Saturday, October 18, 2014

বিএনপির শত্রু বিএনপিই:কালের কন্ঠ

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সুধীসমাজ এবং সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখন বড় একটা প্রশ্ন-  সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? নাকি ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী পরিস্থিতির মতো আবারও অস্তিত্বের সংকটে পড়বে? কারণ, ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর প্রায় ৯ মাস অতিক্রান্ত হলেও সরকারবিরোধী আন্দোলনের একটি কার্যকর কর্মকৌশল এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। বরং আন্দোলন এবং বৈদেশিক সম্পর্ক জোরদার করাসহ নীতিন
ির্ধারণী বিভিন্ন প্রশ্নে দলটির মধ্যে প্রচণ্ড অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। অনেকের মতে, দলের চেইন অব কমান্ড বলতে কিছু নেই। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্য নেতারা যাঁর যাঁর সুবিধামতো তথ্য দিচ্ছেন। ফলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে নেতাদের মধ্যেও নেই কোনো সমন্বয়। তাঁরা প্রত্যেকে নিজের মতো করে কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে দলাদলিও চরম আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিকে বিএনপির জন্য এক সংকটকাল বলে পর্যবেক্ষকমহল মনে করছে। তাদের মতে, ঘুরে দাঁড়াতে হলে বিএনপিকে অবশ্যই একাট্টা হয়ে মাঠে নামতে হবে। পাশাপাশি দলীয় ফোরামে আলোচনা করে বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি লিখিত পলিসি তৈরি করে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তবে এসব কিছুর আগে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সৃষ্ট শূন্যতা ও সমন্বয়হীনতা এবং হতাশা দূর করার মতো উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে তাদের মত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আকবর আলি খানের মতে, বিএনপির সামনে অনেক সমস্যাও আছে; আবার ঘুরে দাঁড়াতে যে পারবে না, এটাও বলা যায় না। তিনি বলেন, অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে সুবিধামতো অর্থাৎ হয় বিএনপির পক্ষে, না হয় বিপক্ষে বলবে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে সেটা ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। সময়ই তা বলে দেবে। অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহর মতে, পুনর্গঠন কিংবা দল গোছানো যে প্রক্রিয়ায়ই হোক, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিএনপিকে কিছু করতে হবে। তা না হলে বিএনপির কপালেও দুঃখ আছে; দেশবাসীর কপালেও দুঃখ আছে। কর্মকৌশল নির্ধারণ প্রশ্নে ড. মাহবুবউল্লাহ বলেন, দলীয় ফোরামে পর্যালোচনা করে বিএনপিকে স্পষ্টভাবে ঠিক করতে হবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাদের মিত্র কে। কিংবা জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে তারা কাকে কী দিতে পারবে! পাশাপাশি পলিসি নির্ধারণ করে সবাইকে একই কাঠামো বা নেতৃত্বের নির্দেশে কাজ করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করলে বিএনপি পিছিয়ে যাবে। কর্মসূচি প্রণয়ন ও তা সফল করার ক্ষেত্রেও সমন্বয় লাগবে। বর্তমানে কিছুটা বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে বলেই মনে হয়। এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, বিএনপির আজকের সমস্যাকে অনেকেই আদর্শের সংকট বলে মনে করতে পারেন। কারণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন কিংবা দলের জন্য কাজ করার প্রশ্নে নেতা-কর্মীদের অনেকের মধ্যে ডেডিকেশনের অভাব দেখা যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের মতে, বিএনপির আজকের মূল সংকট পরিবারতন্ত্র। দলটির সিনিয়র নেতারা ধরে নিয়েছেন যে আগামী দিনে তারেক রহমানই বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন। ফলে তাঁরা কতটা সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় হবেন তা নিয়ে দোটানায় রয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং বাংলাদেশের সামরিক ও বেসামরিক শক্তিগুলোর মধ্যেও তারেকের ব্যাপারে মনোভাব এখনো ইতিবাচক নয়। এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইমতিয়াজ বলেন, বিএনপি কখনোই আন্দোলনের দল ছিল না। ৫ জানুয়ারির আগে তারা ভেবেছিল, আন্দোলনের একটা পর্যায়ে ওয়ান-ইলেভেনের মতো হয়তো সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। এখন তারা মধ্যবর্তী বা আগাম নির্বাচনের জন্য বসে আছে। কারণ তারা জানে, মধ্যবর্তী নির্বাচন দিলেই তারা ক্ষমতায় আসবে। থমকে গেছে বিএনপি : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর কার্যত বিএনপি থমকে