Monday, April 20, 2015

ভূমধ্যসাগরে আবার নৌযানডুবি:প্রথম অালো

ভূমধ্যসাগরে আবার ইউরোপমুখী অভিবাসীবাহী নৌযানডুবির ঘটনা ঘটেছে। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের কথায়, লিবিয়ার জলসীমায় গত শনিবার মধ্যরাতে ডুবে যাওয়া যানটিতে অন্তত ৭০০ যাত্রী ছিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নৌযানটির মাত্র ২৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিশ্চিত হলে এটা হবে অন্যতম বড় অভিবাসন বিপর্যয়। খবর এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্সের। ইতালির কোস্টগার্ড ও বেঁচে যাওয়া অভিবাসীরা বলছ
েন, লিবিয়ার উপকূল থেকে ১৭ মাইল দূরে ওই নৌযানটি ডুবে যায়। ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপ এর ১৩০ মাইল দক্ষিণে। নৌযানটি ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি লোক নিয়ে ইতালির দিকে চলছিল। মধ্যরাতে এর পাশ দিয়ে একটি বড় বাণিজ্যিক জাহাজ যাওয়ার সময় ঘটে বিপত্তি। জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনসিএইচআরের মুখপাত্র কারলোত্তা সামি মনে করছেন, ডুবে যাওয়া নৌযানে অন্তত ৭০০ আরোহী ছিল। স্কাই টিজি ২৪ টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘প্রাণে বেঁচে আসা অভিবাসীদের মধ্যে একজনের কাছে ঘটনার প্রথম বিবরণ পাওয়া গেছে। তিনি জানিয়েছেন, কম করে হলেও নৌযানটিতে ৭০০ জন আরোহী ছিল। লোকজন একদিকে ঝুঁকে পড়ায় এটি ডুবে যায়। একটি জাহাজ কাছাকাছি চলে আসায় তারা মনে করেছিল, সেটি তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাবে।’ ইতালির কোস্টগার্ডের একজন মুখপাত্র জানান, ইতালীয় জাহাজ, প্রতিবেশী মাল্টার নৌবাহিনী এবং কিছু বাণিজ্যিক জাহাজ একযোগে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। সব মিলিয়ে ২০টি জাহাজ ও তিনটি হেলিকপ্টার অভিযানে যুক্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৮ জনকে জীবিত এবং ২৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমধ্যসাগর দিয়ে কয়েক দশক ধরেই এভাবে অভিবাসীরা বিপজ্জনকভাবে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টা করছে। ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়া সংকটের জের ধরে সাম্প্রতিক সময়ে এভাবে সাগর অতিক্রমের চেষ্টা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশেষ করে বছরের এই সময়ে সাগর কিছুটা শান্ত থাকায় বিভিন্ন আকারের ঝুঁকিপূর্ণ নৌযানে করে শত শত মাইল দূরের ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে অভিবাসীরা। ইউএনএইচসিআর ও আইএমওর হিসাবে চলতি বছর এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করেছে ৩৫ হাজারের বেশি অভিবাসী। এর মধ্যে সাড়ে ২৩ হাজার ইতালি ও ১২ হাজারের বেশি গ্রিসে পৌঁছেছে। আর শনিবার রাতের ঘটনা বাদেই সাগরে ডোবাসহ নানাভাবে কমবেশি ৯৫০ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ইইউ মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক: ইইউ জানিয়েছে, সর্বশেষ এ নৌযানডুবির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জোটের মন্ত্রীরা একটি জরুরি বৈঠকে বসবেন। ফ্রান্স, স্পেন, ইতালিসহ ইইউ নেতারা এ বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিলেন। পোপের আহ্বান: অভিবাসীদের রক্ষায় বিশ্বনেতাদের ‘চূড়ান্ত’ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস। সর্বশেষ নৌকাডুবির ঘটনায় ৭০০ অভিবাসীর প্রাণহানির আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে গতকাল রোববার তিনি এ আহ্বান জানান। পোপ বলেন, ‘এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বিশ্বনেতাদের চূড়ান্তভাবে এবং দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

No comments:

Post a Comment