গত শুক্রবার সকাল ১১টায় রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাঁকাই ছিল। তাই ফুট ওভারব্রিজে ওঠেননি ব্যবসায়ী আবদুল খালেক। বয়স ষাটের কাছাকাছি। হৃৎপিণ্ডে দুটো রিং পরানো। খাড়া সিঁড়ি বাইতে কষ্ট হয়। হেঁটে অর্ধেক রাস্তা পার হয়ে ডিভাইডারে উঠেছিলেন, বাকি অর্ধেক পার হওয়ার জন্য রাস্তায় পা রাখতেই সজোরে ধাক্কা দিয়ে চলে যায় একটি বাস। ঢাকার শুক্রাবাদের রাস্তায় ছিটকে পড়েন ব্যবসায়ী আবদুল খালেক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষা
র্থী তাঁকে নিয়ে যান একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি না করায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আরেকটি হাসপাতালে। তিন ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর ডাক্তাররা জানান, মাথায় মারাত্মক জখম, ইন্টারনাল ব্লিডিং হয়েছে, ৯৬ ঘণ্টার আগে কিছু বলা যাবে না। শনিবার রাতে বাসে চড়ে বনানী থেকে কারওয়ান বাজার গিয়েছিলেন প্রথিতযশা সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। কাছেই একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। বাসের পাদানি থেকে একটা পা মাটিতে রাখতে না রাখতেই ছুটতে শুরু করল বাসটি। ছিটকে পড়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকলেন প্রবীণ সাংবাদিক। সংজ্ঞাহীন, রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন এক পথচারী। এর মধ্যেই তিনি মারা গেলেন। গতকাল রবিবারও ঢাকার মৌচাক মোড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে বেপরোয়া দুই বাসের চাপায় প্রাণ হারালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোজাম্মেল হোসেন। এভাবে খোদ রাজধানীর বুকে বেপরোয়া যানবাহনের আঘাতে যখন-তখন ঝরে পড়ছে তাজা প্রাণ। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অপরাধী, অবৈধ, অযোগ্য চালক ও যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নামে নানা রকম প্রহসন দেখিয়ে এবার নেমেছে ‘নিয়ম লঙ্ঘনকারী’ পথচারী পাকড়াও অভিযানে। অথচ রাজধানীর বিশাল এলাকার গুটিকয়েক জায়গায় পথচারীর জন্য ফুট ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাসের মতো ‘নিয়ম রক্ষার’ ব্যবস্থা থাকলেও বেশির ভাগ এলাকার রাজপথে তা নেই। বিকল্প না পেয়ে সেসব জায়গায় পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয়, আর তখনই ঘটে মর্মান্তিক সব দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তাদের ভাষ্য- তারা বিকল্প অবকাঠামোর কথা ভাবছে। রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেল মোড় থেকে ফার্মগেট পুলিশ বক্স পর্যন্ত নিয়ম ভেঙে রাস্তা পারাপার রোধ করার জন্য পুলিশের অভিযান চলছে ২৫ নভেম্বর থেকে। ফুট ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস ব্যবহার না করার জন্য কয়েক শ পথচারীকে মোবাইল কোর্টে তাৎক্ষণিক জরিমানা করা হয়েছে, কাউকে কাউকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। হোক না ব্যবহারের অনুপযোগী, তবু ডানে-বাঁয়ে কিছুটা হাঁটলে ফুট ওভারব্রিজ অথবা আন্ডারপাসের দেখা মেলে ওই রাস্তায়। সেগুলো ব্যবহার না করে আড়াআড়ি দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হওয়া যে ঠিক হয়নি তা পথচারীরাও বুঝেছে। তাই লজ্জিত হয়ে শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছে তারা। কিন্তু যেখানে ফুট ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস নেই, সেখানে রাস্তা পার হওয়ার উপায় কী? অথবা সাবেক সচিব ফারুক চৌধুরীর বয়সের যাঁরা অত উঁচু সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পারেন না তাঁদের কী হবে? তিনি নিজেই লিখেছেন উত্তরায় রাস্তার ওপারে কাজ পড়লে তাঁর কী করম দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়। সেখানে অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশুকোলে মা-বাবা, শারীরিক প্রতিবন্ধীরা রাস্তা পার হবেন কিভাবে? আর সাংবাদিক জগ্লুল চৌধূরী তো রাস্তা পার হচ্ছিলেন না; যেই বাসে চড়ে এসেছিলেন, সেই বাসই হয়ে গেল তাঁর ঘাতক। যেখানে থামবার কথা নয়, যাত্রী না পেলে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে বাসগুলো। অথচ নামার সময় তাদের তর সয় না। ঝুঁকি নিয়ে বাসে উঠতে-নামতে হয় নারী, পুরুষ, শিশু বাসযাত্রীদের, শিকার হতে হয় দুর্ঘটনার। সেসব বাসের বেপরোয়া চালক ও হেলপারদের খুঁজে পাওয়া যায় না। সাংবাদিক জগ্লুল চৌধূরীর ঘাতক বাসটির খোঁজও এখনো পায়নি পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের হিসাবে, গত পাঁচ বছরে রাজধানীতে প্রায় এক হাজার পথচারী ও যাত্রীকে প্রাণ দিতে হয়েছে গাড়িচাপায়। অবস্থা এমন যে অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় এখনো রাজধানীর ভিআইপি সড়ক পার হতে হয় দৌড় দিয়ে। এ অবস্থায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ফুট ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ও ফুটপাত ব্যবহারে অনীহা যাত্রীদের ধরতে রাজধানীতে শুরু হয়েছে অভিযান। গতকাল পর্যন্ত অভিযানে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭৮৮ জনের কাছ থেকে। অভিযানে অংশ নেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পথচারীদের হাঁটা ও পারাপারের যথেষ্ট সুবিধা তৈরি করলে সুদূরপ্রসারী ফল পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বিত বিভিন্ন মেয়াদি কর্মসূচির মধ্য দিয়েই নগরীর সড়কে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সড়ক, পরিবহন ও যাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করে থাকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। অতীতে দেখা গেছে, একেক মন্ত্রণালয় একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সমন্বিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়নি। কোনো মন্ত্রণালয় উড়াল সড়ক নির্মাণ করতে গেলে আরেক মন্ত্রণালয়ের আরেক অবকাঠামো নির্মাণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেমন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান অংশে নির্মিত মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের বিভিন্ন অংশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থায় ছিল। প্রস্তাবিত ঢাকা উড়াল সড়কের নকশা আবার মেট্রোরেলের সঙ্গে ফার্মগেটে সাংঘর্ষিক অবস্থানে ছিল। পরে ঢাকা উড়াল সড়কের নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে আগে কোনো যোগাযোগ না করেই শুরু হয়েছে অভিযান। বিশেষজ্ঞদের মতে, পথচারী চলাচলের পরিকল্পনা না করে হঠাৎ শুরু এ অভিযান সফল হতো নিরাপদ সড়কের প্রচারাভিযান জোরদার থাকলে। দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪৪ শতাংশই পথচারী। আর বেশির ভাগ ঘটে থাকে নগর এলাকায়। ঢাকা নগরীতে গাড়ির চাপ সামাল দিতে গিয়েই ট্র্যাফিক পুলিশকে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। এ কারণে সড়কে কিভাবে চলাচল করতে হয় তার প্রচারণা তেমন জোরালো নয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ নিরাপদ সড়কের জন্য জনসচেতনতা তৈরির কর্মসূচি পালন করলেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে সমন্বিত কর্মসূচি নেয় না। সড়ক নিরাপদ করে গড়ে তুলতে কী কী কর্মসূচি ও প্রকল্প নিতে হবে এ নিয়েও সমন্বয় নেই। বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকা শহরে নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় একসময় জেব্রা ক্রসিং ছিল। পরে তা তুলে দেওয়া হলো। সংস্থা ও মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো নির্মাণে সমন্বয় নেই। এ কারণে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা বা এসটিপিও নির্দিষ্ট সময় ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান কালের কণ্ঠকে বলেন, জাতীয় সমন্বিত বহু মাধ্যমভিত্তিক পরিবহন নীতিমালায় পথচারীর সুবিধার জন্য অযান্ত্রিক যান চলাচল ব্যবস্থা, সমন্বিত রাস্তা ও যানবাহনের সংখ্যা সীমিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই সুপারিশ উপেক্ষিত হয়ে আছে। আমরা ঢাকা শহরে হাঁটব কোথায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো আদর্শ নগরীতে মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ যানবাহন চলাচলের সড়ক থাকা প্রয়োজন। রাজধানী ঢাকা নগরীর আয়তন ৮১৫.৮৫ বর্গ কিলোমিটার। আদর্শ মানদণ্ড অনুসারে, নগরীতে ২০৪ কিলোমিটার সড়কের দরকার হলেও প্রধান সড়ক আছে মাত্র ৮৮ কিলোমিটার। ৮৮ কিলোমিটার প্রধান সড়কে চলাচলের জন্য নিবন্ধিত গাড়ি আছে সাড়ে আট লাখ। অথচ প্রধান সড়কগুলোয় দুই লাখ ১৬ হাজার যানবাহন চলাচল করার কথা। তার মানে এখন গাড়ির প্রচণ্ড চাপে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দেশে নিবন্ধিত প্রাইভেট কারের ৭৫ শতাংশ চলাচল করছে ঢাকায়। কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে, ২০২৪ সালের মধ্যে মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিটের মতো গণপরিবহন ব্যবস্থাও স্থাপন হচ্ছে না। ঢাকা নগরীতে জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব বেশি- প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৫ হাজার মানুষের বসবাস। দেড় কোটি মানুষের