জুলাই মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। ঈদকেন্দ্রিক ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৮ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার। ব্যাংকাররা জানান, ঈদের মাস হওয়ায় দেশে আত্মীয়-পরিজনের কাছে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক জি এম আবুল কালাম আজাদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে মাসিক সর্বোচ্চ রেমিট্যান
্স এসেছে জুলাই মাসে। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০১২ সালের অক্টোবরে ১৪৫ কোটি মার্কিন ডলার। আর এবার এসেছে ১৪৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত বছরের প্রায় প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স কম এসেছিল। এ কারণে প্রায় ২১ বছর পর দেশে বার্ষিক রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রথমবারের মতো ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার, গত অর্থবছরে এসেছে এক হাজার ৪২২ কোটি ডলার। এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা জানান, গত কয়েক বছরে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুধু শ্রমিক ফিরেই এসেছেন, নতুন করে যাননি। সামগ্রিকভাবে যে হারে শ্রমিক ফিরে এসেছে ওই হারে না যাওয়ার কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ব্যাংকাররা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক ফিরে আসা অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে তেমন শ্রমবাজারও সৃষ্টি হয়নি। এক মাসে রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন, ঈদকেন্দ্রিক রেমিট্যান্স বরাবরই বেশি আসে। আত্মীয়-পরিজনের কাছে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। তবে চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাবে বলে তারা মনে করেন। ব্যাংকাররা আরো জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি করতে হবে। দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। গত জুলাইয়ে ১৪৮ কোটি ডলারের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ৩৮ কোটি ডলার, ২৫ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬ কোটি ডলার। আর ১৪ কোটি ডলার করে এসেছে সোনালী ও জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে। উত্তরা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় সাত কোটি ডলার।
No comments:
Post a Comment