Monday, November 10, 2014

বর্ধমান জঙ্গিদের মতা নিয়ে গোয়েন্দাদের সন্দেহ:নয়াদিগন্ত

ভারতে বর্ধমান বিস্ফোরণের তদন্তের সূত্র ধরে পুলিশ ও তদন্তকারীরা যে জঙ্গি নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছেন, বাংলাদেশের মাটিতে তাদের সত্যিই কত বড় হামলা ঘটানোর মতা ছিল তা নিয়ে সন্দেহ ক্রমেই বাড়ছে।   এই বিস্ফোরণের তদন্তে নিযুক্ত এনআইএর একটি সূত্র বিবিসিকে বলেছে, তারা তাদের যে প্রাথমিক রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিয়েছেন তাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যা প্রচেষ্ট
ার কথা আদৌ উল্লেখ করা হয়নি, কারণ এ বিষয়টি নিয়ে তারা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নন।   ওই জঙ্গি নেটওয়ার্কের যে লোকবল, অর্থবল বা অস্ত্র-সম্ভারের হদিস পাওয়া গেছে সেটাও একটি বড় মাপের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না বলেই তারা ক্রমে ধারণা করছেন।   কী ছিল জঙ্গিদের উদ্দেশ্য?   এক মাসের ওপর হলো এনআইএ এই ঘটনার তদন্ত করছে, যারা ধরা পড়েছেন তাদের কেউ বলেছেন বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গের মালদা-মুর্শিদাবাদ-নদিয়া জেলা নিয়ে একটি বৃহত্তর ইসলামী রাষ্ট্র গড়া ও সেখানে শরিয়া শাসন প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।   কেউ বলেছেন, বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে সেখানে প্রকৃত ইসলামী শাসনের পথ সুগম করাই ছিল তাদের ল্য। কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে এই তদন্ত চালানোর পর গোয়েন্দারা ক্রমেই বুঝতে পারছেন যে এগুলো অনেকটাই শেখানো বুলি কিংবা নিছকই কথার কথা।   কতটা শক্তিশালী ছিল এই নেটওয়ার্ক?   বর্ধমানে ছিল এই জঙ্গি-মডিউলটির অস্ত্র কারখানা, যেখানে বিস্ফোরক মজুদ করা হতো ও আইইডি তৈরি করা হতো। তবে আরডিএক্স বা আরো শক্তিশালী বিস্ফোরক কিন্তু সেখানে মেলেনি। এ ছাড়া এই মডিউলের সাথে যুক্ত দুটো মাদরাসারও সন্ধান মিলেছে। এনআইএ বলছে, এই মাদরাসাগুলোতে জেএমবির সদস্য ১৪ জন মহিলা ক্যাডার জেহাদি প্রশিণ দিতেন।   এই নেটওয়ার্কের নেকটা অর্থায়ন হতো আসামের বরপেটা জেলায় এক হাতুড়ে ডাক্তার শাহনূর আলমের মাধ্যমে। তার অন্তত চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, তবে সেগুলোতে লেনদেন বন্ধ ছিল মাস তিনেক আগে থেকেই। সীমান্তে গরু পাচার, জালনোটের কারবারই ছিল এই জঙ্গিদের টাকার উৎস এবং হাওয়ালার মাধ্যমেও তাদের কাছে টাকা পাঠানো হতো বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন।   তদন্তে রাজনীতির ছায়া?   পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জি সরকারের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, এই তদন্তে তারা শুরু থেকেই বাধা দিচ্ছেন। কিন্তু এখন এই নেটওয়ার্কের মূল পাণ্ডা হিসেবে চিহ্নিত শেখ সাজিদ গতকাল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতেই ধরা পড়ার পর তৃণমূল দাবি করছে, সেই অভিযোগ কতটা মিথ্যে ছিল তা এখন প্রমাণিত। তৃণমূলের একজন এমপি বলেছেন, তাদের সন্দেহ পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের রাজনীতি উসকে দিতেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির উসকানিতে বর্ধমান-তদন্ত নিয়ে অতিরঞ্জিত করে নানা কথা বলা হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment