স্বাধীন কমিশন বা কমিটি গঠন করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদকে খুঁজে বের করতে সরকারের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের কাছে আরজি জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রীর আইনজীবী। সালাহ উদ্দিনকে খুঁজে বের করতে তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমদের করা রিট আবেদনের ওপর শুনানির সময় গতকাল বৃহস্পতিবার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মওদুদ আহমদ এ আরজি জানান। শুনানি শেষে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়
ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। গতকাল রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মওদুদ আহমদ ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশিরউল্লাহ। শুনানিতে মওদুদ আহমদ বলেন, একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজকে দিয়ে একটি কমিশন গঠন করে এ ঘটনার তদন্ত করা যায়। একটি দায়িত্বশীল সরকার চাইলেই এটা করতে পারে। তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও সত্য উদ্ঘাটিত হবে, মানুষটার (সালাহ উদ্দিন) জীবন বাঁচানো যেতে পারে। আদালত এ বিষয়ে সরকারকে নির্দেশনা দিতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলবে যে তাঁকে (সালাহ উদ্দিন) আমরা নিইনি, আর সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেটা বিশ্বাস করব, এটা হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, হি ইজ অ্যালাইভ, ভেরি মাচ অ্যালাইভ, একটা ল এনফোর্সিং এজেন্সি তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে।’ মোমতাজ উদ্দিন ফকির শুনানিতে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আজও (বৃহস্পতিবার) আমাকে জানিয়েছে যে সালাহ উদ্দিন আহমদকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই।’ তিনি রুলটি অকার্যকর করার আরজি জানান। এ সময় আদালত জানতে চান, সালাহ উদ্দিন আহমদকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী কী করছে? মোমতাজ উদ্দিন বলেন, তাঁরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। আদালত বলেন, কিন্তু কী কী চেষ্টা চালিয়েছেন, তা তো জানা গেল না। এমনও হতে পারে, তিনি নিজে আত্মগোপন করেছেন। কিন্তু সেটাও তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খুঁজে বের করতে হবে। পরে শুনানি শেষ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। এক মাস ধরে নিখোঁজ সালাহ উদ্দিনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে ১২ মার্চ হাসিনা আহমদ রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে আদালত জানতে চান, সালাহ উদ্দিনকে কেন খুঁজে বের করে ১৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হবে না। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), র্যাবের মহাপরিচালক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ আট বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আদালতের ওই আদেশ মেনে পুলিশের পাঁচটি শাখা প্রতিবেদন দেয়। এতে পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), র্যাব, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও বিশেষ শাখা (এসবি) দাবি করে, তাদের কেউ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার বা আটক করেনি। তবে তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
No comments:
Post a Comment