপরাধের বিষয়ে পুলিশের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দুদকের পাশাপাশি পুলিশকেও তদন্তের ক্ষমতা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) নিচে নয় এমন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করতে পারবেন। দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, আগে দুর্নীতি দমন ব্যুরো সরকারি সম্পত্তি নিয়ে প্রতারণা বা জলিয়াতের বিষয়ে তদন্ত করত। পরে দুদকের আইনে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না করায় দুদক আইন ২০১৩ সংশোধনীতে শুধু ৪২০ ধারা তফসিলভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সে সময় ঢালাওভাবে ৪২০, ৪৬৬, ৪৬৭,৪৬৮, ৪৬৯ ও ৪৭১ সব ধারা দুদক আইনের তফসিলভুক্ত করা হয়। আমরা এখন প্রস্তাব করেছি, সরকারি সম্পত্তি নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করবে দুদক। আর বেসরকারি জালিয়াতি বা প্রতারণার তদন্ত করবে পুলিশ।’
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Friday, August 22, 2014
তদন্তের ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে পুলিশ:প্রথম অালো
র হাতে নেওয়া হয়। এতে পুলিশের মাধ্যমে এ ধরনের মামলার তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। আবার আইন অনুযায়ী, দুদকের অনুমোদন ছাড়া এসব মামলা মহানগর দায়রা আদালতও নিতে পারেন না। অচলাবস্থা দূর করতে আইন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়, দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬২-এ, ৪৬২-বি, ৪৬৬-৪৬৯, ৪৭১ ধারার অপরাধ আগে পুলিশ তদন্ত করত ও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিচার করতেন। এখন এ অপরাধগুলো দুদকের আওতায় যাওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেট তা আমলে নিতে পারছেন না। এতে বিচারাধীন মামলার বিচারেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কারণ, ওই ধারার অপরাধ বিচারের জন্য পর্যাপ্ত বিশেষ জজ আদালত নেই। এতে অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা বেড়ে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। এমন লক্ষাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, দণ্ডবিধির এসব মামলার বেশির ভাগ যেকোনো পক্ষের ভুল-বোঝাবুঝির কারণে দায়ের হয় এবং পরে দুই পক্ষের মধ্যে আপসের চেষ্টা করা হয়। দুই পক্ষের সম্মতিতে অনেক সময় অভিযুক্তদের জামিনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুদক আইনের আওতায় বলে ম্যাজিস্ট্রেট জামিন দিতে পারে না। আইন মন্ত্রণালয় চিঠিতে জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতারণা-মূলক বিশ্বাসভঙ্গ বা জাল দলিল করা বিষয়ে দণ্ডবিধি ৪০৮, ৪০৯ এবং ১৬৭ ধারা দুদক ২০০০ সালে আইনের তফসিলভুক্ত আছে। তাই ৪২০, ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৬৯ ও ৪৭১ ধারার আর দরকার নেই। একই বিষয়ে দুদকও একটি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামত তৈরির অংশ হিসেবে পুলিশ বিভাগের কাছে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা ও করণীয় জানতে চায়। সেই প্রক্রিয়ায় পুলিশ আবার এ ধরনের মামলা গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষমতা চাচ্ছে। এতে দুদক আইন আবার সংশোধনী আনতে হবে। ফিরে যেতে হবে আগের অবস্থানে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধনী) আইন ২০১৩ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ পর্যালোচনা করে মতামতসহ একটি সংশোধনী প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তৈরি করেছে। আগামী রোববার তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হতে পারে। জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মনে করি, অবশ্যই এসব মামলার তদন্তের ক্ষমতা পুলিশ কর্মকর্তাদের থাকা উচিত। দুদক কোনো দিনও এসব মামলার দায়িত্বে ছিল না এবং এ ধারাগুলো দুদকের তফসিলেও ছিল না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিচারব্যবস্থার গতিশীলতা আনতে এসব ধারার অপরাধ দুদকের তফসিল থেকে বাদ দিযে আইন সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফৌজদারি মামলার সঙ্গে দণ্ডবিধি ৪২০ ধারা সম্পৃক্ত থাকে। বর্তমানে এ মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতারক ও জালিয়াত চক্র এ সংশোধনের কারণে লাভবান হয়েছে বলে মনে করে পুলিশ। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এখন দুদক আইন সংশোধন করলে তা যেন ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর (আগের সংশোধনীর তারিখ থেকে) থেকে কার্যকর করা হয়। তা না করা হলে ওই সময়ের পর থেকে থানায় করা হাজার হাজার মামলার কার্যক্রম অবৈধ হয়ে যাবে এবং বাদী সুবিচার থেকে বঞ্চিত হবেন। মানি লন্ডারিং আইনের অধীনে বর্ণিত অপরাধের বিষয়ে পুলিশের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দুদকের পাশাপাশি পুলিশকেও তদন্তের ক্ষমতা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) নিচে নয় এমন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করতে পারবেন। দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, আগে দুর্নীতি দমন ব্যুরো সরকারি সম্পত্তি নিয়ে প্রতারণা বা জলিয়াতের বিষয়ে তদন্ত করত। পরে দুদকের আইনে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না করায় দুদক আইন ২০১৩ সংশোধনীতে শুধু ৪২০ ধারা তফসিলভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সে সময় ঢালাওভাবে ৪২০, ৪৬৬, ৪৬৭,৪৬৮, ৪৬৯ ও ৪৭১ সব ধারা দুদক আইনের তফসিলভুক্ত করা হয়। আমরা এখন প্রস্তাব করেছি, সরকারি সম্পত্তি নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করবে দুদক। আর বেসরকারি জালিয়াতি বা প্রতারণার তদন্ত করবে পুলিশ।’
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment