Tuesday, March 24, 2015

বিএনপি প্রার্থীরা মাঠে নেই:যুগান্তর

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও এলাকায় নেই সরকারবিরোধী বেশির ভাগ সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী। বিশেষ করে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী বা তাদের কর্মী-সমর্থকদের অধিকাংশই এলাকাছাড়া। প্রচার চালানোর জন্য তাদের কর্মী-সমর্থকদেরও এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। ১৫ দিন ধরে ঢাকা ও চট্ট্রগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাশকতাসহ নানা ধরনের মামলা
ঝুলছে সরকারবিরোধী সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের ঘাড়ে। এ কারণে তাদের অনেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিদেশে এবং নিরুদ্দেশও আছেন দু’চারজন। কেউ বা নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। অনেকেই আছেন কারাগারে। মামলার হাজিরা দিতে মাঝে-মধ্যে তাদের কাউকে আদালতের বারান্দায় দেখা যায়। হাতেগোনা দু-একজনকে দিনের আলোতে নিজ এলাকায় দেখা গেলেও রাতে থাকেন না। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মোবাইল নম্বরও অধিকাংশ সময় বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, যাতে আমাদের প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাতে পারে। নির্বাচনকালীন নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করতে পারবে না এমন নিশ্চয়তাও দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ায় তারা এলাকায় থাকতে পারছেন না। এ অবস্থায় তারা কিভাবে প্রার্থী হবেন, তাদের প্রচার চালাবে কে তার সমাধান হতে হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক সোমবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা থাকে এবং তিনি যদি জামিনে না থাকেন তাহলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’ নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সব ধরনের প্রার্থীর নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। শনিবার রাজধানীর আইডিইবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সুজনের নেতৃবৃন্দ বলেন, আগ্রহী সব দলের নেতাকর্মীরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সে সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভাব্য যেসব প্রার্থীর নামে রাজনৈতিক মামলা আছে তাদের জামিন দেয়ার অনুরোধ জানান। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পলাতক ও আত্মগোপন বা জেলখানা থেকেই নির্বাচনী কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে অনেক প্রার্থীর। তবে এতে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হবে না। নির্বাচন একদিকে ঝুলে গেলে ভোটাররাও নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে যেতে ভয় পাবেন। সেক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটানুষ্ঠান হবে না বলে তারা আশংকা প্রকাশ করেন। যুবদলের ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সহ-সভাপতি ও লালবাগ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিক আহমেদ ডলার বলেন, ‘বিগত ছয় বছর ধরেই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। বিশেষ করে গত ৫ জানুয়ারির পর এই অবস্থা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমি নিজেও ১৯টি মামলার আসামি। দলীয় কাজের প্রয়োজনে এলাকার বাইরে আছি। এ অবস্থায় দলীয় নেতাদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে হাইকমান্ডই সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি বলেন, ‘তবে বিগত উপজেলা নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে না যে, বিদ্যমান অবস্থায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরক্ষেপ হবে। সরকারি দলের বাইরে অন্য দল ও মতের প্রার্থী এবং তাদের কর্মীদের নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো ভূমিকাও দৃশ্যমান নয়। বিরোধী দলের কয়েকজন প্রার্থী ও তাদের কর্মীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ ব্যাপারে ইসি কার্যত নিশ্চুপ-নির্বিকার। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এমন সমস্যা মিটিংয়ে উত্থাপিত হলে দেখা হবে। তবে এ ব্যাপারে আমার এককভাবে বলার কিছু নেই। তবে নাম প্রকাশ না করে ইসির কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফৌজদারি মামলার ব্যাপারে তাদের করার কিছু নেই। ঢাকার প্রার্থীদের অবস্থা : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারে বা দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় এমন বেশির ভাগ নেতা এবং তাদের কর্মী এলাকায় নেই। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী ও পিন্টু মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক এবং আন্দোলনে অর্থ জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত সাঈদ হাসান সোহেল বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তার স্বজনরা জানান, সোহেল জেলখানা থেকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। এই ওয়ার্ডের আরেক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মাহবুব এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসতি গড়েছেন। বিশেষ মাধ্যমে আলাপকালে তিনি বলেন, ডজনখানেক মামলার কারণে তিনি অন্যত্র রয়েছেন। দল সিদ্ধান্ত নিলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। আমিনুল ইসলাম আমিনও আত্মগোপনে আছেন। জিসাসের কেন্দ্রীয় নেতা এবং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আমীরকে মাঝে মধ্যে এলাকায় পাওয়া যায়। দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে তিনিও নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী বলে জানান। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোশাররফ হোসেন খোকনকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। তিনি কখনও দেশে আবার কখনও আমেরিকায় থাকেন বলে জানা গেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী শফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টু নিরুদ্দেশ। পুলিশ তাকে ধরতে গিয়ে না পেয়ে তিন সহোদরকে ধরে নিয়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানায়। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইসমাইল হোসেনকে মাঝে মধ্যে এলাকায় দেখা গেলেও ৫ জানুয়ারির পর থেকে তিনি আত্মগোপনে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হাজী আলতাফ হোসেন বর্তমানে জেলখানায় আছেন। গত ৫ জানুয়ারি ভোররাতে তাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অপর প্রার্থী তাসাদ্দেক হোসেন বাবলু প্রায় ১৯টি মামলার আসামি হয়ে বর্তমানে ফেরার। তাকে ধরতে গিয়ে না পেয়ে পুলিশ তার সহোদর মোসাদ্দেক হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীদের মধ্যে আছেন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলীর বড় ভাই মীর আলী আশরাফ আজম, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জামালুর রহমান চৌধুরী, থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম বদু, লালবাগ থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সেলিম, বিএনপি নেতা গোলাম সরোয়ার শামীম। এদের এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আছেন। এদের মধ্যে অবশ্য আলমগীর কবির সেলিমকে গত সপ্তাহে এক মামলায় হাজিরায় মহানগর জজ আদালতে দেখা গেছে। ওইদিন তিনি জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে আত্মগোপনে থেকেও তিনি নির্বাচন করবেন। বাকি সবারই নিয়মিত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক কমিশনার গোলাম মোরশেদের স্ত্রী শাহিদা মোরশেদের নাম শোনা গেছে। তাকে মাঝে মধ্যে দেখা যায় বলে জানান এলাকাবাসী। অপর প্রার্থী ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসির আহমেদ, কমিশনার আনোয়ার পারভেজ বাদলকে মাঝে মধ্যে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় বলে জানান এলাকাবাসী। তবে তাদের নিয়মিত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং সন্ধ্যার পর আত্মগোপনে চলে যান। আরেক প্রার্থী যুবদলের ওয়ার্ড সভাপতি সাবাহ করিম লাকি ডজনখানেক মামলার আসামি হয়ে এখন এলাকাছাড়া। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও নগর দক্ষিণের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক হামিদুল হক সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী। মোবাইল ফোনে আলাপকালে হামিদুল হক বলেন, ‘নির্বাচন তো করব। কিন্তু পুলিশের ভয়ে আমি ও আমাদের কর্মীরা এলাকাছাড়া।’ খিলগাঁও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারুকুল ইসলাম এবং ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রস্তুতি রয়েছে বলে এলাকার কয়েকজন ভোটার জানিয়েছেন। তবে চলমান অবরোধের নাশকতার ঘটনায় কয়েকটি মামলার আসামি এই দুই নেতা। যে কারণে গ্রেফতার এড়াতে তারা গা ঢাকা দিয়ে আছেন। বিশেষ মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে হুমায়ুন কবির নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা জানান। ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ও বিএনপি নেতা এনামুল হক কাইয়ুমও ৫ মামলায় আসামি হয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন। আত্মগোপনে থাকলেও তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী আজমত আলী কনু নাশকতা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তার স্বজনরা জানান, কারাগার থেকে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য গোলাম হোসেন একাধিক মামলার আসামি হয়ে এখন আত্মগোপনে। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ১২-১৩টি মামলা রয়েছে। আমার অনেক নেতাকর্মীও এলাকাছাড়া। দূর থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান তানভীর কারাগারে রয়েছেন। তিনি কারাগার থেকে নির্বাচন করবেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। বিএনপির আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক কমিশনার শামসুল হুদা বলেন, নির্বাচন করতে হলে কর্মী প্রয়োজন। কিন্তু কর্মীরা এলাকায় ঢুকতেই পারছে না। