Monday, January 5, 2015

সোনার বার ছিনতাইয়ে পুলিশ!:প্রথম অালো

সোনার বার ছিনতাইয়ের অভিযোগে গতকাল শনিবার রাতে চট্টগ্রামে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) দায়িত্বে থাকা ওই কর্মকর্তার নাম আবুল হোসেন। এ ঘটনায় আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া সোনা ব্যবসায়ীও রয়েছেন। পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ২৮টি সোনার বার নিয়ে চট্টগ
্রামের পুরোনো রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ব্যবসায়ী নারায়ণ কর্মকার। তাঁর ফেনী যাওয়ার কথা ছিল। ওই সময় পাঁচ হকার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোনার বার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে নারায়ণ স্টেশনে থাকা পুলিশের কাছে ছুটে যান। তখন গোয়েন্দা পুলিশের দারোগা (এসআই) আবুল হোসেন ও হকাররা ২৮টি সোনার বার তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর নারায়ণ কর্মকার সোনার বারগুলো উদ্ধারের জন্য পুলিেশর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চাপে পড়ে গতকাল ২৩টি সোনার বার ফেরত দিয়েছেন আবুল হোসেন। এরপরই তাঁকে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, সোনার বারগুলো বৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে এমন কোনো কাগজপত্র নারায়ণ কর্মকার পুলিশকে দেখাতে পারেননি। তাই তাঁর বিরুদ্ধেও চোরাচালান আইনে মামলা করা হয়েছে। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি সোনার বারের ওজন ১০ তোলা, যার বাজারদর প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ২৮টি সোনার বারের বাজারদর ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর ভাই লাল কৃষ্ণ কর্মকারও ছিলেন। গতকাল রাত ৮টার দিকে মুঠোফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নগরের হাজারী লেনে তাঁর ভাইয়ের সোনার দোকান রয়েছে। ছিনতাই হওয়া সোনার বারগুলো তাঁর ভাইয়ের। রাত ১০টার দিকে চোরাচালান আইনে করা মামলায় তাঁকেও আসামি করেছে পুলিশ। তবে মামলায় পুলিশ লাল কৃষ্ণকে পলাতক দেখিয়েছে। ওই মামলায় তাঁর ভাইসহ সজল চৌধুরী নামের আরেক ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা আটকের খবরে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা রাতে কোতোয়ালি থানায় ভিড় করেন। তবে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে দেয়নি পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দিন জানান, সোনার বার ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আবুল হোসেনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রহিম মেম্বার নামের একজন পলাতক রয়েছেন। তাঁর বাড়ি পটিয়ায়। আর চোরাচালান আইনে মামলা হয়েছে তিনজনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে লাল কৃষ্ণ পলাতক। পলাতক দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল জলিল মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গোয়েন্দা শাখার এক দারোগা ২৮টি স্বর্ণের বার লুটে নেয়। আমরা তাঁর কাছ থেকে ২৩টি বার উদ্ধার করেছি। বাকি পাঁচটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এটা আসলে ডাকাতি ছাড়া আর কিছু নয়।’তিনি বলেন, যারা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় নামবে তারা কেউ পার পাবে না। এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে যারাই জড়াবে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেননা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

No comments:

Post a Comment