Friday, August 8, 2014

অনশনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের হামলা, সংঘর্ষ:নয়াদিগন্ত

বেতন-বোনাসের দাবিতে অনশনরত তোবা শ্রমিকদের ওপর স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের সাথে নিয়ে পুলিশের দফায় দফায় হামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে ১০ সংবাদকর্মীসহ শতাধিক শ্রমিক আহত হন। এ সময় পুলিশ তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহসাধারণ সম্পাদক জলিকে গ্রেফতার করলে বিুব্ধ হয়ে ওঠে শ্রমিকরা। তার
া প্রগতি সরণি সড়ক অবরোধ করে ডিবি পুলিশের একটি গাড়িসহ অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর করে। গার্মেন্ট শ্রমিকদের অবরোধে রামপুরা ও নতুনবাজার সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জের শিকার হন নয়া দিগন্তের নূর হোসেন পিপুল, নিউএজের আবদুল্লাহ অপু, সমকালের রুবেলসহ ১০ জন ফটোসাংবাদিক। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে সাংবাদিকদের সাথেও পুলিশের হাতাহাতি হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে আহতরা হলেন, শ্রমিক নাজমা বেগম (৩০), হ্যাপী (২০), আসমা বেগম (২৭), মাহমুদা (৩০)। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া শতাধিক আহত শ্রমিককে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বকেয়া বেতনভাতাসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাড্ডার ওই কারখানা ভবনেই গত ১২ দিন ধরে অনশন চালিয়ে আসছিলেন তোবা গ্রুপের শ্রমিকরা। বিজিএমইএ আংশিক বকেয়া দেয়া শুরু করলেও তা প্রত্যাখ্যান করে সংগ্রাম কমিটি। যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত : বিগত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালেও মার্কেটের সামনে জলকামান ও এপিসি নিয়ে কড়া পাহারায় ছিল পুলিশ। কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে এবং বের হতে দেয়া হচ্ছিল না। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য উপস্থিত ছিলেন অর্ধশত সাংবাদিক। বেলা ১টার দিকে একই এলাকার বিগবস গার্মেন্ট শ্রমিকরা নিচে নেমে বিােভ শুরু করেন। এ সময় পুলিশের সহযোগিতায় মালিকপক্ষের লোকজন শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এ খবর শুনে সংবাদকর্মীরা বিগবস কারখানায় চলে আসেন। এ সময় পুলিশ তোবা গার্মেন্টের মূল ফটকের তালা খুলে শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।  শ্রমিকদের ওপর পুলিশের হামলা : স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের সাথে নিয়ে শতাধিক পুলিশের একটি দল তোবা কারখানার সাততলায় ঢুকে পড়ে। তারা সেখানে অবস্থানরত অন্তত ৬০০ শ্রমিককে লাঠি, রাইফেলের বাঁট দিয়ে পেটাতে শুরু করে। কারখানার ভেতরেও রাবার বুলেট ছোড়া হয়। ভয়ে ও আতঙ্কে শ্রমিকরা সাততলা থেকে নেমে আসেন। শ্রমিকরা নেমে আসার পর পরই পুলিশ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শ্রমিক নেত্রী মোশরেফা মিশু ও জলি তালুকদারকে টেনে-হেঁচড়ে নামিয়ে আনে। পরে নারী পুলিশ জলি তালুকদারকে ব্যাপক মারধর করে পুরো রাস্তায় টেনে-হেঁচড়ে গাড়িতে উঠায়। আটকের আগে জলি তালুকদার এ ঘটনায় সারা দেশের গার্মেন্ট কারখানায় ধর্মঘটের ডাক দেন। পাশাপাশি বাম প্রগতিশীল সংগঠনগুলোকে শহীদ মিনারে গিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানান। সেখান থেকে বের হওয়া অপারেটর হোসনে আরা বলেন, ‘পুলিশ ক্যান থেকে গ্যাস মারছে। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আমাদের নামিয়েছে।’ এ সময় বাইরে বেশ কিছু ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।  বাইরে এসে মোশরেফা মিশু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে মেরেছে, সবাইকে মেরে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে জোর করে বের করে দিয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম, পুলিশ গায়ের জোরে বের করে দিয়েছে।’  