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী হারুন অর রশিদও আত্মগোপনে রয়েছেন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও এবার সম্ভাব্য প্রার্থী মকবুল আহম্মেদ, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থী এমএ সামাদ, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থী বিএনপি নেতা মো. জাফরু কারাগারে রয়েছেন। তারা কারাগার থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার বিএনপি নেতা রফিক, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মির্জা খোকন এলাকা ছেড়ে দেশের বাইরে আছেন। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার হারুন অর রশিদ, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ও বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার লিয়াকত হোসেন এলাকাছাড়া। মহানগর উত্তরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম শাহিন। একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় তিনি এলাকা ছেড়ে গুলশানে অবস্থান করছেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান করছেন বলে তার নিকটাত্মীয় সূত্রে জানা গেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হতে পারেন বিএনপির এই ওয়ার্ডের সভাপতি রুহুল আমিন জাহাঙ্গীর। তারা তাকে প্রার্থী হিসেবেও চাচ্ছেন। কিন্তু তিনি কোথায় আছেন তা কারও জানা নেই। জাসাস কেন্দ্রীয় নেতা মুন্সি ওয়াদুদ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হওয়ায় পলাতক রয়েছেন। তিনি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের একজন প্রার্থী। এই ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনও আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী হতে পারেন বলে এলাকাবাসী জানান। তবে সুমনকে বেশকিছু দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি গুম বলেও কেউ কেউ জানান। চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে বিএনপি-জামায়াতের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী এলাকাছাড়া। চলমান আন্দোলনে এদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। গ্রেফতার ভয়ে তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। ফলে আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের সম্ভাব্য অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে শংকা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বিএনপি সমর্থিত ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম নাশকতার মামলায় জেলে রয়েছেন। একই সঙ্গে জামায়াত সমর্থিত ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জামান হেলালী বিরুদ্ধে গাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ও সরকারি কাজে বাধাদানসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমান সরকার তাকে কয়েক দফা গ্রেফতারও করে। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। একইভাবে জামায়াত সমর্থিত ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহফুজুল আলমের বিরুদ্ধে হরতাল-অবরোধে নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে হরতাল- অবরোধে নাশকতার অর্থ জোগানের অভিযোগ রয়েছে। তাকে কয়েকবার গ্রেফতার করে পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৭৭ মামলার ফাঁদে আটকা পড়েছে বিএনপি-জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মী। এসব মামলায় গ্রেফতার এড়াতে বিএনপির শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মীরাও এখন এলাকাছাড়া। ফলে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কিংবা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শংকা রয়েছে। ৬ জানুয়ারির পর থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৫শ’ নেতাকর্মী। মামলায় এজাহারভুক্ত নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে চলে পুলিশের অভিযান। মামলার ভয়ে প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করতে পারছেন না। পুলিশি হয়রানির ভয়ে রাত হলেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন তারা। এসব পরিবারের অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশ কয়েক দফা তাদেও খোঁজে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। পাহারা বসিয়ে তাদের গতিবিধির দিকে নজর রাখছে। এতে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে পরিবারের স্বজনরা। পাশাপাশি ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সম্ভাব্য ও বর্তমান কাউন্সিলরদের অনেকেরই অংশগ্রহণ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।  

No comments:

Post a Comment