Tuesday, August 12, 2014

জীবননগরে আওয়ামী লীগের ২ গ্রুপের আবার রক্ষক্তয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা:নয়াদিগন্ত

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। অপর দিকে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষ থেকে দায়ের করা তিনটি মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়েছে। এ দিকে টানা ৪০ ঘণ্টা পর উপজেলা প
্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। জীবননগর শহরে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক কাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক অংশের উদ্যোগে গত শুক্রবার বিকেলে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুনকে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বিধাবিভক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হুইপ ছেলুনসহ অন্যান্য বক্তা চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের দলীয় সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দেন এবং তাকে দলের কুলাঙ্গার হিসেবে অবহিত করেন। এ ঘটনায় এমপি আলী আজগার টগর অনুসারী দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি  হয়। তারা গত শনিবার সকালে জীবননগর শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এমপি টগর গ্রুপের যুবলীগ নেতা খায়রুল বাশার শিপলু জানান, শনিবার সকালে আমরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ মিলে শহরে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল করি। ওই মিছিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তূজা গ্রুপের ডাবলু ও বিল্লালের নেতৃত্বে আমাদের মিছিলের ওপর আকস্মিক হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়। পরে ওই দিন সন্ধ্যার পর একই গ্রুপের পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুন্সী নাসির উদ্দিন ও যুবলীগ নেতা শামীম ফেরদৌসের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। তাদের দুই দফার হামলায় থানার এএসআই সিরাজুল আলমসহ কমপক্ষে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়। কিন্তু তারাই আবার আমাদের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোয়েব আহমেদ অঞ্জন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। এ দলের জাতীয় সংসদের একজন হুইপ কোনো অনুষ্ঠানে দলীয় এমপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বক্তব্য দিবেন এমনটি আমরা আশা করিনি। দলীয় সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগরকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলের কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করায় প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা শনিবার সকালে শহরে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করি। মিছিলটি শেষের দিকে কথিত যুবলীগ নেতা ডাবলু ও বিল্লালের নেতৃত্বে একদল যুবক আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আহত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে চলতে থাকে হামলা-পাল্টাহামলার ঘটনা। ছোড়া হয় ককটেল বোমা আর পুলিশ নিক্ষেপ করে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস। এ সময় পুলিশের এএসআই সিরাজুল আলমসহ প্রায় ১৫ জন মারাত্মক আহত হন। এসব ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধাদান ও পুলিশকে আহত করার অপরাধে এসআই রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে একটি এবং আওয়ামী লীগের দুইপক্ষ থেকে আরো তিনটি পৃথক মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ ৪৬৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment