ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগর এডেনের আশপাশের এলাকায় গতকাল সোমবারও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। চিকিৎসক ও সামরিক সূত্রগুলো বলছে, সৌদি অরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোট বাহিনী এবং শিয়াপন্থী হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে চলা লড়াইয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জন নিহত হয়। খবর এএফপির। ১২ দিন ধরে চলা লড়াইয়ে ইয়েমেনজুড়েই খাদ্য, পানি ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে এডেনের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। বোমা হামলা ও স্থলয
ুদ্ধে এডেন বন্দর এবং সড়কপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। নগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিদেশি যুদ্ধজাহাজ থেকে গতকাল সোমবার হুতিদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এডেনের লড়াইয়ে নিহত ৫৭ জনের মধ্যে ১৭ জনই সাধারণ নাগরিক। ১০ জন প্রেসিডেন্ট আবেদরাব্বো আল মানসুর হাদির অনুগত বাহিনীর সদস্য। হামলায় অন্তত ২৬ জন বিদ্রোহী বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে বলে সামরিক সূত্রের দাবি। তবে সৌদি জোট বাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণ ইরান সমর্থক হুতিদের অগ্রযাত্রা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে। এডেনের অধিবাসীরা বলছেন, গতকালও হুতি বিদ্রোহীরা এডেনের দিকে এগোচ্ছিল। এদিকে অব্যাহত লড়াইয়ের মুখে রেডক্রস ইয়েমেনে জরুরি ত্রাণ-সহায়তা পাঠাতে পারেনি গতকাল পর্যন্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নিরাপদে ত্রাণ পাঠাতে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অনুমতি পায় রেডক্রস। গত রোববার রেডক্রসের মুখপাত্র সিতারা জাবিন জানান, ‘জোটের কাছ থেকে আমরা দুটি উড়োজাহাজ পাঠানোর অনুমতি পেয়েছি। যার একটি উপকরণ এবং অন্যটি সাহায্যকর্মীদের বহন করবে।’ গতকাল সোমবার সেগুলো দেশটির রাজধানী সানায় পৌঁছার কথা ছিল। তবে গতকাল রেডক্রস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ৪৮ টন চিকিৎসা সরঞ্জাম এখনো পৌঁছানো যায়নি মূলত উড়োজাহাজের ত্রুটির কারণে। অব্যাহত লড়াইয়ের মুখে গত রোববার হুতি বিদ্রোহীরা শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেয়। গতকাল এর জবাবে প্রেসিডেন্ট হাদির উপদেষ্টা সালেহ আল-সামাদ বলেন, ‘আমরা আলোচনায় রাজি। তবে তা হতে হবে আগ্রাসী কোনো বাহিনীর সমর্থক নয়, এমন কোনো পক্ষের মধ্যস্থতায়। আলোচনা করতে আমাদের কোনো শর্ত নেই।’ তবে সেই মধ্যস্থতাকারী পক্ষ আসলে কারা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি সালেহ আল-সামাদ। গতকাল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ বলেন, সৌদি আরব ইয়েমেনের চলমান যুদ্ধে পাকিস্তানের কাছে যুদ্ধ জাহাজ, উড়োজাহাজ ও স্থলসেনা চেয়েছে। গতকাল পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়া নিয়ে বিশেষ অধিবেশনের আগে এ কথা জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা জন্য আগামীকাল বুধবার পাকিস্তান আসছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অভিযানের কঠোর সমালোচনা করে আসছে ইরান। সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কের পরও পাকিস্তান যুদ্ধে যোগ দিতে রাজি হয়নি। দেশটি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলে আসছে।
No comments:
Post a Comment