Monday, September 1, 2014

উত্তাল পাকিস্তান : পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন আহ্বান:নয়াদিগন্ত

পাকিস্তানের চলমান আন্দোলন সংঘর্ষে রূপ নেয়ার পর সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডারদের সাথে জরুরি বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ। শনিবার থেকে চলা সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং ৪০০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের খবরে বিােভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইসলামাবাদ, লাহোর ও করাচি শহরে। এ দিকে তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান খান ও আওয়ামি তেহরিক নেতা তাহির উল-কাদরি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সাজা না হওয়া পর্যন্ত আ
ন্দোলন চলবে। পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। খবর ডন অনলাইন, জিও টিভি ও বিবিসির।  পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ গত রাতে কোর কমান্ডারদের সাথে জরুরি বৈঠক করেছেন। রাজধানী ইসলামাবাদে বিােভকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ অব্যাহত থাকায় এই বৈঠক ডাকা হয়। শনিবার থেকে চলা সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত তিনজন নিহত এবং ৪০০ জন আহত হয়েছেন। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা চলা এ বৈঠকে চলমান সঙ্কটের সমাধান রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়।  সেনা মুখপাত্র বলেন, কোর কমান্ডারদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জেনারেল রাহিল শরিফ। বৈঠকে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।  উচ্চপর্যায়ের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানের ডন পত্রিকা জানিয়েছে, বিরাজমান অচলাবস্থা নিরসনের কৌশল নিয়েই এতে আলোচনা হয়।  বিরাজমান পরিস্থিতিতে সেনা কমান্ডারদের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সরকার এবং তাহির-উল-কাদরির পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিক (পিএটি) ও ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সেনাপ্রধানকে চলমান সঙ্কট নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গ্রহণ করায় এর গুরুত্ব বেড়ে গেছে। বিােভে উত্তাল ইসলামাবাদ : পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে শনিবার রাতে বিােভকারীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে তিনজন নিহত ও চার শতাধিক আহত হয়েছেন। পরে মধ্যরাতে বিােভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইসলামাবাদ, লাহোর ও করাচি শহরে। মতাসীন দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে, দুই সপ্তাহ ধরে বিরোধী নেতা ইমরান খান ও ধর্মীয় নেতা তাহিরুল কাদরির নেতৃত্বে কয়েক হাজার বিােভকারী অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। মূলত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতেই কর্মসূচি পালন করছিলেন তারা। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর ইসলামাবাদের বাসভবন ঘেরাওয়ের জন্য মিছিল নিয়ে অগ্রসর হলে পুলিশ বিােভকারীদের ল্য করে গুলি, রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এতে বিােভকারী ও পুলিশসহ উভয়পরে বেশ কয়েকজন আহত হন। আন্দোলন চলবে : ইমরান খান পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান খান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সাজা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। একই বক্তব্য আন্দোলনকারী অপর নেতা তাহির উল-কাদরির।   যৌথ অধিবেশন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী : পাকিস্তানের চলমান সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে কাল মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল ডন ডটকমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ওই যৌথ অধিবেশনে সংবিধান এবং পার্লামেন্টের সর্বোচ্চ ক্ষমতা সমুন্নত রাখতে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হতে পারে। উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র ডনকে জানায়, বৈঠকে পার্লামেন্ট হাউসে বিক্ষোভকারীদের হামলার নিন্দা জানানো হয় এবং এই হামলাকে সংবিধানের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়। এ দিকে দেশের এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির অবসানে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আবারো পিটিআই ও পিএটির নেতাদের বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। ওই সূত্র ডনকে আরো জানায়, নওয়াজ শরিফ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী খানকে সর্বশক্তি ব্যবহার করে কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউতে থাকা রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া বৈঠকে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিণশের নেয়া উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে। বৈঠকের পর সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আক্রমণ না করার প্রতিশ্রুতির পরও আক্রমণ করা হয়েছে। পিটিআই প্রেসিডেন্টকে বহিষ্কার করলেন ইমরান সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান তার দলের প্রেসিডেন্ট জাভেদ হাশমিকে গতকাল রোববার বহিষ্কার করেছেন। ইমরানের সমালোচনা করায় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে দলের মিছিল করার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় হাশমিকে বহিষ্কার করা হয়। জাভেদ হাশমি ছাড়াও পিটিআই থেকে নির্বাচিত তিনজন আইন প্রণেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন ইমরান খান। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পার্লামেন্ট থেকে ওই তিনজন পদত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। এই তিনজন হলেন, গুলজার খান, নাসির খান ও মুসাররাত আহমেদজেদ। জিয়ো টিভির খবরে এ কথা বলা হয়েছে।  এর আগে ইমরানকে কর্মীদের নিয়ে পার্লামেন্ট ভবন এলাকা থেকে সরে আসতে বলেন জাভেদ হাশমি। গতকাল রোববার সংবাদ ব্রিফিংয়ে ইমরানের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। হাশমি বলেন, ইমরানের সাথে আমি ভিন্ন মত পোষণ করছি। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার বিরুদ্ধে দলের অবস্থান।

No comments:

Post a Comment