Tuesday, January 13, 2015

ইসি সচিবালয় কর্মকর্তাদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা:যুগান্তর

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের গ্রেডেশন (জ্যেষ্ঠতা) তালিকা প্রস্তুত করেছে এ সংক্রান্ত তিন সদস্যের কমিটি। ইসি সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের একীভূত করে নতুন এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে সচিবালয়ের কর্মকর্তারা পিছিয়ে পড়েছেন। পক্ষান্তরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা সিরিয়ালে উপরে উঠে এসেছেন। তালিকাটি অনুমোদনের জন্য কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
tsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'> নতুন গ্রেডেশন তালিকা নিয়ে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তালিকায় পিছিয়ে পড়ার খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। যুগান্তরকে তারা বলেছেন, তালিকা প্রকাশের পর তারা অভিযোগ করবেন। প্রয়োজনে আদালতে যাবেন তারা। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, গ্রেডেশন তালিকার প্রতিবেদন পেয়েছি। অনুমোদনের জন্য ইসির কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি চূড়ান্ত হতে সময় লাগবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তালিকা সম্পর্কে কারও আপত্তি থাকলে অভিযোগ করার সুযোগ পাবেন। সে জন্য সময় দেয়া হবে। নিজের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গ্রেডেশন তালিকা তৈরি করতে তিন কর্মকর্তার সমন্বয়ে ‘প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা তালিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটি’ গঠন করে নির্বাচন কমিশন। ইসির যুগ্ম সচিব ড. মো. শাহজাহানের নেতৃত্বে কমিটির দুই সদস্য হলেন উপপ্রধান ড. মো. আমজাদ হোসেন ও উপসচিব (আইন) মো. সেলিম মিয়া। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এ কমিটি ২৩৪ পৃষ্ঠার রিপোর্ট কমিশন সচিবের কাছে জমা দেন। এর মধ্যে ৪ পৃষ্ঠা প্রতিবেদন, ৪৮ পৃষ্ঠা জ্যেষ্ঠতা তালিকা ও ১৮২ পৃষ্ঠা পরিশিষ্ট। প্রতিবেদনে সংক্ষুব্ধদের আপত্তি জানানোর সুযোগ দিয়ে তিনটি সুপারিশ করেছে কমিটি। গ্রেডেশন তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসির যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া ও জেসমিন টুলী আগের অবস্থানে বহাল রয়েছেন। তারা দু’জনই ৮৪ ব্যাচের (সরাসরি নিয়োগ) কর্মকর্তা। এরা বাদে বাকি কর্মকর্তাদের মধ্যে তালিকায় বড় পরিবর্তন এসেছে। আগের তালিকায় তিন নম্বর থাকা ঢাকার আঞ্চলিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মিহির সারওয়ার মোর্শেদের ঠাঁই হয়েছে ২৫ নম্বরে। তিনি ১৯৯৮ সালে উপসচিব পদে পদোন্নতি পান। আর চতুর্থ স্থানে থাকা আরেক আঞ্চলিক কর্মকর্তা সৈয়দ মো. খুরশিদ আনোয়ারের অবস্থান ২৬-এ। তালিকায় ১৬ নম্বর পর্যন্ত ’৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তারা রয়েছেন। ১৭ থেকে ২১ নম্বরে রয়েছেন ’৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তারা। এভাবে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য ব্যাচের কর্মকর্তাদের তালিকা করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, নতুন তালিকায় অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা জুনিয়রদের নিচে পড়ে যাবেন। সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার অনেক কর্মকর্তা উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আগে চলে এসেছেন। এর আগেও সাবেক সিইসি ড. শামছুল হুদা কমিশনের আমলে একটি গ্রেডেশন তালিকা হয়েছিল। কর্মকর্তাদের আপত্তির মুখে ওই তালিকা বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান কমিশন এসে আবারও তালিকা তৈরি করেছে। এটিও আদৌ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে শংকা রয়েছে। এমনকি কয়েকজন কর্মকর্তা এ তালিকার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি দেয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে অনেক কর্মকর্তাকে শেষ জীবনে পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতে হবে। সংক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইসি সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ে নিয়োগ দু’ভাবে হয়েছিল। দুই ধারার কর্মকর্তাদের এক তালিকা হতে পারে না। অপরদিকে মাঠপর্যায় থেকে আসা কর্মকর্তারা বলেন, দীর্ঘদিন মাঠপর্যায়ে থেকে অর্পিত দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। অপরদিকে সচিবালয়ের কর্মকর্তারা সবসময় ঢাকা থেকেছেন এবং বাড়তি সুযোগ-সুবিধা ও পদোন্নতি নিয়েছেন। এটা এক ধরনের বৈষম্য। নতুন তালিকায় ওই বৈষম্য দূর হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। প্রতিবেদনে ইসির নিয়োগ প্রক্রিয়া ও চাকরি বিধিমালার আদ্যোপ্রান্ত তুলে ধরা হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় জ্যেষ্ঠতা তালিকা তৈরি করা হয়েছে তার বিবরণ রয়েছে প্রতিবেদনে।  

No comments:

Post a Comment