Sunday, March 29, 2015

সম্ভাবনার অর্থনীতি এখন উল্টোপথে!:কালের কন্ঠ

একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো, অন্যদিকে ভঙ্গুর অর্থনীতি; তার ওপর ইতিহাসের ভয়াবহতম দুর্ভিক্ষ। তবু ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১০ শতাংশ। ওই সময় এশিয়ার প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব ছিল দশমিক ৮৭ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সৃষ্ট রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পরের বছরই জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক (মাইনাস) ৪.৫ শতাংশে নামে। তার পরের প্রায় ৪০ বছরে রাজনীতির পথে ছিল নানা চড়
াই-উতরাই, অর্থনীতির অগ্রগতিও নিরবচ্ছিন্ন ছিল না। কখনো টানা চার-পাঁচ বছর ভালো প্রবৃদ্ধি; তারপর ঘটেছে রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ছন্দপতন। গত চার দশকের প্রবৃদ্ধির সূচকে এ রকম উত্থান-পতন দেখা যায় বারবার। অবশ্য নব্বইয়ের দশকে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা বদলের ধারা শুরুর পর থেকে অর্থনীতিতে ধারাবাহিক গতিময়তা তৈরি হয়, যার ফলে গড় প্রবৃদ্ধি একসময় ৫-এর চৌকাঠ পেরিয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৬.২ শতাংশে। তবে সে সময় এশিয়ার অর্থনীতি এগোয় আরো বেশি গতিতে। ফলে এই সময়ে এশিয়ার প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের হিস্যা নামে ০.৬১ শতাংশে, যা ১৯৭৪ সালের চেয়েও কম। অর্থাৎ অর্থনীতির দৌড়ে এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে পেরে উঠছে না বাংলাদেশ শুধুই রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে। নির্বাচনকেন্দ্রিক গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে এলেও বাংলাদেশের রাজনীতি বারবারই হোঁচট খাচ্ছে, যা অর্থনীতির গতিধারাকেও ব্যাহত করছে। ফলে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ৬ শতাংশের গণ্ডি পেরিয়ে 'সেভেন পারসেন্ট ক্লাব'-এ ঢুকতে পারছে না বাংলাদেশ। কিছুদিন আগেও যেসব বৈশ্বিক সংস্থা বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে উচ্চকণ্ঠ ছিল, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা, অস্থিরতা ও নাশকতার প্রেক্ষাপটে তাদের কেউ কেউ শুধরে নিচ্ছে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস। প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন খোদ অর্থমন্ত্রীও। 'এশিয়ার উন্নয়ন চিত্র ২০১৪' তুলে ধরার অনুষ্ঠানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর তাজুহিকো হিগোউচি গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির হার ভারতের চেয়েও বেশি হবে। এ বছর বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ শতাংশ ও ভারতের হবে ৬.৩ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছর বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭.৩ শতাংশ। কিন্তু রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় সেসব পূর্বাভাস উল্টে গেছে। হিগোউচির এ কথা বলার পেছনে যথেষ্ট যুক্তিও ছিল। কারণ আগের অর্থবছরেই বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ভারতের চেয়েও বেশি- ৬.২ শতাংশ। ওই বছর (২০১৩-১৪) ভারতের ছিল ৫.৭ শতাংশ। তখন বিশ্বে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল চার নম্বরে; চীন, নাইজেরিয়া ও ফিলিপাইনের পরেই। আর ভারতের ছিল বাংলাদেশের পেছনে, পাঁচ নম্বরে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অন্তত চার বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে, তাতে এই অর্থবছরও ভারতের চেয়ে প্রবৃদ্ধি বেশি হবে- এমনটিই হিসাবে ছিল হিগোউচির। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের ওই সংবাদ সম্মেলনের তিন মাসের মাথায় পাল্টে যেতে থাকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। গত সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে ঘিরে টানা আড়াই মাসের অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কেবল নয়া বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পথই রুদ্ধ করেনি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকেই উল্টোপথে চালিয়েছে। ফলে পুরোপুরি ঘুরে গেছে এডিবির কান্ট্রিপ্রধানের অনুমান। এখন ভারতের প্রবৃদ্ধিই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি অর্জিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। গত ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, আগামী ৩১ মার্চ শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৭.২৫ শতাংশ। অবশ্য ভারত সরকারের হিসাবে এ হার ৭.৪ শতাংশের কম হবে না। ভারতে সংবাদ সম্মেলনের মাত্র দুই দিন আগে গত ১০ মার্চ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে আইএমএফের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের উপপ্রধান রডরিগো কুবেরো বলেছেন, আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬ থেকে ৬.১ শতাংশ। দুই দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হেরফেরের কারণও বলেছে আইএমএফ। ভারতের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পেছনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের কথা বলা হয়েছে। সে দেশের সরকারের সুষ্পষ্ট নীতিগত অবস্থানও এই উচ্চ প্রবৃদ্ধির বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে আইএমএফ। আর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে বড় বাধা, তা উল্লেখ করে সংস্থাটি বলেছে, সামপ্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রাজনৈতিক এই অনিশ্চয়তা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রবৃদ্ধির জন্যও একটি বিরাট বাধা। রাজনৈতিক সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতিতে আরো বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ১৯৭০-৭১ অর্থবছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার এবং এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্ব প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এর তুলনামূলক পর্যালোচনাসহ একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে অর্থ বিভাগ। সেটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজনৈতিক অস্থিরতার বছরগুলোতে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ব্যাপক মাত্রায় কমেছে। ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৫ শতাংশ। ১৯৮১ সালের মে মাসে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পরের অর্থবছর (১৯৮০-৮১) জিডিপিতে কোনো প্রবৃদ্ধি হয়নি। ওই অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল শূন্য। আবার ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর থেকে ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিবারই বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ শতাংশ থেকে ৪.৭ শতাংশের মধ্যে। কিন্তু এরশাদবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ওঠার সময় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ২.৯ শতাংশে। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে নির্বাচনের বছর তা আরো কমে দাঁড়ায় ২.৭ শতাংশে, যদিও আগের অর্থবছর এর হার ছিল ৬.৬ শতাংশ। ওই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর থেকে ২০০০-২০০১ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ থেকে ৫.৯ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছে। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০০১-২০০২ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৪.৩ শতাংশে। তারপর পাঁচ অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেশ বেড়েছে। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ৬.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়কালে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় তা আবারও কমতে শুরু করে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ৬ শতাংশে। পরের অর্থবছরে তা আরো কমে দাঁড়ায় ৫.৭ শতাংশে। ২০০৯ সালে নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আবারও বাড়তে থাকে প্রবৃদ্ধির হার। কিন্তু গত নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতায় তা আবারও কমতে শুরু করে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে যেখানে ৬.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়, সেখানে পরের অর্থবছরেই নেমে দাঁড়ায় ৬.২ শতাংশে। বিশ্বে ৭ শতাংশ বা তারও বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশগুলোকে একত্রে 'সেভেন পারসেন্ট ক্লাব' বলে চিহ্নিত করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গবেষণা তথ্যে বলা হয়েছে, 'প্রতি ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি হলে বাংলাদেশ সেভেন পারসেন্ট ক্লাবে যোগ দিতে পারবে। এই ক্লাবের বর্তমান সদস্য তালিকায় চীন, কম্বোডিয়া, ভারত, মোজাম্বিক ও উগান্ডা রয়েছে। আফ্রিকার সবচেয়ে প্রভাবশালী গবেষণা সংস্থা সিএনবিসি আফ্রিকা গত ১২ ফেব্রুয়ারি ব্রিকস (ভারত, চীন, ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা)-এর বাইরে উদীয়মান অর্থনীতির ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের নামও রয়েছে। তবে ১০টি দেশকে দুই ভাগে ভাগ করে দ্বিতীয় ভাগে রেখেছে বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ভাগ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এসব দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ স্বস্তির নয়। ফলে তাদের অগ্রগতি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিএনবিসি আফ্রিকা বলেছে, উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে কলম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পেরু, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়িক পরিবেশ খুবই ভালো। ব্রিকস দেশগুলোর মতোই বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক পরিবেশ রয়েছে এসব দেশে। আর কেনিয়া, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়াকে পরের ভাগে রেখে সংস্থাটি বলেছে, নয়া উদীয়মান দেশ হিসেবে বিবেচিত হলেও এসব দেশে ব্যবসার পরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ, যা তাদের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পৃথিবীর অনেক দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে গেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ষাটের দশকে শ্রীলঙ্কার অবস্থা সিঙ্গাপুরের চেয়েও অনেক ভালো ছিল। অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে শ্রীলঙ্কার ধারেকাছে ছিল না সিঙ্গাপুর। কিন্তু তামিলদের সঙ্গে রাজনৈতিক সংঘাতে জড়ানোর মধ্য দিয়ে দেশটি সেই সম্ভাবনাকে হারিয়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশের বেশ ভালোই অগ্রগতি হচ্ছিল। কিন্তু তিন-চার বছর ভালো চলার পরই নির্বাচনকেন্দ্রিক অস্থিরতায় আবার তা পিছিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে আগের ধারাবাহিকতায় এখন খুব সহজেই ৭ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হতো। তাতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে পারত। এখন ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব না হলে ওই সময়ের মধ্যেও তা পারব না। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৫.৯ শতাংশের মতো হতে পারে। বাংলাদেশে জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাৎসুশিরো হোরিগুচি গত জানুয়ারি মাসে হরতাল-অবরোধের সময় ঢাকায় এসেছিলেন। টোকিওতে ফিরে গিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পরিবেশন করার জন্য একটি নিবন্ধ লিখেছেন তিনি। তাতে তিনি বলেছেন, 'বাংলাদেশে থাকা অবস্থাতেই যে ভাবনা একসময় আমার মাথায় এসেছিল তা হলো, মাতৃভাষার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত যে লাখ লাখ মানুষ জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে গত ৪৪ বছরের অগ্রগতিকে তাঁদের আত্মা কিভাবে দেখবেন। আমার ভাবতে ইচ্ছা করে যে এদের প্রায় সবাই জনতার কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অর্জিত অগ্রগতিতে সন্তোষ বোধ করলেও তাঁরা হয়তো এ রকমও ভাববেন যে এত বেশি জীবনের মূল্যের বিনিময়ে পাওয়া দেশটি হয়তো আরো এগিয়ে যেতে পারত। তাঁরা হয়তো এ রকমও ভাববেন যে সেই অর্জন অবশ্যই সম্ভব হতো, রাজনৈতিক দলগুলো যদি একে অন্যের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত না হতো; হরতাল, জীবনহানি, সম্পদ ধ্বংস, অর্থনীতির ক্ষতিসাধন ও পথচারীদের সুখী জীবন বাধাগ্রস্ত করায় জড়িত না হতো।'    

No comments:

Post a Comment