Monday, September 15, 2014

সুনির্দিষ্ট সময়সীমা চাইবে বাংলাদেশ:নয়াদিগন্ত

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সই এবং সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকল অনুস্বাক্ষরে ভারতের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা চাইবে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে আসন্ন জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশন (জেসিসি) বৈঠকে এ সময়সীমা চাওয়া হবে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বাংলাদেশ অত্যন্ত ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে জেসিসিতে ভারতের নতুন সরকারের সাথে আলোচনা করবে।
নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে বাংলাদেশ কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। তবে নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরের পর বাংলাদেশ নিশ্চিত হয়েছে দিল্লি সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়।  জেসিসি বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হোসেন মাহমুদ চৌধুরী ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক ইস্যুতে আলোচনা হয়। বৈঠকের গুরুত্ব অনুধাবন করে এ প্রতিনিধিদলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আটজন সচিব রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে নিরাপত্তা, বাণিজ্য, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, ভারতের দেয়া শত কোটি ডলারের ঋণ ও অনুদানের আওতায় প্রকল্পের অগ্রগতি, ভিসা সহজীকরণ নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ অবকাঠামোভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনা ও বঙ্গোপসাগরভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দেবে।  কর্মকর্তারা জানান, ভারতের সাথে অনিষ্পন্ন ইস্যু থাকলেও এ মুহূর্তে আস্থার সঙ্কট দেখা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারতের সাথে চমৎকার সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর এবং পরের বছর সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের মাধ্যমে আস্থার সঙ্কট অনেকাংশে কেটে যায়। সম্পর্কের অগ্রগতির এ ধারাকে আরো এগিয়ে নেয়া হবে বলে সুষমা স্বরাজ ঢাকা সফরে নিশ্চিত করেছেন। তিস্তা চুক্তি সই বা সীমান্ত চুক্তির অনুস্বাক্ষর হলে চলতি বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদির সফর আশা করছে ঢাকা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশের সাথে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করে মনমোহন সিং ও নরেন্দ্র মোদিÑ উভয় সরকারই এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ ঐকমত্য সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। অন্য দিকে মনমোহন সিং সরকার রাজ্যসভায় সীমান্ত চুক্তি অনুস্বাক্ষরের বিল উত্থাপন করলেও তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিজেপি তার বিরোধিতা করে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এখন অবশ্য বিলটি পাশে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ বিল এখন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিবেচনাধীন রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে ভারতের সংসদ অধিবেশন শুরু হলে বিলটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

No comments:

Post a Comment