গেছে। ফলে দলগত ও সাংগঠনিকভাবে এখনো অনেকটাই স্থবির দলটি। কিছু নেতা-কর্মী দলীয় ও গুলশান কার্যালয়ে আসা-যাওয়া শুরু করলেও দলটির সর্বস্তরে গতিশীলতা নেই। বেশির ভাগ নেতা-কর্মী এখনো নিষ্ক্রিয়। আগামী দিনে কী হচ্ছে বা হবে তা তাদের জানা নেই। মধ্যম ও মাঠপর্যায়ের অধিকাংশ নেতা বা কর্মীর মধ্যেই নির্বাচনের আগে ক্ষমতায় যাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গেছে। ফলে নেতাদের একটি বড় অংশ বলছে, দলকে চাঙ্গা করার জন্য ত্বরিত কিছু ব্যবস্থা বা উদ্যোগ নেওয়া এ মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি। তাঁদের মতে, দলকে চাঙ্গা করার জন্য  এখনই দলীয় কাউন্সিল হওয়া উচিত। এ ছাড়া দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এ মুহূর্ত থেকেই কেন্দ্রীয় ও মহানগরী কার্যালয়ে আসা-যাওয়া শুরু করার পাশাপাশি প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় জনসভা করে নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করা উচিত বলেও তাঁরা মনে করেন। সূত্র মতে, বিএনপির বেশির ভাগ নেতা-কর্মীর আশঙ্কা, বিভিন্ন মামলায় আগামী দিনে খালেদা জিয়াসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কারাগারে নেওয়া হবে। ফলে ওই অবস্থায় দল পরিচালনা এবং আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি কী হবে তা নিয়ে আগাম বার্তা বা দিকনির্দেশনা শুনতে চাইছে তারা। নেতৃত্বের সংকট? : ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে একটানা প্রায় ৩২ বছর ধরে দলের হাল ধরে আছেন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে তাঁর নেতৃত্বে তিনবার দলটি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের পর দলটির মধ্যে প্রথমবারের মতো নাজুক অবস্থা তৈরি হয়। অনেকের মতে, এবারেও নির্বাচনের আগে ক্ষমতায় যাওয়ার এক ধরনের নিশ্চিত অবস্থা থেকে ছিটকে পড়ায় বিএনপির মধ্যে তীব্র হতাশা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, দলটি আসলে এখন সঠিক নেতৃত্বে চলছে কি না। বিশেষ করে ২৯ ডিসেম্বরের ‘গণতন্ত্রের জন্য অভিযাত্রা’ কর্মসূচি সফল না হওয়ায় নেতৃত্বের ব্যর্থতার আলোচনা নতুন করে উঠে এসেছে। নেতারা এ জন্য পরস্পরকে দায়ী করছেন। এ ছাড়া ওই ব্যর্থতাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কিছুটা সংশয় ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এমনকি সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে আন্দোলন ভণ্ডুল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে। এমন এক পরিস্থিতিতে বলা হচ্ছে, দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করার মতো বড় রাজনীতিকরা একসময় খালেদা জিয়ার পাশে থাকলেও এখন আর নেই। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর দলটির ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির মধ্যে বয়সের ভারে ন্যুব্জ তিনজন অসুস্থ এবং নিষ্ক্রিয়। এ ছাড়া প্রভাবশালী সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী কারাগারে। তারেক রহমান লন্ডনে। বাকিদের অনেকেই মামলার কারণে গা বাঁচিয়ে চলছেন বলে অভিযোগ আছে। আরো অভিযোগ আছে, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ব্যর্থ ও নিষ্ক্রিয় করার জন্য প্রথম থেকেই বড় একটি অংশ কাজ করছে। ফলে তিনিও কার্যকর অবদান রাখতে পারছেন না। মির্জা আব্বাস ও তাঁর অনুসারীরা মহানগরী বিএনপির পাশাপাশি মূল দলের নিয়ন্ত্রণ সংহত করতে ব্যস্ত। অনেকের মতে, এই দুই নেতার নেতৃত্বাধীন অংশের মূল লক্ষ্য, শেখ হাসিনা সরকারকে হটানোর আগে সাদেক হোসেন খোকাকে হটানো। গুরুতর অসুস্থ হয়ে খোকা গত চার মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন। মূলত আব্বাস ও খোকাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে বিপরীতমুখী দুটি বলয় পাঁচ বছর আগেও ছিল এবং এখনো আছে। ফলে এক গ্রুপ সক্রিয় হলে আরেক গ্রুপ নিষ্ক্রিয় হচ্ছে। আর এভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিএনপির আন্দোলন। এদিকে সংগঠনের কেন্দ্রের এমন অবস্থা থেকে হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছেন দলের মধ্যম ও মাঠপর্যায়ের নেতারাও। তাঁরা চোখে অন্ধকার দেখছেন। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, আসলে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। তবে নেতৃত্বের সমন্বয়হীনতা যে রয়েছে তা অস্বীকার করা যাবে না। তা ছাড়া নেতাদের সবার যোগ্যতা যে সমান নয় তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে বা বাছাই করে তাঁদের যোগ্য স্থানে দিতে হবে। কারণ বর্তমান অবস্থায় নেতাদের কেউ নিজেকে দায়িত্বশীল বলে মনে করছেন না। তিনি বলেন, কাউন্সিল করে দলকে চাঙ্গা করার এবং কর্মীদের মনোবল পুনরুদ্ধার করা এখন খুবই জরুরি। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, সততা এবং জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে বিএনপি সরে গেছে- এটা আজ সবাই বলাবলি করছে। দলের প্রতি কমিটমেন্টেরও অভাব রয়েছে।  আদর্শিক সংকট ও সুবিধাবাদ : দলের প্রবীণ নেতা ও সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের বড় একটি অংশ মনে করেন, ঢাকায় বিএনপির আন্দোলন সফল না হওয়া তথা নেতাদের গা বাঁচিয়ে চলার প্রবণতাই দলটিকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তাঁদের মতে, কিছু কিছু নেতা শুধু টেলিভিশনে চেহারা দেখানোর জন্য সভা-সমাবেশে যোগ দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রবীণ এক নেতা বলেন, আসলে দলটির নেতা-কর্মীরা ঝুঁকি নিতে চায় না। আন্দোলনের দুর্বলতার চিত্র তারা টেলিভিশনে দেখে হা-হুতাশ করতে পছন্দ করে। কারণ নেতারা জানেন, নির্বাচন হলে তাঁরা এমপি হবেন, আর ক্ষমতায় গেলে তাঁরা মন্ত্রী হবেন। ফলে তাঁরা প্রত্যেকেই আশা করে থাকেন, ঝুঁকি অন্য কেউ নিক, সুবিধা তিনি পাবেন। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে বিএনপির অনেকেই টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। ফলে সেগুলো রক্ষার মনোভাব থেকেই সরকারের রোষানলে তারা পড়তে চান না। সমন্বয়হীনতার অভাব : খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দলের জন্য প্রয়োজনীয় ও কার্যকর কিছু করার চেয়ে দলটির প্রভাবশালী নেতারা খালেদা জিয়াকে খুশি করতেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। এ জন্য প্রত্যেকেই নিজের মতো বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে খালেদা জিয়াকে তা অবহিত করে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে তাঁদের মধ্যে সমন্বয়হীনতাই প্রকাশ পায়। বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানের নেতৃত্বে বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক একটি কমিটি রয়েছে। খালেদা জিয়ার নির্দেশে মাঝেমধ্যে ওই কমিটি বৈঠকে বসে। গত সোমবারও শফিক রেহমানের বাসায় ওই কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে বিএনপির করণীয় নির্ধারণে কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বেশি আলোচিত হয়েছে। অবশ্য ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতের অবস্থানের ব্যাপারে করণীয় বা আগাম পরামর্শ এ কমিটি দিতে পারেনি। তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের এখন তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি একজন নেতা নেপালি একজন নাগরিককে গুলশান কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করান; বলেন, ওই ব্যক্তির সঙ্গে বিজেপির উচ্চপর্যায়ের সম্পর্ক রয়েছে। আরেক নেতা সম্প্রতি গোপনে ভারত সফর করে জানান, তিনি এম জি আকবরের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন। সেখানে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে কথা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। আরেক নেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে বলে সম্প্রতি খালেদা জিয়ার কাছে দাবি করেন। সূত্র জানায়, দলটিতে বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষার বিষয়ে যেসব নেতা কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে একদিকে রয়েছে বিরোধ ও রেষারেষি; অন্যদিকে কাজেরও কোনো সমন্বয় নেই। একজন কোনো উদ্যোগ নিলে আরেকজন আড়ালে তাঁর সমালোচনা করেন; পাশাপাশি খালেদা জিয়ার কাছেও প্রতিদ্বন্দ্বী ওই নেতার ‘যোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালান। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই খালেদা জিয়া বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা যায়। জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক বলেন, বিএনপির মতো বড় একটি দলে সমস্যা থাকবে, এটা স্বাভাবিক। আসলে একতরফা একটি নির্বাচনের পর দেশে অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলেই বিএনপিকে নিয়ে এত আলোচনা। তবে ২৯ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্রের জন্য অভিযাত্রা’য় ঢাকায় বড় কিছু ঘটেনি বলে যে সব ব্যর্থ হয়ে গেছে তা বলা ঠিক নয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদর্শ বলতে বুঝি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা। কিন্তু সেটা থেকে বিএনপি সরে যায়নি। নির্বাচনের জন্য এখন যে আন্দোলন, সেটা আদর্শিক আন্দোলনেরই অংশ। বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষা বিষয়ে দলের এ-সংক্রান্ত কমিটিতে আলোচনা হয়ে থাকে বলে তিনি দাবি করেন।

No comments:

Post a Comment