ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৫৩১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র ৭, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ৮৭ ও সাধারণ কাউন্সিলর ৪৩৭ জন রয়েছেন। প্রত্যাহারের পর চূড়ান্তভাবে ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন ১ হাজার ১৬৭ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে মেয়র পদে ৪৮, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৪৪ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮৭৫ জন রয়েছেন। দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল একক প্রার্থী দেয়ার স
িদ্ধান্ত নেয়ার কারণেই প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন বলে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ধারণা। তিন সিটিতেই মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আজ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। ২৮ এপ্রিল এই প্রতীকেই ভোট গ্রহণ করা হবে। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। বিধান অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন ‘নির্দলীয়’ হওয়ার কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে কেউ কেউ তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দল থেকে বহিষ্কার অথবা বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে পারেন- এমন আশংকায় অনেকেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ‘চাপের মুখে’ জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। এ ছাড়া ‘জোরপূর্বক’ প্রত্যাহারের চেষ্টা করা হয়েছে- এমন অভিযোগ এনে প্রার্থিতা বহাল রাখতে অনুরোধ জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছেন কেউ কেউ। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা। যা ভোটের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশংকা দলীয় নেতাকর্মীদের। তবে অনেকে আবার স্বতঃস্ফূর্তভাবেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধেও। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে একক প্রার্থী সমর্থন দেয়ায় অন্য নেতারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গেছে। দলের হাইকমান্ড থেকে প্রার্থীদের বলা হয়েছে, এ মুহূর্তে রাজনীতিতে বিএনপি একরকম কোণঠাসা। একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে দলের পরাজয় নিশ্চিত। এমন আশংকার কথা জানিয়ে আরও বলা হয়, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেসব প্রার্থী মাঠে থাকবেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ওই খড়গ থেকে বাঁচতে বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। সরেজমিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেখা গেছে, দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়টি মনিটরিং করেছেন। প্রার্থীরা সরে দাঁড়িয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করেছেন। ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, একসঙ্গে অনেক প্রার্থীর প্রত্যাহারের আবেদন নেয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তারা তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, প্রার্থী নিজে কিংবা তার মনোনীত কেউ সশরীরে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হবে। এ নিয়ম মেনেই প্রত্যাহারপত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে রাজনৈতিক দলগুলোর এসব কর্মকাণ্ডে অনেকটাই নীরব ছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সবকিছুই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জোর করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়টি ইসি কীভাবে দেখছে- তা জানতে চাওয়া হলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘এটা মোটেও ইসির বিষয় নয়, এ বিষয়ে একক ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তার। রিটার্নিং কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলবেন। আইনেও তাই-ই বলা আছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে ৩ জনসহ মোট ২২২ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এ সিটিতে লড়ছেন মোট ৩৮১ জন প্রার্থী। মেয়র পদে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক, জাতীয় পার্টি সমর্থিত বাহাউদ্দিন আহম্মেদ বাবুল, বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরী, বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়ালসহ ১৬ জন প্রার্থী। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন- সারাহ বেগম কবরী, ববি হাজ্জাজ ও মোস্তফা কামাল আজাদী। ঢাকা উত্তরের সাধারণ ৩৬ ওয়ার্ডে ১৮২ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। বর্তমানে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ২৭৭ জন। এ সিটির সংরক্ষিত ১২ ওয়ার্ডে ৩৭ জন প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ৮৮ জনে। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। এ সিটিতে মেয়র পদে ২০ জনসহ মোট ৫০১ জন প্রার্থী রয়েছেন। মেয়র পদে ৪ জনসহ মোট ২৫৪ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা গেছে। মেয়র পদে চূড়ান্ত লড়াইয়ে আছেন ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন, বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টি সমর্থিত হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলনসহ ২০ জন। এ ছাড়া বিএনপির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা এসএম আসাদুজ্জামান রিপন ও আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যে চারজন মেয়র প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেছেন তারা হলেন- বিএনপির অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম, সাবেক কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা আলহাজ কাজী আবুল বাশার, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইমতিয়াজ আলম ও মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ৫৭টি ওয়ার্ডে ২০১ জন ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪৯ জন কাউন্সিলর পদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর পদে ৩৮৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯৫ জন রয়েছেন। চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোট ৫৫ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর মধ্যে সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের ৫৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য আছেন ১২, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬১ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১২ জন প্রার্থী। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন ব্রিফিংয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের এ তথ্য তুলে ধরেন। চসিকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির, বিএনপি সমর্থিত মোহাম্মদ মনজুর আলম ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত মো. সোলায়মান আলম শেঠ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা : ঢাকায় দলীয় চাপে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গের কষ্টে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন। সরেজমিনে দেখা গেছে, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাউন্সিলর পদে দলের ত্যাগী নেতারা সমর্থন পাননি। সুবিধাভোগীদের সমর্থন দিয়ে আমাদের প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এর পরিণাম ভালো হবে না। আবার কেউ কেউ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থানকালে মুঠোফোনে নেতাকর্মীদের বলেন, ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন নেই। কেউ কেউ এর জন্য নির্বাচনে চড়া দাম দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল গাফফার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে এসে বলেন, আমার ওয়ার্ডে দল (আওয়ামী লীগ) একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। দলীয় বাকি প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশ মেনেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আমির হোসেন মোল্লা বলেন, দলের সমর্থন চেয়েও পাইনি। দলের সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। একই সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী ও ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেদায়েত উল্ল্যাহ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাফফর হোসেন দু’জনই একসঙ্গে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার পর বলেন, দলীয় হাইকমান্ডের ইচ্ছায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ালে দলীয় পদ দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আমরা দলীয় পদেই থাকতে চাই। ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসিবুর রহমান মুকুল যুগান্তরকে বলেন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দল সমর্থিত প্রার্থী বাদে সবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার জন্য নিয়ে এসেছি। দলীয় সিদ্ধান্তে আমরা এসেছি। মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বেলা ১১টার দিকে ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে আসেন। ওই সময়ে তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহার সম্পর্কে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। এলাকাবাসী আমাকে চায়। তবুও বিভিন্ন চাপে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছি না। তবে কী ধরনের চাপে তিনি কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন তা জানাতে অস্বীকার করেছেন ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনের এই যোদ্ধা। প্রার্থিতা বজায় রাখার চেষ্টা : প্রার্থিতা প্রত্যাহারে দলীয়ভাবে চাপ প্রয়োগ ও আগেভাগে প্রত্যাহারপত্রে স্বাক্ষর নেয়ায় অনেক প্রার্থী বিচলিত হয়ে পড়েন। দল সমর্থিত প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। তারা প্রার্থিতা বজায় রাখতে বৃহস্পতিবার দিনভর দৌড়ঝাঁপ করেন। তাদের একজন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার ইসলাম (আনোয়ার)। তিনি প্রার্থিতা রক্ষায় রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলমের কাছে একটি আবেদন জমা দেন। ওই আবেদনপত্রে আনোয়ার উল্লেখ করেন, ‘আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের কিছু ব্যক্তি অপকৌশলে আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর করিয়ে নেয়, যা আমাকে পড়তে দেয়া হয়নি। আমার ধারণা ওটা একটি প্রত্যাহারপত্র হতে পারে। আমি আশংকা করছি যে, আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য তারা হয়তো আমার নামে ওই প্রত্যাহারপত্র রিটার্নিং অফিসে জমা দেবে। এতে আরও বলা হয়, আমার নামে যদি কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহারপত্র জমা দেয় তা গ্রহণ না করে আমার প্রার্থিতা বহাল রেখে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেয়া হয়।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘আমার প্রার্থিতা বাতিলের চেষ্টা করা হয়েছিল। অনেক কষ্ট করে তা বহাল রাখতে সক্ষম হয়েছি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’ বেলা সাড়ে ১১টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে রিটার্নিং অফিসারের রুমের সামনে দেখা হয় সাবেক যুবলীগ নেতা ও ডিএসসিসির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মো. আলমগীরের সঙ্গে। তিনি রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে ভেতরে ঢুকতে চাইছেন কিন্তু রিটার্নিং অফিসারের নিজস্ব কর্মকর্তা নোয়াবুল ইসলাম ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। কেন এসেছেন জানতে চাইলে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি। আমার দল থেকে আমাদের ওয়ার্ডে একজনকে কাউন্সিলর পদের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে। সে দলীয় প্রার্থী। কিন্তু আমি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করতে চাই।’ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নির্দলীয় নির্বাচন। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হল দলীয় প্রার্থী এলাকায় গুজব রটিয়েছেন আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে এসেছি। পরে সাবেক এই যুবলীগ নেতা রিটার্নিং অফিসারের সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি বলে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং অফিসকে লিখিতভাবে জানান। রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা গেছে, জোরপূর্বক বা কেউ স্বাক্ষর জাল করে কারোর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সাধারণ ডায়েরি করে রিটার্নিং কার্যালয়কে অভিযোগ দিলে এ সংক্রান্ত মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে না। ডিএসসিসির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আবু সাঈদের সঙ্গে বৃস্পতিবার দুপুরে কথা হয় ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে। তিনি বলেন, দল থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের স্বাক্ষর নিয়েছেন। দলের নেতাদের চাপে আমি স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু আমি এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই।
No comments:
Post a Comment