দপ্তর। কমিটির প্রতিবেদন পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানের ব্যাপারে র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের কাছে তথ্য ছিল, ওই দিন যশোর থেকে ঈগল পরিবহনে ডলারের চালান ঢাকায় আসবে। আর এই চক্রের প্রতিপক্ষ আরেকটি দল সেই ডলার ছিনতাই করবে। এ খবর পেয়ে তাঁরা সাভার বাজারের কাছে ওত পেতে থাকেন। ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে যশোর থেকে আসা চোরাচালানিদের কাছ থেকে ডলার ছিনতাইয়ের সময় র্যাব সদস্যরা তাদের আটক করেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা র্যাবের ওপর পাল্টা হামলা করে। এতে নাহিদ আল আমিন নামে র্যাবের এক ক্যাপ্টেন আহত হন। র্যাব ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ফজিকুল ইসলাম নামে সাভার থানার পুলিশের এক এএসআই ছিলেন। তবে যে ডলারকে কেন্দ্র করে এই অভিযান হয়েছিল, তা আর উদ্ধার দেখানো হয়নি। র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, চোরাচালানিদের আরেকটি দল ওই ডলার নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনার পর গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে অভিযোগ করা হয়, অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাব সদস্যরা ওই ডলার আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি যে হামলার অভিযোগ করা হয়, তা-ও সত্যি নয়। এরপর এ ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তর পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবুল কাশেমকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম, র্যাবের উপপরিচালক মেজর আনোয়ারুল কবির এবং সিআইডির জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রাহাত গওহরি। প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান আবুল কাশেম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযানের সময় এক চোরাচালানির কাছ থেকে র্যাবের একজন সদস্য ডলার নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। কিন্তু র্যাবের কোন সদস্য সেটা আত্মসাৎ করেছেন, তা কমিটি নির্ধারণ করতে পারেনি। এতে আরও বলা হয়, কমিটির অনুসন্ধানের সময় এ ঘটনায় কারা জড়িত ছিলেন, তা জানতে র্যাবের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা মূল অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের নাম উল্লেখ না করে পেছনের দলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নাম দিয়েছে। এ কারণে কমিটি তাঁদের কাছ থেকে কোনো তথ্য বের করতে পারেনি। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযানের সময় র্যাব কর্মকর্তা চোরাচালানিদের হামলায় আহত হয়েছিলেন বলে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। গণমাধ্যমেও সে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু কমিটি তদন্তে গিয়ে জানতে পারে, র্যাব কর্মকর্তা নাহিদ আল আমিন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। তাঁকে কেউ আঘাত করেননি, বরং অভিযানের সময় তিনি কাউকে না জানিয়ে অন্যদিকে চলে যান, যা অপেশাদারি কাজ হিসেবে বিবেচিত। অভিযানের পর র্যাবের করা মামলার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাব ভুল তথ্য দিয়ে মামলা করে এবং পরে তা সংশোধন করে। মামলায় যে জব্দতালিকা আছে, সেখানেও ডলার আটকের কথা উল্লেখ করা হয়নি। নিয়ম অনুসারে এর দায় অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাবের দুই কর্মকর্তা মেজর সোহেল ও ক্যাপ্টেন নাহিদ আল আমিনের ওপর বর্তায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সূত্র জানায়, কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, চোরাচালানির ডলার ধরার জন্য সেই অভিযান চালানো হলেও ঘটনার পর র্যাব কোনো ডলার উদ্ধার দেখায়নি। এমনকি এ ঘটনা নিয়ে থানায় যে মামলা হয়েছে, সেখানেও ডলারের কথা উল্লেখ করেনি র্যাব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির প্রতিবেদনে র্যাবের একজন সদস্যও ছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদনে মন্তব্য হিসেবে যা কিছুই বলা হোক না কেন, কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়নি। এতে প্রমাণিত হয়, র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল, তা সঠিক নয়।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, August 12, 2014