মিশু ও জলিকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে গুলশান পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহাবুব হাসান বলেন, ‘তাদের আটক করা হয়েছে’। তাদের আটক করার কারণ জানতে চাইলে ‘এ বিষয়ে আপনাদের সাথে পরে কথা বলব’ বলে জানান। সড়ক অবরোধ, শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর : স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের সহযোগিতায় পুলিশ কারখানার সামনে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে শতাধিক শ্রমিক আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার শেল, ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান ব্যবহার করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে বাড্ডার প্রগতি সরণি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় তোবা গার্মেন্ট কারখানার সামনেই অবস্থিত শমসের গ্রুপের গার্মেন্ট কারখানার শত শত শ্রমিক তোবার শ্রমিকদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। শমসের গ্রুপের শ্রমিকদের সাথে আরো প্রায় পাঁচটি কারখানার শ্রমিক যোগ দিয়ে তারা রাস্তা অবরোধ করে ভাঙচুর শুরু করে। তারা হোসেন মার্কেট থেকে মধ্যবাড্ডা, লিংক রোড পর্যন্ত ভাঙচুর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, হিউম্যান হলার (লেগুনা), তেলবাহী লরিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আসা ডিবি পুলিশের একটি গাড়িতেও (ঢাকা মেট্রো-চ ৫১-৫১৫৩) তারা ভাঙচুর চালায়। পরে বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ শ্রমিকদের সরিয়ে রাস্তার নিয়ন্ত্রণ নিলে আবার যান চলাচল শুরু হয়। বহিরাগতরা জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ বিজিএমইএর : তোবা গ্রুপের কারখানা থেকে বহিরাগতরা বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম। একই সাথে কারখানার ভেতরে অনেক শ্রমিককে মোশরেফা মিশুর লোকজন নির্যাতন করেছে এবং টাকা নিতে আসতে বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গতকাল সকালে বিজিএমইএ কার্যালয়ে তোবা গ্রুপের শ্রমিকদের বেতন নেয়ার খোঁজ নিতে এসে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, তোবার এমডি দেলোয়ার ও শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন ভেতরে অবস্থানরত বহিরাগতরা কারখানার বিভিন্ন জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে। অনেক মালামাল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকরা ভেতরে মোশরেফা মিশুর লোকজনের নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছেন। তারা বলছেন, সেখানে তাদের বেঁধে রাখা হয়েছে। অনেক শ্রমিক পালিয়ে এসেছে। অনেকেই আসতে চাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, গতকাল সকাল থেকে যেসব শ্রমিক আসছেন তারা আমাদের বলেছেন, রাতে বাসায় গিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। বেতন নিলে তাদের মারধর ও মামলা দেয়ারও হুমকি দেয়া হচ্ছে। গতকাল সকাল পৌনে ১০টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো বিজিএমইএ কার্যালয় থেকে বকেয়া বেতন নিচ্ছেন তোবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা। বিজিএমইএ কার্যালয়ে অস্থায়ী পাঁচটি বুথে ১৬টি টিম বেতন দেয়ার কাজ করছে। অনশনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের নির্যাতন : ১২ দিন ধরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অনশনরত শ্রমিকদের খাবার পানি, স্যালাইন ও খাবার বন্ধ করে দেয়ায় বাধ্য হয়েই নিচে নামছেন অনশনরত শ্রমিকরা। যারা খাবারের জন্য নিচে নামছেন তাদেরকে আর ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক নেতা বলেন, এটি মালিক পরে একটি পরিকল্পনা। এভাবে আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে শ্রমিকরা নিজেরাই বের হয়ে যাবে। ভেতর থেকে নিচে নামা এক শ্রমিক জানান, আমি বুধবার রাতে পানি খাওয়ার জন্য নিচে নেমে পুলিশের জন্য আর ভেতরে ঢুকতে পারছি না। পুলিশ আমাদেরকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। অন্য দিকে তোবা গার্মেন্টের চতুর্থ তলা থেকে একটি লিখিত বক্তব্য নিচে সাংবাদিকদের কাছে ফেলা হয়, যাতে লেখা আছে আমাদের সব শ্রমিক ভাইদের পুলিশ ভেতরে আটকিয়ে রেখেছে। পানির লাইন বন্ধ করে দিয়েছে। যারা নিচে গিয়েছিল তাদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। সাংবাদিক ভাইদের কাছে আকুল আবেদন আমাদের জন্য কিছু করেন। দ্বিতীয় দিনেও বিজিএমইএ থেকে বেতন নিচ্ছেন শ্রমিকরা : তোবা গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা বিজিএমইএ ভবনের নিচতলা কাউন্টার থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো বেতন নিচ্ছেন। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ শতাধিক শ্রমিক বেতন নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জানতে পেরেছি শ্রমিকদের বেতন নিতে আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিজিএমইএ বেতন দিয়ে আবার তা ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা : পুলিশি নির্যাতন উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তোবা গ্রুপের পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর শ্রমিকরা এ ঘোষণা দেন। তিন মাসের বকেয়া বেতনভাতা এক সাথে না পাওয়া পর্যন্ত এ আন্দালন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দেন তারা। এ বিষয়ে তোবা গ্রুপের শ্রমিক লাইলি আক্তার বলেন, আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে এসেছি, করুণা নয়। সুতরাং আমাদের বেতনভাতা পরিশোধ করতে হবে। আমরা যতণ পর্যন্ত বেতনভাতা না পাবো ততণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। কারখানা থেকে আমাদের নামিয়ে দিলে কী হবে, রাস্তায় বসেই অধিকার আদায় করা হবে। আরেক শ্রমিক নাজমা আক্তার বলেন, যত নির্যাতন হবে, আন্দোলন তত বেশি হবে। আমরা আহ্বান জানাই, আমাদের দাবি মেনে নিয়ে বেতনভাতা পরিশোধ করা হোক। সারা দেশে শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক : সারা দেশে সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরাম। গতকাল তোবা গার্মেন্ট থেকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের পুলিশ বের করে দিলে গ্রেফতারের আগে তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের লাঠিচার্জ এবং গ্যাস ও টিয়ার শেল নিপে করে কারখানা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশন কর্মসূচি পালন করবো। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, শ্রমিকরা যখন বিুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করে তখন তাদের শান্ত করতে পুলিশ জলকামান ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। কারখানার ভেতরের শ্রমিকদের নামাতে গেলেও শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা শ্রমিকদের পরে নামিয়ে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। পরে যাচাই-বাছাই করা হবে। আর এ ঘটনায় একাধিক মামলা করা হবে। শ্রমিকদের ইটপাটকেলের আঘাতে আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। ১০ আগস্টের মধ্যে বেতন দিতে বাধ্য করবে সরকার : শ্রম প্রতিমন্ত্রী শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছেন, তোবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন ১০ আগস্টের মধ্যে না দিলে সরকারের প থেকে তাকে বেতন প্রদানে বাধ্য করা হবে। গতকাল বিকেলে তোবা গ্রুপের শ্রমিকদের বেতন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, আগামী ১০ তারিখের মধ্যে তোবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মালিক কিভাবে এই বেতন দেবেন কিংবা কোথা থেকে এই টাকা আনবেন সরকার এটা জানে না। তাকে বেতন দিতে হবে এটাই সিদ্ধান্ত। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে বেতন প্রদান না করলে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মালিককে বেতন প্রদানে বাধ্য করা হবে। অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ১০ তারিখের মধ্যে মালিক বেতন না দিলে সরকারের প থেকে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। প্রয়োজনে সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও মালিককে বেতন দিতে হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলন করলে তা হঠকারিতায় রূপ নেয়। এই হঠকারিতা বুঝতে পেরে ৯৫ ভাগ শ্রমিক বেতন নিয়ে গেছেন। কোনো শ্রমিক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তিনি জানেন না। বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে তোবা গ্রুপের ১৩১৫ জন শ্রমিককে দুই মাসের বেতন দেয়া হয়েছে। বাকিদের কিছু সময়ের মধ্যে দেয়া হবে। এর আগে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলামের সাথে বৈঠক করেছেন তোবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন। বৃহস্পতিবার বেলা ২টার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ বৈঠক হয়। মোশরেফা মিশুকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ : তোবা গ্রুপের অনশনরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের সময় আটক হওয়া শ্রমিক নেত্রী মোশরেফা মিশুকে ছেড়ে দিয়েছে বাড্ডা থানা পুলিশ। রাত সোয়া ৮টায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। বাড্ডা থানার ওসি এম এ জলিল জানান, আমরা তাকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছিলাম, এরপর তাকে মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার সাথে কথাবার্তা বলে রাত সোয়া ৮টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। আটক হওয়া জলি তালুকদারের ব্যাপারে তিনি বলেন, উনি (জলি) থানা হেফাজতেই আছেন। তাকে ছেড়ে  দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিছুণের মধ্যে তাকেও ছেড়ে দেয়া হবে।

No comments:

Post a Comment