পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা অভিযোগ করেছেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যন্ত চুক্তির দুই-তৃতীয়াংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা বলেন,
বিভ্রান্তির আড়ালে সরকার পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন বন্ধ করে রেখেছে। অনেক ক্ষেত্রে চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়নে সময়সূচিভিত্তিক কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে ১ মে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেন তিনি। এ ছাড়া চুক্তির পরিপন্থী ও জুম্ম স্বার্থবিরোধী সব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ আন্দোলন জোরদার করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সই হওয়ার পর এর বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে অনেক ধরনের টানাপোড়েন চলেছে। জনসংহতি সমিতি একাধিকবার আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছে। কিন্তু এবারই প্রথম অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিল। এই কর্মসূচির প্রকৃতি কেমন হবে, জানতে চাইলে সন্তু লারমা সাংবাদিকদের বলেন, তা নির্ভর করবে তখনকার পরিস্থিতির ওপর। পরিস্থিতি অনুযায়ী আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হতে পারে, অশান্তিময়ও হতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাঙামাটির সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, প্রবীণ রাজনীতিক পংকজ ভট্টাচার্য, আদিবাসী নেতা রবীন্দ্র নাথ সরেন ও সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কয়েকজন জনসংহতি সমিতির বক্তব্য ও কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নে তারা কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেবে না। সরকার পার্বত্য চুক্তির যেসব ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে বলে দাবি করছে, সেসব ধারা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের এই দাবি সত্য নয়।
No comments:
Post a Comment