চোরাচালানির ১৮ হাজার ডলার মেরে দিয়েছেন র্যাব সদস্য:প্রথম অালো
দপ্তর। কমিটির প্রতিবেদন পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানের ব্যাপারে র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের কাছে তথ্য ছিল, ওই দিন যশোর থেকে ঈগল পরিবহনে ডলারের চালান ঢাকায় আসবে। আর এই চক্রের প্রতিপক্ষ আরেকটি দল সেই ডলার ছিনতাই করবে। এ খবর পেয়ে তাঁরা সাভার বাজারের কাছে ওত পেতে থাকেন। ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে যশোর থেকে আসা চোরাচালানিদের কাছ থেকে ডলার ছিনতাইয়ের সময় র্যাব সদস্যরা তাদের আটক করেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা র্যাবের ওপর পাল্টা হামলা করে। এতে নাহিদ আল আমিন নামে র্যাবের এক ক্যাপ্টেন আহত হন। র্যাব ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ফজিকুল ইসলাম নামে সাভার থানার পুলিশের এক এএসআই ছিলেন। তবে যে ডলারকে কেন্দ্র করে এই অভিযান হয়েছিল, তা আর উদ্ধার দেখানো হয়নি। র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, চোরাচালানিদের আরেকটি দল ওই ডলার নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনার পর গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে অভিযোগ করা হয়, অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাব সদস্যরা ওই ডলার আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি যে হামলার অভিযোগ করা হয়, তা-ও সত্যি নয়। এরপর এ ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তর পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবুল কাশেমকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম, র্যাবের উপপরিচালক মেজর আনোয়ারুল কবির এবং সিআইডির জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রাহাত গওহরি। প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান আবুল কাশেম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযানের সময় এক চোরাচালানির কাছ থেকে র্যাবের একজন সদস্য ডলার নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। কিন্তু র্যাবের কোন সদস্য সেটা আত্মসাৎ করেছেন, তা কমিটি নির্ধারণ করতে পারেনি। এতে আরও বলা হয়, কমিটির অনুসন্ধানের সময় এ ঘটনায় কারা জড়িত ছিলেন, তা জানতে র্যাবের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা মূল অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের নাম উল্লেখ না করে পেছনের দলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নাম দিয়েছে। এ কারণে কমিটি তাঁদের কাছ থেকে কোনো তথ্য বের করতে পারেনি। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযানের সময় র্যাব কর্মকর্তা চোরাচালানিদের হামলায় আহত হয়েছিলেন বলে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। গণমাধ্যমেও সে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু কমিটি তদন্তে গিয়ে জানতে পারে, র্যাব কর্মকর্তা নাহিদ আল আমিন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। তাঁকে কেউ আঘাত করেননি, বরং অভিযানের সময় তিনি কাউকে না জানিয়ে অন্যদিকে চলে যান, যা অপেশাদারি কাজ হিসেবে বিবেচিত। অভিযানের পর র্যাবের করা মামলার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাব ভুল তথ্য দিয়ে মামলা করে এবং পরে তা সংশোধন করে। মামলায় যে জব্দতালিকা আছে, সেখানেও ডলার আটকের কথা উল্লেখ করা হয়নি। নিয়ম অনুসারে এর দায় অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাবের দুই কর্মকর্তা মেজর সোহেল ও ক্যাপ্টেন নাহিদ আল আমিনের ওপর বর্তায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সূত্র জানায়, কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, চোরাচালানির ডলার ধরার জন্য সেই অভিযান চালানো হলেও ঘটনার পর র্যাব কোনো ডলার উদ্ধার দেখায়নি। এমনকি এ ঘটনা নিয়ে থানায় যে মামলা হয়েছে, সেখানেও ডলারের কথা উল্লেখ করেনি র্যাব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির প্রতিবেদনে র্যাবের একজন সদস্যও ছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদনে মন্তব্য হিসেবে যা কিছুই বলা হোক না কেন, কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়নি। এতে প্রমাণিত হয়, র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল, তা সঠিক নয়।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment