Thursday, January 8, 2015

ভুয়া ক্ষতিপূরণ দেখিয়ে ২৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ:যুগান্তর

ভুয়া ক্ষতিপূরণ দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ একটি চক্র প্রায় ২৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। জমি অধিগ্রহণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ চিংড়ি ঘের ইজারাদের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করা হয়। এ অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেআইনি ও মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়ার পেছনে বড় ধরনের দুর্নীতি
হয়েছে। একইসঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে জোর সুপারিশও করা হয়। সূত্র জানায়, সরকারি কাজে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা মৌজায় কয়েকশ’ একর জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়ে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গত বছরের ৯ জুন জমি, অবকাঠামো, গাছপালা, ব্রাইন ওয়াটার ও ফসলের জমি বাবদ মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করে জেলা প্রশাসক। তবে এর মধ্যে চিংড়ির ক্ষতিপূরণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, চিংড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাক্কলিত ৩০ কোটি ৮২ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮০ টাকার ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫টি চেকের মাধ্যমে ইজারাদারদের ২৩ কোটি ৯২ হাজার ৪৬৫ টাকা পরিশোধ করা হয়। তবে চিংড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ কত একর জমির জন্য কত টাকা প্রদান করা হয়েছে সে বিষয়ে অনুমোদিত প্রস্তাবে কোনো তথ্য নেই। এমনকি অধিগ্রহণ করা জমির বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়াই শুধু একটি একপক্ষীয় মাস্টার রোলের ফটোকপির ওপর ভিত্তি করে এই টাকা পরিশোধ করা হয়। এছাড়া এই ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে ব্রাইন ওয়াটারভুক্ত জমিকেও চিংড়ির জমি হিসেবে দেখানো হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব তৈরির ক্ষেত্রে কোনো যৌথ তদন্ত বা ফ্লিড বুক প্রস্তুত করা হয়নি। মৎস্য কর্মকর্তা একাই পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এছাড়া নির্ধারীত সময় অতিবাহিত হওয়ার প্রায় ৩ মাস পর মৎস্য কর্মকর্তার পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রাক্কলন ও রোয়েদাদ প্রস্তুত করা হয়, যা আইনসম্মত হয়নি। এই অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য প্রতিবেদনে প্রধান অভিযুক্ত কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলমকে দায়ী করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক এল এ ও আরেফিন আখতার নূরসহ সংশ্লিষ্ট কানুনগো, সার্ভেয়ার এবং অফিস সহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনও দায় এড়াতে পারেন না বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (বর্তমানে এডিএম) জাফর আলম যুগান্তরকে বলেন, বিশদ ও চূড়ান্ত তদন্তে তিনি নির্দোষ বলে প্রমাণিত হবেন। এর বেশি তিনি আর কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে কিংবা মন্তব্য করতে চাননি।  

No comments:

Post a Comment