Monday, September 1, 2014

মামলায় হাঁসফাঁস বিএনপি নেতারা:কালের কন্ঠ

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে দুটি দুর্নীতি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এ দুটি মামলা সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হয়েছে ১৫টি মামলা। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে করা হয়েছে ৪৭টি মামলার আসামি। গতকাল রবিবার পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধেই ২১টি মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশ
িট) দেওয়া হয়েছে। শুধু এ তিনজন নন, দলটির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গত পাঁচ বছরে সারা দেশে আট হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায়ও কারাবন্দি বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি দেখানো (শ্যোন অ্যারেস্ট) হচ্ছে। এভাবে মামলায় মামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন দাবি করেছেন, সারা দেশে তাঁদের প্রায় ২০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ঝুলছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব মামলার মধ্যে দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় প্রকৃত অপরাধী সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত না করে সব আসামিকে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এমনকি সহিংসতার কোনো ভিডিও ফুটেজ আলামত হিসেবে জব্দ করা হচ্ছে না। অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢালাওভাবে কেন্দ্রীয় নেতাদের আসামি করায় মামলা দুর্বল হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্যই আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। রাজনীতি থেকে বিএনপিকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব মামলা হচ্ছে। সরকার মনে করছে, মামলা দিয়ে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। কিন্তু সরকারের এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হবে। বিএনপি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।’ এসব মামলায় বিভিন্ন সময়ে হাজিরা দেওয়া বা জামিন নেওয়ার জন্য আদালতে যাওয়ার কারণে আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একাধিক মামলা হওয়ায় আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে ঠিক, তবে এটা আন্দোলনেরই অংশ হিসেবে আমরা ধরে নিয়েছি। সুতরাং মামলার কারণে আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করি না; বরং সরকারের এসব মিথ্যা মামলার কারণে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠিত হচ্ছে।’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান আমলে অসংখ্য মামলা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে থামিয়ে দেওয়া যায়নি। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। তেমনি বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখার চিন্তা করা হলে সেটা হবে ভুল। আপাতত দমিয়ে রাখা গেলেও বিএনপিই জয়ী হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আইনজীবী হিসেবে যাতে আমি দায়িত্ব পালন করতে না পারি, সে জন্য সরকার আমার বিরুদ্ধে চারটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সারা দেশে ২০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা ঝুলছে।’ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত দুই বছরে সারা দেশে সহিংসতার অভিযোগে ৯ হাজারের বেশি মামলা হয়। শুধু ঢাকায়ই হয় চার হাজারের বেশি। বেশির ভাগ মামলাই বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আট হাজারেরও বেশি মামলায় আসামি করা হয়েছে। গত এক বছরে ঢাকায় বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে দুই শতাধিক। এর মধ্যে মির্জা ফখরুল, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আমানউল্লাহ আমান, রুহুল কবীর রিজভীসহ কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গতকাল পর্যন্ত ৬৫টি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২১টি মামলায়ই মির্জা ফখরুলকে আসামি করা হয়েছে। তিনি কয়েক দফা জেল খেটেছেন। যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বিরুদ্ধে মামলা আছে ১০৩টি। যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ৩৯টি, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে ৭০টি, সাবেক মন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা আছে। এ ছাড়া ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ফজলুর রহমান পটল, আবদুস সালাম পিন্টু, বরকতউল্লাহ বুলু, রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, মিজানুর রহমান মিনু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ফজলুল হক মিলন, মজিবর রহমান সরোয়ার, মশিউর রহমান, তরিকুল ইসলাম, নাদিম মোস্তফা, জয়নুল আবদিন ফারুক, নাজিম উদ্দিন আলম, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা রয়েছে। আজ আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার দুই মামলায় শুনানি দুটি দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতে বিচারক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দাখিল করা রিট আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিলের ওপর আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান গত ১২ মে হাইকোর্টে পৃথকভাবে দুটি রিট আবেদন দাখিল করেন। হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ গত ২৫ মে দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দেন। এরপর বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের একক বেঞ্চে পাঠানো হয়। এ বেঞ্চ গত ১৯ জুন এক আদেশে খালেদা জিয়ার রিট আবেদন খারিজ করে দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া লিভ টু আপিল আবেদন করেন। মামলা দুটিতে ঢাকার বিশেষ জজ-৩ বাসুদেব রায় ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করেন। এ অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া গত ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। আদালত ২৩ এপ্রিল আবেদনটি খারিজ করে