প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে স্ব-উদ্যোক্তা হওয়ার এবং অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য দেশের যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা সমাপনের পর চাকরির জন্য এখানে-সেখানে লোকজনকে ধরাধরি করা অবমাননাকর। তাঁর সরকার চায় অন্যের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে যুবসমাজ স্ব-উদ্যোক্তায় পরিণত হোক, নিজের পায়ে দাঁড়াক এবং অন্যের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ স
ৃষ্টি করুক। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সাড়ে চার হাজার ডিজিটাল সেন্টারের প্রায় ১১ হাজার উদ্যোক্তা এ সম্মেলনে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করার লক্ষ্যেই ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। নিজের পায়ে দাঁড়ানো শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, আমরা আমাদের বেকার যুবকদের জন্য এমন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব, যাতে তারা বিদেশে গিয়েও কর্মসংস্থান করতে পারে।’ তিনি বলেন, দেশের তরুণেরা কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে এখন জামানতবিহীন এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ এবং তাঁদের নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ভবিষ্যতে এই ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হবে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ কোটি সেবা প্রদান করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনলাইনে প্রায় সাত কোটি জন্মনিবন্ধন করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে ২০ লাখ নারী ও পুরুষ বিদেশে যাওয়ার জন্য তাঁদের নাম নিবন্ধন করেছেন। তিনি বলেন, ৪০ লাখের মতো ছাত্রছাত্রী ২৩ হাজার ৫০০ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণে অংশ নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের সব স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে প্রধান হাইটেক পার্কের পাশপাশি দেশের প্রতিটি জেলায় হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে। বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, কম্পিউটার শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল শব্দটা তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে জেনেছেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন অনেকেই এটিকে অসম্ভব মনে করত। কিন্তু এখন এটি বাস্তবতা। তিনি বলেন, ইন্টারনেটের গতি আরও বাড়ানোর জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ৪ বছরের মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব এম মঞ্জুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ এবং ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর পাওলিন টেমেসিস, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান শিকদার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ ও এটুআই কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার। এ ছাড়া রাঙামাটির বালুয়াখালী উপজেলার ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রের উদ্যোক্তা বিশাখা চাকমা ও রংপুর সদরের আরিফুজ্জামান তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সম্মেলনের শেষে ছিল সংগীতশিল্পী মমতাজ, সালমা ও ব্যান্ড দল এলআরবির পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
No comments:
Post a Comment