নগরীতে গণপরিবহনে প্রতিদিন ২১ লাখ ট্রিপের প্রয়োজন। ৬০ শতাংশ লোক গণপরিবহন ব্যবহার করেন। ঢাকায় বসবাসকারীদের প্রতি তিন হাজারে বাস-মিনিবাস আছে মাত্র একটি। এক সমীক্ষা অনুসারে, রাজধানীতে হেঁটে চলাচল করেন ৩৭ শতাংশ মানুষ। রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, পল্টন, মতিঝিল, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন স্থানের ফুটপাতের বেশির ভাগ চলে গেছে অবৈধ দখলে। এ ছাড়া বাড়তি গাড়ির চাপ পড়ছে ফুটপাতে। মোটরসাইকেলচালকরা আইন ভঙ্গ করে ফুটপাত দিয়েও মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। এ কারণে ফুটপাতও পথচারীদের জন্য নিরাপদ নয়। জানা যায়, উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট ফুট ওভারব্রিজ আছে ৯১টি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম এনামুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের পাশের ফুট ওভারব্রিজটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। কারণ এটি মেট্রোরেল প্রকল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমাদের সিটি করপোরেশনের আওতায় থাকা ৮-৯টি ওভারব্রিজ এ কারণে বন্ধ করে দিতে হবে। আমাদের উত্তর সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ৫৩টি ওভারব্রিজ আছে। মেট্রোরেল বা বিআরটি প্রকল্পের সঙ্গে যাতে সাংঘর্ষিক না হয় সে জন্য এখন থেকে আমরা আগে আলাপ-আলোচনা করে প্রকল্প বা কর্মসূচি নেব। ঢাকা শহরে জেব্রাক্রসিং আছে, কিন্তু তিন মাসের মধ্যে রং মুছে যায় গাড়ির চাকার ঘর্ষণে। আমরা নতুন করে রোড মার্কিং করব। ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩২০০ জনের বসবাস। লন্ডনে একই আয়তনে বসবাস করে ৩০০০ জন- এই তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ঘনবসতির কারণে ঢাকা মহানগরীতে ঝুঁকি বাড়ছে। তার পরও আমরা নতুন ও অবশ্যই পরিকল্পিত ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে চাই। তহবিল সঠিক সময়ে না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে অনেক সময় সমন্বয় রক্ষা করা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মোসলেহ উদ্দিন আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকা মহানগরীর সবচেয়ে বড় সমস্যা জনসংখ্যা ও গাড়ি। এর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে করণীয় ঠিক করে তা বাস্তবায়ন করা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে পুলিশের যে সমন্বয় নেই তা ঠিক নয়। সিটি করপোরেশনের কাছে আমরা বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেছি ও ধরছি। আমাদের সুপারিশের কারণে সোনারগাঁও মোড়ে জেব্রাক্রসিং দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সমন্বয় করার জন্য বিদেশে আছে আরবান ডেভেলপমেন্ট বডি। আমাদের এখানে আছে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। এটি এখন প্রায় পঙ্গু। রাজধানীর রূপসী বাংলা মোড় থেকে ফার্মগেট পুলিশ বক্স অংশে একটি পাতাল পথ ও একাধিক ফুট ওভারব্রিজ আছে। গতকাল দুপুরে ফার্মগেটে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে একটি ওভারব্রিজ চলাচলের অনুপযোগী। দিন কয়েক আগে সংস্কার কাজের জন্য এগুলো দিয়ে পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফার্মগেটে ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে না পেরে পথচারী আলতাব হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ব্যবস্থা না করে অভিযান চালানো উচিত হয়নি। বিমানবন্দর সড়কে কুড়িল উড়াল সড়ক নির্মাণ করার পর গাড়ি চলাচল দ্রুত হয়েছে। কিন্তু কুড়িল উড়াল সড়কের পাশে বাস থেকে নেমে রাস্তা পারাপার হতে হয় দৌড় দিয়ে। কারণ সেখানে ওভারব্রিজ নেই। অথচ পাশে শেওড়ায় ওভারব্রিজ আছে। কুড়িল বিশ্বরোডে ওভারব্রিজ না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, পরীবাগ থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ছয়টি ফুট ওভারব্রিজ আছে। এর মধ্যে আনন্দ সিনেমা হল সংলগ্ন ফুট ওভারব্রিজটি প্রতিস্থাপন করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এটি বন্ধ আছে। পান্থপথে নতুন ওভারব্রিজটির কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। বাসস্টপেজ চিহ্নিত ও জেব্রাক্রসিংয়ের চিহ্ন দৃশ্যমান করতে হবে। পরিবহন বিশেষজ্ঞ আবু নাসের খান বলেন, ঢাকায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা নেই। ফুটপাতে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা র্যাম্প থাকতে পারে। প্রবীণদের নিরাপদ চলাচলের সড়ক অবকাঠামোও নেই।
No comments:
Post a Comment