ঈদের আগেই জামিন পেয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেল থেকে বের হয়ে গেলেন তোবা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেলোয়ার হোসেন। আদালতে তাঁর পক্ষে আন্দোলনরত শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের অঙ্গীকার করা হয়েছে। তাঁর আইনজীবী আদালতে বলেছেন, মজুরি পরিশোধ না করায় শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। দেলোয়ারের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশে আইনজীবীর এই বক্তব্য রয়েছে। গত ২৪ জুলাই বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক
ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ দেলোয়ারের দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। গতকাল মঙ্গলবার ওই আদেশের কপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। আর রাত আটটার দিকে তিনি মুক্তি পান। বেতন-বোনাসের দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলন করলেও অভিযোগ উঠেছে, দেলোয়ারকে মুক্ত করতেই আন্দোলনে উসকানি দিয়েছে মালিকপক্ষ। শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেলেন তাজরীন মালিক। অন্যদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদেশের অনুলিপি হাতে পাইনি। পেলে পর্যালোচনা করে আপিল বিভাগে আবেদন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর দিবাগত রাতে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তোবা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১১১ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান, দুই শতাধিক আহত ও অসুস্থ হয়েছেন। ওই ঘটনায় করা মামলায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে দেলোয়ার আত্মমর্পণ করে জামিন চান। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান। আইনজীবী সূত্র জানায়, পরে ৮ জুন নিম্ন আদালতে দেলোয়ারের জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। ঘটনার পর গত বছরের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্রে ১০৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। গত বছরের ২৯ এপ্রিল তাজরীন ফ্যাশনসের মালিককে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা চেয়ে নৃবিজ্ঞানী নাজনিন আক্তার বানু, সাইদিয়া গুলরুখ কামাল ও মাহমুদুল হাসান রিট আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ মে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ দেলোয়ার হোসেন যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সে জন্য বিমান ও স্থলবন্দরসহ দেশের সংশ্লিষ্ট বহির্গমন কেন্দ্রগুলোতে নির্দেশনা জারি করতে স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেন। রুল জারির সঙ্গে তাজরীন ফ্যাশনসের মালিককে ৩০ মে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ধার্য তারিখে তিনি আদালতে হাজির হন। রুলে মালিকের ‘ইচ্ছাকৃত অবহেলায়’ তাজরীনের ১১১ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তারে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং তাজরীনের মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment