েশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর পুকুরটি দখল করে মাছ চাষ শুরু করে দেন। সরকারের কাছ থেকে ইজারা না নিলেও সওজের কর্মকর্তারা ভয়ে এর প্রতিবাদ করেননি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাত খুনের পর নূর হোসেন পালিয়ে যাওয়ায় পুকুরের মাছ পুলিশের সহযোগিতায় কাঁচপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা লুট করে নিয়ে যান। মাছ চাষ বন্ধ হওয়ার পর নূর হোসেনের শ্যালক সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম খান কাঁচপুর সেতুর নিচে শীতলক্ষ্যা নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু দিয়ে ভরাট করে পাঁচ বিঘা আয়তনের পুকুরটি গত সোমবার থেকে দখল নিতে শুরু করেন। জায়গাটি দেখভালের দায়িত্ব নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের প্রধান কার্যালয় থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে মহাসড়কের পাশে সরকারি এ জায়গা প্রকাশ্যে বালু ভরাট করে দখল করে নিলেও সওজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি কর্মকর্তা বাধা দিচ্ছেন না। গতকাল যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির আলম বলেন, সওজের মালিকানাধীন পুকুরগুলো নূর হোসেন সরকারি কোনো অনুমতি ছাড়াই দখল করে মাছ চাষ করছিলেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। সওজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই দখলদারির বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেননি, তা তিনি জানেন না। কারণ, এই কার্যালয়ে তিনি নতুন যোগ দিয়েছেন। এখন নূরে আলম খানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কাঁচপুর সেতুর পূর্ব প্রান্তের ঢালুতে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নিচে বালু উত্তোলনের খননযন্ত্র বসিয়ে নূরে আলমের লোকজন বালু ফেলে পুকুরটি ভরাট করছেন। আর ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন ক্যাডার নদীর পারে দাঁড়িয়ে বালু ভরাট কাজের তদারকি করছেন। তদারকির সঙ্গে জড়িত নূরে আলমের সহযোগী ছাত্রলীগের কর্মী রাসেল মিয়া বলেন, ‘যেহেতু পুকুরগুলো আগে নূর হোসেনের দখলে ছিল, তাই আমরা তাঁর আত্মীয় হিসেবে একটি পুকুর ভরাট করে এখানে বালুর ব্যবসা করব। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেই আমরা কাজ শুরু করেছি। এসব পুকুর অব্যবহৃত পড়ে আছে। এখানে ব্যবসা করলে দোষের কী?’ তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল মাহমুদ বলেন, নূরে আলমের অপকর্মের কোনো দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না। স্থানীয় কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, সরকারি পুকুরগুলোতে আগে অবৈধভাবে জোর করে মাছ চাষ করতেন নূর হোসেন। এখন তাঁর শ্যালক নূরে আলম বালু দিয়ে ভরাট করে একটি পুকুর দখল করে নিচ্ছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশে আইন, প্রশাসন বলতে এখন আর কিছু নেই। জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলমের বিরুদ্ধে কাঁচপুর শিল্প এলাকায় জমি দখল ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত মার্চে কয়েকটি শিল্পকারখানার মালিক পুলিশ সদর দপ্তরে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও নানা অপকর্মের লিখিত অভিযোগ দেন। তিন মাস আগে ঢাকার মালিবাগে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে একটি গাড়ি (কার) দুমড়ে-মুচড়ে যায়। রেলওয়ে পুলিশ ওই গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, গাড়িটির মালিক নূরে আলম খান। আর অস্ত্রটির মালিক নূর হোসেন। পুলিশ নূরে আলমের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে জিআরপি থানায় মামলা করে। মামলার পর থেকে নূরে আলমকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায় না। তবে গত মঙ্গলবার কাঁচপুরে এসে বালু ভরাট কাজের তদারকি করে আবার ঢাকায় চলে যান বলে এলাকার লোকজন জানান। নূরে আলমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি, দুটি ফোনই বন্ধ রয়েছে। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক জানান, অস্ত্র আইনের মামলা ছাড়াও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে নূরে আলমের বিরুদ্ধে। তবে পলাতক থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Friday, October 24, 2014
সরকারি পুকুর ভরাট করছেন ছাত্রলীগ নেতা:প্রথম অালো
েশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর পুকুরটি দখল করে মাছ চাষ শুরু করে দেন। সরকারের কাছ থেকে ইজারা না নিলেও সওজের কর্মকর্তারা ভয়ে এর প্রতিবাদ করেননি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাত খুনের পর নূর হোসেন পালিয়ে যাওয়ায় পুকুরের মাছ পুলিশের সহযোগিতায় কাঁচপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা লুট করে নিয়ে যান। মাছ চাষ বন্ধ হওয়ার পর নূর হোসেনের শ্যালক সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম খান কাঁচপুর সেতুর নিচে শীতলক্ষ্যা নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু দিয়ে ভরাট করে পাঁচ বিঘা আয়তনের পুকুরটি গত সোমবার থেকে দখল নিতে শুরু করেন। জায়গাটি দেখভালের দায়িত্ব নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের প্রধান কার্যালয় থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে মহাসড়কের পাশে সরকারি এ জায়গা প্রকাশ্যে বালু ভরাট করে দখল করে নিলেও সওজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি কর্মকর্তা বাধা দিচ্ছেন না। গতকাল যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির আলম বলেন, সওজের মালিকানাধীন পুকুরগুলো নূর হোসেন সরকারি কোনো অনুমতি ছাড়াই দখল করে মাছ চাষ করছিলেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। সওজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই দখলদারির বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেননি, তা তিনি জানেন না। কারণ, এই কার্যালয়ে তিনি নতুন যোগ দিয়েছেন। এখন নূরে আলম খানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কাঁচপুর সেতুর পূর্ব প্রান্তের ঢালুতে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নিচে বালু উত্তোলনের খননযন্ত্র বসিয়ে নূরে আলমের লোকজন বালু ফেলে পুকুরটি ভরাট করছেন। আর ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন ক্যাডার নদীর পারে দাঁড়িয়ে বালু ভরাট কাজের তদারকি করছেন। তদারকির সঙ্গে জড়িত নূরে আলমের সহযোগী ছাত্রলীগের কর্মী রাসেল মিয়া বলেন, ‘যেহেতু পুকুরগুলো আগে নূর হোসেনের দখলে ছিল, তাই আমরা তাঁর আত্মীয় হিসেবে একটি পুকুর ভরাট করে এখানে বালুর ব্যবসা করব। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেই আমরা কাজ শুরু করেছি। এসব পুকুর অব্যবহৃত পড়ে আছে। এখানে ব্যবসা করলে দোষের কী?’ তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল মাহমুদ বলেন, নূরে আলমের অপকর্মের কোনো দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না। স্থানীয় কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, সরকারি পুকুরগুলোতে আগে অবৈধভাবে জোর করে মাছ চাষ করতেন নূর হোসেন। এখন তাঁর শ্যালক নূরে আলম বালু দিয়ে ভরাট করে একটি পুকুর দখল করে নিচ্ছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশে আইন, প্রশাসন বলতে এখন আর কিছু নেই। জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলমের বিরুদ্ধে কাঁচপুর শিল্প এলাকায় জমি দখল ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত মার্চে কয়েকটি শিল্পকারখানার মালিক পুলিশ সদর দপ্তরে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও নানা অপকর্মের লিখিত অভিযোগ দেন। তিন মাস আগে ঢাকার মালিবাগে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে একটি গাড়ি (কার) দুমড়ে-মুচড়ে যায়। রেলওয়ে পুলিশ ওই গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, গাড়িটির মালিক নূরে আলম খান। আর অস্ত্রটির মালিক নূর হোসেন। পুলিশ নূরে আলমের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে জিআরপি থানায় মামলা করে। মামলার পর থেকে নূরে আলমকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায় না। তবে গত মঙ্গলবার কাঁচপুরে এসে বালু ভরাট কাজের তদারকি করে আবার ঢাকায় চলে যান বলে এলাকার লোকজন জানান। নূরে আলমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি, দুটি ফোনই বন্ধ রয়েছে। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক জানান, অস্ত্র আইনের মামলা ছাড়াও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে নূরে আলমের বিরুদ্ধে। তবে পলাতক থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment