Tuesday, December 16, 2014

সুন্দরবনের ক্ষতি যাতে না বাড়ে সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ:নয়াদিগন্ত

ট্যাংকার দুর্ঘটনায় বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া তেল সরাতে এবং তি যাতে আর না বাড়ে সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি ‘ভালোভাবে’ পর্যবেণের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ভারত-বাংলাদেশ নৌ-প্রটোকল রুট ও দণিাঞ্চলের সাথে দেশের নৌবাণিজ্য যোগাযোগের বন্ধ হয়ে যাওয়া পথ ঘষিয়াখালী চ্যানেল উদ্ধারে ওই খালের মুখে থাকা চিংড়ি ঘেরগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে
অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর গোপালগঞ্জ ও যশোরের জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। গত ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে ‘ওটি সাউদার্ন স্টার-৭’ নামের ট্যাংকারডুবির পর প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দিলেন। প্রথমে রাসায়নিক ব্যবহার করে তেল দূষণ কমানোর পরিকল্পনা নেয়া হলেও পরে সুন্দরবনের তির আশঙ্কায় তা স্থগিত করে কর্তৃপ। সুন্দরবনের নদী ও খালে ছড়িয়ে পড়া তেল সংগ্রহে তিন দিন ধরে স্থানীয় গ্রামবাসী, জেলে ও শ্রমিকদের নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। এ কাজে ব্যবহার হচ্ছে হাঁড়ি-পাতিল ও চটের বস্তাসংবলিত স্থানীয় পদ্ধতি। বৈঠক থেকে খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী তেল অপসারণে স্থানীয়দের অংশ নেয়ার প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে এই তেল সরিয়ে নিচ্ছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।   মংলার নালা ও রামপালের কুমার নদী ভরাট হয়ে ভারত-বাংলাদেশ নৌ-প্রটোকল রুট ও দণিাঞ্চলের সাথে দেশের নৌবাণিজ্য যোগাযোগ পথ হিসেবে ব্যবহৃত ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। সেই সময় থেকে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে শ্যালা নদীকে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার করছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ। সংশ্লিষ্টরা জানান, পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকির কারণে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে এ নৌপথ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন সময়ে দাবি এসেছে। শ্যালা নদীর ঘটনার পর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ও ওই পথে নৌযান চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধের সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান তা নাকচ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নৌযানগুলো মংলাবন্দরে পৌঁছতে এখন সাত থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে চলাচল করছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের বিষয়টি ভালো করে মনিটরিং করা দরকার, তেল সরানো এবং আর তি যাতে না হয়। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।   মংলাবন্দরের কাজ বন্ধ করে দেয়ায় বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ঘষিয়াখালী খাল অনেক দিন ড্রেজিং করা হয়নি। পলিতে ভরাট হয়ে গিয়েছিল। বিএনপির সময় মংলাবন্দরের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। সেজন্য এ দিকটায় কেউ আর খেয়াল করেনি। ঘষিয়াখালীর যে শাখা খালগুলো ছিল, তার মুখে চিংড়ি ঘের করে পানি আসার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ঘেরগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে এই ঘষিয়াখালী খাল চালুর কথা বলেছি। এর মুখ থেকে চিংড়ি ঘের সরিয়ে দিতে হবে, যাতে খালগুলো বন্ধ না হয়।   ভিডিও কনফারেন্সে দুই জেলার প্রশাসকের সাথে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে সম্মেলন আয়োজনের প্রশংসা করেন। গত ২০ নভেম্বর ওই সম্মেলন হয়। শেখ হাসিনা বলেন, ডিসি-ডিএম সম্মেলন একটি ভালো উদ্যোগ। মাদক, চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার বন্ধে এটি ভালো উদ্যোগ। কারো একার পে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব না। এ জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর যৌথ উদ্যোগ দরকার। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে এ ধরনের সম্মেলন করা যায় কি না সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দেন তিনি।   ওই দিকে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে জানানো হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত যারা রাষ্ট্রপতি ছিলেন তাদের সম্মানার্থে অবসরভাতা দেয়ার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করছে সরকার। বর্তমানে ১৯৭৯ সাল থেকে যারা রাষ্ট্রপতি ছিলেন তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা পেয়ে আসছেন।        

No comments:

Post a Comment