দেন। এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে পৃথক দুটি আবেদন করেছেন। এ আবেদন দুটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য রয়েছে। ১৩০ জনের বিরুদ্ধে আরো দুটি চার্জশিট : রাজধানীর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গত ১১ মার্চ পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গত ৩ আগস্ট দণ্ডবিধি এবং গত ২৮ জুলাই বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এসব মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী ও বিরোধীদলীয় সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিবসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল রবিবার চার্জশিট দুটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। চার্জশিটভুক্ত সব আসামি জামিনে থাকায় মামলা দুটি বদলির নির্দেশ দিয়ে নথি ঢাকার সিএমএম আদালত বরাবর পাঠিয়ে দেন বিচারক। এ ছাড়া সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায়, মামলার অভিযোগ প্রমাণ করার সপক্ষে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় এবং ওমর ফারুক নামের এক আসামি জেলখানায় মারা যাওয়ায় মোট ২৮ জনকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। মোট ৪৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। একই দিনের ঘটনায় আমান, রিজভীসহ ওই বছরের ১৪৮ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলায় গত ২৪ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় গত ২৫ আগস্ট ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। গত ১১ মার্চ বিকেলে নয়াপল্টনে ককটেল বিস্ফোরণ ও সহিংসতার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে অভিযান চালিয়ে মির্জা ফখরুল, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আমান, রিজভী, জয়নুল আবদিন ফারুকসহ ১৫৪ জন নেত-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন মির্জা ফখরুল, সাদেক হোসেন খোকা, আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগপত্রে ত্রুটি : গত ১১ মার্চ ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, আগুন দেওয়ার ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে, তা টেলিভিশনের কল্যাণে দেশের মানুষ দেখেছে। ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্র থেকে দেখা গেছে, ওই দিনের সহিংসতায় কোন আসামির ভূমিকা কী ছিল, তা স্পষ্ট করে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেননি তদন্ত কর্মকর্তা। প্রকৃত অপরাধী সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত না করে সব আসামিকে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এমনকি সহিংসতার কোনো ভিডিও ফুটেজ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়নি। শুধু এই একটি মামলাই নয়, সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বেশির ভাগই দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা এবং এসব সহিংস ঘটনার মধ্যে অনেক ঘটনাই বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ধারণ করে। সেগুলো সম্প্রচারও করা হয়। পত্রপত্রিকায় ছবিও ছাপা হয়। অথচ এসব ভিডিও বা স্থিরচিত্র সংগ্রহ না করে গুরুত্বপূর্ণ এসব আলামত ছাড়াই অভিযোগপত্র দিয়ে মামলাগুলোকে দুর্বল করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, যার বেশির ভাগ আসামি বিএনপি, জামায়াত জোট ও তাদের অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা মনে করেন, সহিংসতার চিত্র থেকে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করা যেত। সে ক্ষেত্রে বিচারে তাদের শাস্তিরও সম্ভাবনা থাকত। আর এতে কেউ শাস্তি পেলে ভবিষ্যতে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সহিংসতা কমে যেত। এসব মামলায় পুলিশের উদ্দেশ্য থাকে রাজনৈতিক, যে কারণে তারা হরতালে বিরোধীদলীয় নেতাদের হয়রানিতেই ব্যস্ত থাকে। নেতাদের মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারলেই সরকারের আস্থাভাজন হয় পুলিশ। এ জন্য প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে না। ফলে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় জামিনও পেয়ে যায় গ্রেপ্তারকৃতরা। দ্রুত বিচার আইন নামে পরিচিত আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২ (সংশোধন ২০১০)-এর ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, অপরাধ সংঘটনের সময়কার স্থিরচিত্র বা চলচ্চিত্র এবং অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে কথাবার্তার ধারণকৃত অংশ সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা যাবে। আইনে সুনির্দিষ্ট বিধান থাকলেও সহিংসতা দমনে এই ধারা প্রয়োগ করছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দ্রুত বিচার আদালতের একজন বিচারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইন অনুযায়ী হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভে সহিংসতার ভিডিওচিত্র জব্দ করে চার্জশিট দেওয়া হলে বিচারকাজ সহজ হয়। প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। এর আগের বেশ কয়েকটি মামলার অভিযোগপত্রে দেখা যায়, কোনো ভিডিও ফুটেজ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়নি। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবীর বাবুল বলেন, এ আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রের সঙ্গে সহিংসতার কোনো স্থিরচিত্র বা চলচ্চিত্র আলামত হিসেবে জব্দ করার ঘটনা জানা নেই। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট ফৌজদারি আইনজীবী মো. বোরহান উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলোর মামলায় কোনো ছবি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয় না। এর কারণ পুলিশ সরকারবিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোটের বড় নেতাদের হয়রানি করতে ব্যস্ত। প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা ও সরকারবিরোধী জোট নেতাদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই এগুলো করা হচ্ছে। সরকারবিরোধী নেতাদের আদালতে ব্যস্ত রাখতেই তাঁদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে।  

No comments:

Post a Comment