Monday, November 10, 2014

গুচ্ছগ্রামও দখল:যুগান্তর

ভূমিহীন, নিঃস্ব ও নদীভাঙনে গৃহহারা মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই গুচ্ছগ্রাম দখল হয়ে যাচ্ছে। জোর করে দখল, প্রভাব বিস্তার করে বরাদ্দ নেয়া, হাতবদলসহ নানাভাবে ৩৫ শতাংশ গুচ্ছগ্রাম দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। এতে দুস্থদের আবাস গড়ে দেয়ার জন্য নেয়া গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের আড়াই হাজার একর খাস জমি আবারও হাতছাড়া হওয়ার আশংকা রয়েছে। গত ২৬ বছরে সাত হাজার ১৯৯ একর খাস জমিতে এক হাজার ৭৬৩ট
ি গ্রাম তৈরি করা হয়েছে। সারা দেশে এসব গ্রামে বসবাসের জন্য ৮৩ হাজার ১৫২টি পরিবারকে বরাদ্দ দেয়া হয়। নানা সময়ে দখল হয়ে যাওয়া খাস জমি উদ্ধার করে দুস্থদের সেখানে বাড়িঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবারগুলো এখন এসব গ্রামে আছে কিনা। কিভাবে আছে, তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এতে গ্রামের অসাধু প্রভাবশালীদের দখল করে নিতে সুবিধা হচ্ছে। গুচ্ছগ্রাম প্র্রসঙ্গে ভূমি সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) পুণ্যব্রত চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে পুণ্যব্রত চৌধুরী নিজ দফতরে যুগান্তরকে বলেন, গুচ্ছগ্রাম দেখভালের দায়িত্ব ইউএনওর নেতৃত্বাধীন স্থানীয় বাস্তবায়ন কমিটির। তারা কোনো সমস্যা সমাধান করতে না পাড়লে জেলা প্রশাসক বা মন্ত্রণালয়কে জানাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সর্বশেষ অবস্থা ব্যাখ্যা করে তিনি আরও বলেন, ১৬ জুলাই গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে বসবাসকারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি জরিপ আইএমইডি বা কোনো বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে করতে চিঠি লেখা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর নোয়াখালীতে প্রথম বঙ্গবন্ধুর গুচ্ছগ্রাম যাত্রা শুরু করে। কিন্তু পরবর্তীকালে এটা বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৮৮ থেকে আবার চালু হয়। নাম পরিবর্তন হয়ে টিকে আছে প্রকল্পটি। আদর্শগ্রাম-১, আদর্শ গ্রাম-২ এবং গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে মোট ২৭৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সরকারি খাস জমি বিতরণ করা হয়েছে সাত হাজার ১৯৯ একর। এক হাজার ৭৬৩টি গ্রাম তৈরি করে সারা দেশের ৮৩ হাজার ১৫২টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ ভাগ জমি ও বাড়ি অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এসব জমি ও বাড়ির শতকরা ১০ ভাগ অবৈধভাবে দখলে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। শুরুতেই প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে সচ্ছলরা বরাদ্দ নিয়েছেন ৮ শতাংশ জমি ও ঘর। বরাদ্দপ্রাপ্তরা স্বেচ্ছায় বিক্রি করে চলে গেছে প্রায় ৭ ভাগ। আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে গেছেন প্রায় ৫ ভাগ, জাল দলিলের মাধ্যমে দখল হয়েছে প্রায় ৩ ভাগ। এছাড়া নানাভাবে হাতবদল হয়েছে প্রায় ২ ভাগ জমি ও ঘর। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমদ যুগান্তরকে বলেন, বিনা পয়সায় ঘরবাড়ি পাওয়া যায় বলে অনেকে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে বরাদ্দ নেয়। বাস্তবে যারা বরাদ্দ পাওয়ার উপযুক্ত তারা পায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যেহেতু এটার নিয়মিত মনিটরিং বা জবাবদিহিতা নেই তাই যা হওয়ার তাই হচ্ছে। পরিকল্পনাহীন এ প্রকল্পের বর্তমানে আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দরিদ্রদের জন্য তৈরি করা আবাস বরাদ্দ নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সুবিধাভোগীদের কেউ কেউ এসব সরকারি ঘর বিক্রি করে চলে গেছে অন্যত্র। আবার অনেকে জমি বন্ধকও রেখেছেন। নানাভাবে ঘর হাতবদল হয়েছে একাধিকবার। জাল দলিল তৈরি করে জমি দখলের ঘটনাও ঘটেছে কিছু ক্ষেত্রে। এ নিয়ে মামলা, হামলাসহ লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। শুধু তাই নয়, ঘর বরাদ্দ দিতে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ রয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। এসব অনিয়ম ও সমস্যার দায়িত্ব নিতে রাজি নয় প্রকল্প কর্মকর্তারা। তাদের মতে, প্রকল্প অনুযায়ী ঘর, ল্যাট্রিন, জমিসহ সুবিধাভোগীদের আবাসন প্রস্তুত করাই তাদের কাজ। সুবিধাভোগী নির্বাচন ও তাদের সার্বিক দেখভালের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি রয়েছে। গুচ্ছগ্রামের যে কোনো অনিয়ম ও সমস্যা তাদেরই সমাধান করার কথা। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অনেকেই অনিয়ম ও সমস্যাকবলিত গুচ্ছগ্রামের বিষয়ে তেমন সদুত্তর দিতে পারেনি। কিছু ইউএনও জানেন না তার উপজেলায় কতটি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে এবং কিভাবে চলছে। সূত্র মতে, দেশে বন্যা, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙনের শিকার মানুষের আবাসন ব্যবস্থা করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২০ নভেম্বর নোয়াখালী জেলার রামগতি থানায় সরকারি খাসজমিতে পুনর্বাসন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ওই সময় বৃহত্তর নোয়াখালীর চারটি গুচ্ছগ্রামে এক হাজার ৪৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়। ১৯৭৫-এর পর সব বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এএইচএম এরশাদ ভূমিহীনদের জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেন। পুরনো প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে আদর্শ গ্রাম নামে ভূমিহীনদের পুনর্বাসন কাজ শুরু হয়। এরপর সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রকল্পটি বন্ধ হয়নি। আদর্শ গ্রাম-১ ও ২ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৮৮ সালের জুলাই থেকে ১৯৯৮ সালের জুন পর্যন্ত ১০ বছরে এক হাজার ৮০টি আদর্শ গ্রামে ৪৫ হাজার ৬৪৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। কিন্তু তদারকির অভাবে অধিকাংশ গ্রামে মূল বরাদ্দপ্রাপ্তরা এখন আর নেই। তারা অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সেই একই প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৯৮ সালের জুলাই থেকে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ বছর ছয় মাসে আরও ২৫ হাজার ৩৮৫টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়। এ সময় অসহায় পরিবারদের থাকার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বাড়িসহ কিছু আবাদি জমিও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই গ্রামগুলোর চিত্রও প্রায় একই। দুস্থদের পরিবর্তে সচ্ছলরা বরাদ্দ নিয়েছেন। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে দাতাদের শর্তের কারণেই প্রকল্পের নামের সঙ্গে ক্লাইমেট শব্দটি যুক্ত করে নতুন নাম দেয়া হয় ‘ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন’ গুচ্ছগ্রাম। বর্তমানে এই নামেই চলছে প্রকল্পটি। যুগান্তরের জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিরা জানান- পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার নওদাপাড়া গুচ্ছগ্রামে দাশুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সুফিয়া খাতুন নিজের নামে একটি ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন। তার বসতবাড়িসহ রয়েছে আবাদি জমি। এ বিষয় স্বীকার করে যুগান্তরের কাছে তিনি বলেছেন, এসব থাকলেও আমি তো বড়লোক না। কাজেই আমি ঘর বরাদ্দ নিতেই পারি। শুধু সুফিয়া নন, এ গ্রামে আরও ১১টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও সচ্ছলদের। তারা হলেন- আবদুল মালেক, আলাল উদ্দিন, সাগরিকা বেগম, রতন, হাসিনা বেগম, ছবরুদ্দিন, রেহেনা, রফিকুল ইসলাম, সেলিনা আক্তার, সুলতানা বেগম ও জেসমিন আক্তার। তারা কেউই গুচ্ছগ্রামে থাকেন না। প্রত্যেকের রয়েছে নিজেদের বসতভিটা ও আবাদি জমি। বিক্রির আশায় বরাদ্দ নেয়া বাড়িগুলো বর্তমানে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গুচ্ছগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যেই ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারপরও কেউ ভাড়া দিলে বা ব্যবহার না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সারা দেশের অধিকাংশ গুচ্ছগ্রামে ভূমিহীন ও নিঃস্ব মানুষের পাশাপাশি বরাদ্দ নিয়েছেন সচ্ছল ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসব ক্ষেত্রে প্রকৃত ভূমিহীনরা বঞ্চিত হয়েছেন। ঘর বরাদ্দের নামে দরিদ্র ও নিঃস্ব মানুষের কাছে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও গুচ্ছগ্রামে ২০১০ ও ২০১১ সালে দুই ধাপে ৯০টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। ভূমিহীনের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও অনেকে ঘর বরাদ্দ পান। বরাদ্দ পাননি এমন অনেকেই অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের তীর নয়াবিল ইউনিয়নের ১নং ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান ওরফে হবি মেম্বার এবং নয়াবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনের দিকে। তারা ১০ হাজার করে টাকা নিয়ে নাকুগাঁও গুচ্ছগ্রামে ঘর দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন। টাকা নেয়া হয়েছে অনেকের কাছ থেকে। তবে যাদের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে তাদের টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। অন্যদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা স্বীকার করেছেন। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আমজাদ হোসেন ও হবি মেম্বার বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করেছিল। তদন্তে আমরা নির্দোষ তা প্রমাণ হয়েছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার এনায়েতপুর গুচ্ছগ্রামের অনেকে ঘর বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছে। এ গ্রামের মো. আলম, আমজাদ হোসেন, হাসু, আজাদ, নুরুল ইসলাম, আবদুল খালেকসহ ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার ঘর ও জমি বিক্রি করে পালিয়ে গেছে বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। অনেকে সরকারের দেয়া ৫০ শতক জমি অন্যের কাছে বন্ধক রেখেছে। একই অবস্থা মেহেরপুরের রাজাপুর গুচ্ছগ্রামের। শতাধিক অবৈধ পরিবার বসবাস করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নানা অপকর্মও হয় এ গ্রামে। ‘চোর-বদমায়েশদের আখড়া’ বলে নাক সিটকায় স্থানীয় প্রশাসন। ফলে সেখানে চলে ফ্রিস্টাইলে অপরাধ। যশোর সদর উপজেলার শ্রীকান্তনগর গুচ্ছগ্রামে বেশির ভাগ ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে, ঘরের মধ্যে ইঁদুরে মাটি তোলে বলে জানিয়েছেন অনেকে। গ্রামের ১০টি পরিবার ঘর ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র। তারা হলেন- বাবু, হাসান, পুষ্পরানী, শিবদত্ত, মালুদা, আয়েশা, হাসিনা, আমির আলী এবং রফিকুল ইসলাম। ঝালকাঠির নুরুল্লাহপুর গুচ্ছগ্রামেরও ১০টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। তারা অন্যদের কাছে এসব ঘরের দখল বুঝিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। নাটোরের ৩৪টি গুচ্ছগ্রামের শতকরা ১২ ভাগ বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবার সরকারি স্ট্যাম্পের ওপর না দাবি লিখে জমি ও ঘর বিক্রির টাকা নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো পরিবার ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকায় জমির দলিল হস্তান্তর করেছেন। ভোলা জেলার ১৫৯টি গুচ্ছগ্রামের অধিকাংশ ঘরেই প্রকৃত বরাদ্দপ্রাপ্তরা থাকেন না। অনেকের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে পাওয়ায় অন্যত্র ঘরবাড়ি করে বসবাস করছেন। কোনো কোনো ঘর ৫-৬ বার হাতবদল হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দিঘলকান্দি গুচ্ছগ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ ও লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রামটি এখন পুরুষশূন্য। ২২ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত গ্রামটিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ১২টি বাড়িতে লুটপাট এবং ১৪টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গাংনী থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় আটক হয়েছেন ১৪ জন। গ্রেফতার এড়াতে ও প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে পুরুষরা গ্রাম ছেড়েছে। জানা গেছে, কয়েক বছর আগে দিঘলকান্দি গ্রামের বসের উদ্দিন গুচ্ছগ্রামের সদর আলী, উজাহাল, কাশেম, হজরত ও অমুল্য কুমারের জমি জাল করে রেকর্ড করে নেন। সম্প্রতি বসের আলী মারা যাওয়ার পর তারই জামাতা মোজাম্মেল হক ও ছেলে দাউদ হোসেন ওই জমি দখল করতে গেলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। ওই জমি দখলকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটে। প্রকল্প পরিচালক যা বললেন : ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক সিরাজ উদ্দিন আহমদ নিজ দফতরে যুগান্তরকে জানান, ইতিমধ্যে ২৫২টি গ্রামের মধ্যে ২৫১টি গ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। এসব গ্রামে ১০ হাজার ৬২০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। বাকি ৩০টি পরিবারকে সর্বশেষ গ্রাম নির্মাণ করে পুনর্বাসন করা হবে। এই কর্মকর্তা একই উদ্দেশ্যে নেয়া, আদর্শ গ্রাম-১ এবং আদর্শ গ্রাম-২ প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেন না। এরশাদ সরকার ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আদর্শ গ্রামগুলোর বর্তমান হাল কি জানতে চাইলে তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই বলেও জানান প্রকল্প পরিচালক সিরাজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ভালো বলতে পারবে।  

No comments:

Post a Comment