Tuesday, September 9, 2014

কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে টাউ:প্রথম অালো

বাংলাদেশের কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান টাউ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর গার্ডিয়ানের। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কিনছে টাউ। কম মূল্যে উন্নতমানের পোশাকের পাশাপাশি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কারখানার কর্মপরিবেশও উন্নত করার ব্যবস্থা নেবে তা
রা। পোশাকের তুলা সরবরাহ-প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ক্রেতার কাছে পোশাক পৌঁছানো পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে নিজস্ব পরিদর্শক দল। বাংলাদেশের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কার ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নয়নেও বিনিয়োগ করবে টাউ। এ উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এটি দাতব্য তহবিল হবে না, বরং একটা পর্যায়ে গিয়ে এই বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা শুরু হবে। তবে শুরুতে স্বল্প পরিসরে কয়েকটি কারখানায় এটি চালু হবে। উদ্যোগটির প্রধান অলিভার নাইডারমায়ার বলেন, ‘আমরা মনে করি, কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নত করতে এটি হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তৈরি পোশাকের মূল্য না বাড়িয়ে আমাদের কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নত করতে হবে। এটি একটি চ্যালেঞ্জ। কারণ, ক্রেতারা সস্তায় পোশাক চায় আবার শ্রমিকদের জন্যও ভালো কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তবে সে জন্য ক্রেতাদের ওপর নির্ভর করে বসে থাকলে হবে না। বড় বড় করপোরেশন ও পুঁজিপতিদের এগিয়ে আসতে হবে।’ নাইডারমায়ারের মতে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজেই বের করা সম্ভব কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নত হচ্ছে কি না। তবে এ ক্ষেত্রে বড় বাধা হলো দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটি নিশ্চিত করা বেশ কঠিন। তার পরও যত দূর সম্ভব করতে হবে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘বর্তমানে কারখানার মালিকদের অনেকেই নিজেদের টাকায় কর্মপরিবেশ উন্নত করতে আগ্রহী নন। তাঁদের এটা করতে বলা হলে তাঁরা উল্টো ক্রেতাদের ওপর এটা চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করেন। ফলে এ উদ্যোগ কিছু উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করলেও সবাইকে করবে কি না, সেটা বলা কঠিন।’ অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটির নির্বাহী পরিচালক রব ওয়েজ বলেন, ‘বিশাল এই শিল্পকে বাঁচাতে কারখানার মালিকদের নিজেদের স্বার্থেই কারখানাগুলোকে নিরাপদ করার উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে এই শিল্প টিকবে না।’ গত বছরের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক নিহত হন । আহত হন কয়েক শ। তাঁদের বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক। এ ঘটনার পর দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেক বিদেশি ক্রেতা পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশ উন্নয়ন না হলে বাংলাদেশ থেকে পোশাক না নেওয়ার হুমকি দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুই হাজার ৪৫০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের এই শিল্পকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক অধিকার সংগঠন, মালিক, সরকারসহ সব পক্ষ মিলে পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কাজ শুরু হয়। গঠিত হয় অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স। ইতিমধ্যে ক্রেতাদের এই দুই জোট কারখানা পরিদর্শন কার্যক্রম প্রায় শেষ করে এনেছে। আর এসব উদ্যোগের সর্বশেষ পদক্ষেপ হচ্ছে টাউয়ের এই উদ্যোগ।

No comments:

Post a Comment