হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের নেতৃত্বে গতকাল রোববার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে জানান, নতুন কমিটি এখনকার সামগ্রিক অবস্থা এবং এর আগে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে। সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মঙ্গলবার বিমানের চেয়ারম্যানের কথিত ‘ধর্মপুত্র’ মাহমুদুল হক ওরফে পলাশসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যারা খারাপ, তাদেরই যেন দায়ী করা হয়। যারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করছে, তারা যেন এই পরিস্থিতির শিকার না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। গণমাধ্যমে খবর এবং বিভিন্ন মন্তব্য প্রকাশ ও প্রচার হলেও গতকাল বিমান মন্ত্রণালয়ে একধরনের নীরবতা লক্ষ করা যায়। বিমানের চেয়ারম্যানকে নিয়ে সবাই বিব্রত হলেও কেউ কোনো উদ্যোগ নিতে পারছেন না। জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, বিমানের ব্যবস্থাপনাই এই মুহূর্তের বড় সমস্যা। কোম্পানি হওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের কার্যত কিছুই করার নেই। সব সিদ্ধান্তই বোর্ড নিচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব বোর্ডের একজন সদস্যমাত্র। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্র জানায়, সোনা চোরাচালানের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া বিমানের চেয়ারম্যানের কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুল, বিমানের চিফ অব প্ল্যানিং অ্যান্ড শিডিউলিং ক্যাপ্টেন আবু মোহাম্মদ আসলাম শহীদ, ফ্লাইট সার্ভিস শাখার উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এমদাদ হোসেন ও ব্যবস্থাপক (শিডিউলিং) তোজাম্মেল হোসেন ও উত্তরার ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক হারুন অর রশীদকে ডিবি পুলিশ মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পাঠায়। আদালত ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আ. আহাদ গ্রেপ্তার পাঁচজনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, রিমান্ডের চতুর্থ দিন শেষ হওয়ার আগেই পাঁচ আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত সূত্র জানায়, মাহমুদুল আদালতকে বলেন, বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আছে। এ কারণে বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা তার কথা শুনতেন। তবে বিমানের কর্মকর্তারা নিজ দায়িত্বে সোনা চোরাচালান করেছেন। গ্রেপ্তার বিমানের তিন কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, মাহমুদুলের নির্দেশে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে সোনা পার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু এটা যে সোনা চোরাচালানির ঘটনা, তা তাঁরা জানতেন না বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন। তবে মানি এক্সচেঞ্জের মালিক হারুন অর রশীদ আদালতকে বলেন, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তাঁদের সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেনও ছিল। সোনা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত বিমানের ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং নজরুল শামীম দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। ডিবির কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের কাছে তথ্য আছে, নজরুল শামীম কানাডায় অবস্থান করছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর অবস্থান জানতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে। ১২ নভেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই কেজি ৬০০ গ্রাম সোনাসহ বিমান ক্রু মাজহারুল আফসার শুল্ক গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েন। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় ১৭ নভেম্বর মাজহারুল আফছার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সোনা পাচারে জড়িত হিসেবে ৬১ জনের নাম বলেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫৬ জন বিমানের ও পাঁচজন বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন) কর্মী। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ ১৮ নভেম্বর বিমানের চেয়ারম্যানের কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, November 24, 2014
আদালতে ধর্মপুত্রসহ পাঁচজনের স্বীকারোক্তি, মন্ত্রণালয়ের কমিটি:প্রথম অালো
হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের নেতৃত্বে গতকাল রোববার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে জানান, নতুন কমিটি এখনকার সামগ্রিক অবস্থা এবং এর আগে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে। সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মঙ্গলবার বিমানের চেয়ারম্যানের কথিত ‘ধর্মপুত্র’ মাহমুদুল হক ওরফে পলাশসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যারা খারাপ, তাদেরই যেন দায়ী করা হয়। যারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করছে, তারা যেন এই পরিস্থিতির শিকার না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। গণমাধ্যমে খবর এবং বিভিন্ন মন্তব্য প্রকাশ ও প্রচার হলেও গতকাল বিমান মন্ত্রণালয়ে একধরনের নীরবতা লক্ষ করা যায়। বিমানের চেয়ারম্যানকে নিয়ে সবাই বিব্রত হলেও কেউ কোনো উদ্যোগ নিতে পারছেন না। জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, বিমানের ব্যবস্থাপনাই এই মুহূর্তের বড় সমস্যা। কোম্পানি হওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের কার্যত কিছুই করার নেই। সব সিদ্ধান্তই বোর্ড নিচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব বোর্ডের একজন সদস্যমাত্র। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্র জানায়, সোনা চোরাচালানের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া বিমানের চেয়ারম্যানের কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুল, বিমানের চিফ অব প্ল্যানিং অ্যান্ড শিডিউলিং ক্যাপ্টেন আবু মোহাম্মদ আসলাম শহীদ, ফ্লাইট সার্ভিস শাখার উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এমদাদ হোসেন ও ব্যবস্থাপক (শিডিউলিং) তোজাম্মেল হোসেন ও উত্তরার ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক হারুন অর রশীদকে ডিবি পুলিশ মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পাঠায়। আদালত ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আ. আহাদ গ্রেপ্তার পাঁচজনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, রিমান্ডের চতুর্থ দিন শেষ হওয়ার আগেই পাঁচ আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত সূত্র জানায়, মাহমুদুল আদালতকে বলেন, বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আছে। এ কারণে বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা তার কথা শুনতেন। তবে বিমানের কর্মকর্তারা নিজ দায়িত্বে সোনা চোরাচালান করেছেন। গ্রেপ্তার বিমানের তিন কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, মাহমুদুলের নির্দেশে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে সোনা পার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু এটা যে সোনা চোরাচালানির ঘটনা, তা তাঁরা জানতেন না বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন। তবে মানি এক্সচেঞ্জের মালিক হারুন অর রশীদ আদালতকে বলেন, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তাঁদের সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেনও ছিল। সোনা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত বিমানের ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং নজরুল শামীম দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। ডিবির কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের কাছে তথ্য আছে, নজরুল শামীম কানাডায় অবস্থান করছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর অবস্থান জানতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে। ১২ নভেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই কেজি ৬০০ গ্রাম সোনাসহ বিমান ক্রু মাজহারুল আফসার শুল্ক গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েন। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় ১৭ নভেম্বর মাজহারুল আফছার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সোনা পাচারে জড়িত হিসেবে ৬১ জনের নাম বলেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫৬ জন বিমানের ও পাঁচজন বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন) কর্মী। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ ১৮ নভেম্বর বিমানের চেয়ারম্যানের কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment