Saturday, September 20, 2014

সামনে ঈদ তাই মসলার দাম বাড়তি:নয়াদিগন্ত

দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে কারণ আর অজুহাতের কোনো অভাব হয় না। রোদ হলে দাম বাড়ে, বাড়ে বৃষ্টি হলেও। শীত, গ্রীষ্ম, শরৎ, বৈশাখ, দাম বাড়ানোর জন্য যেকোনো ঋতুই উপযুক্ত। রোজা, ঈদ, পূজা, নববর্ষসহ দাম বাড়ানোর উপলক্ষেরও যেন অভাব নেই তাদের। এমনই একটি উপলক্ষ আসন্ন ঈদুল আজহা। কোরবানির এই ঈদ উপলক্ষে এবার দাম বেড়েছে সব ধরনের মসলার। যদিও গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে এবার ঈদ উপলক্ষে কোনো মসলার দাম
বাড়াবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী নেতারা। জিরার দাম এত দিন প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় স্থির থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দেড় হাজার থেকে বেড়ে এক লাফে ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকায় উঠেছে এলাচের কেজি। চায়না আদার দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায়। দেশী আদার কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। চায়না রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, দেশী পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আকার ভেদে প্রতি জোড়া ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ২২০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, রুপচাঁদা ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, শিং ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, মলা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৬০০ থেকে ৭০০, সিলভার কার্প ১৪০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, বেলে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হয় ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা কেজি দরে। খাসির গোশত ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা।  রাজধানীর মৌলভীবাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা নূর মোহাম্মদ গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, বন্যার কারণে আউশ ধানের চাল সময়মতো বাজারে আসতে পারেনি। আবার বৃষ্টির কারণে চাতালগুলোও নিয়মিতভাবে ধান প্রক্রিয়াজাত করতে পারেনি। তাই বাজারে চালের সরবরাহ কমেছে। তিনি জানান, প্রতি কেজি ইরি চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা দরে, দুই সপ্তাহে আগে যার দর ছিল ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চিকন চালের দাম কেজিতে ৫০ পয়সা থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিআর-৮ ও বিআর-১১ চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়ে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের লাল মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা হালিদরে। খেসারি ডাল ৫০ টাকা, দেশী মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ান মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, ছোলা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মুগ ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, মটর ডাল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, বুট ডাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, খোলা চিনি ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, প্যাকেট চিনি ৫০ টাকা এবং প্যাকেট আটা ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ও পামতেল ৯০ থেকে ৯৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ডানো ৬৮০ থেকে ৬৮৫ টাকা ও ৪০০ গ্রাম প্যাক বিক্রি হচ্ছে ২৬৫ থেকে ২৭০ টাকা। রেড কাউ প্রতি কেজি ৬৪৫ থেকে ৬৫০ এবং মার্কস ৫০০ গ্রাম ২৬৫ থেকে ২৭০ টাকা। প্রতি কিজি ডিপ্লোমা গুঁড়াদুধ গতকাল বিক্রি হয় ৬৫০ থেকে ৬৬০ টাকা, নিডো ৭০০ গ্রাম ৫৭০ টাকা ও ৪০০ গ্রাম ২৯০ টাকা, ফ্রেশ ৪০০ গ্রাম ২০৫ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর বন্যার প্রভাবে গত দুই সপ্তাহ বাজারে সবজির দাম অস্বাভাবিক বাড়তি ছিল। ঢাকার খুচরা বাজারে বেগুন, পটোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, বরবটি, করল্লা, কাকরোল, সিমসহ সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বাড়ে সেসময়। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। দাম বাড়ে ফুলকপি, পাতাকপি, শসা, গাজর, টমেটো এবং সব ধরনের শাকের। এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কমে এসেছে বলে জানান বিক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। বরবটি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। নতুন সিম বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। টমেটো ১০০ থেকে ১১০, গাজর ৩০ থেকে ৪০, কাকরোল, করল্লা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটোল, মুলা, ঢেড়স, কচুমুখি, কচুর লতি প্রভৃতি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।  এ ছাড়া ফুলকপি ও পাতাকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ২০ থেকে ২৫ টাকা, প্রতিটি লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার ফালি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। পেঁপের কেজি ২০ থেকে ২৫ এবং আলু বিক্রি হয় ২৫ টাকা দরে। শাকের মধ্যে লাউশাকের আঁটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং লালশাক, পালংশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, পুঁইশাক, কলমিশাক প্রভৃতি বিক্রি হয় প্রতি আঁটি ১০ থেকে ৩০ টাকায়। ধনেপাতার কেজি ৩০০ টাকা।

No comments:

Post a Comment