Friday, May 8, 2015

কেউ নিরঙ্কুশ জয় না পেলে...:প্রথম অালো

ভোট গ্রহণ শেষ। আজ শুক্রবারের মধ্যেই জানা যাবে ফল। তার আগে বেশির ভাগ মতামত জরিপের ফলেরই ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, কোনো দলই এবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত তাই হলে দলগুলোর মধ্যে দর-কষাকষি তুঙ্গে উঠবে। তখন নানা দৃশ্যপটের অবতারণা হবে। ভোটের ফল প্রকাশের পরপরই শুরু হয়ে যেতে পারে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা। নবনির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যরা আগামী সোমবার থেকেই লন্ডনের পথ ধরতে পারেন। এদিনই লেবার পার্টি
তাদের পার্লামেন্টারি দলের প্রথম বৈঠক করার পরিকল্পনা করছে। এর বাইরে বেশির ভাগ বিষয়ই অনিশ্চিত থাকবে। তবে নির্বাচিত এমপিরা ১৮ মে আনুষ্ঠানিকভাবে অধিবেশনে বসবেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২৭ মে পার্লামেন্টে তাঁর ঐতিহ্যগত ভাষণ দেবেন। এ ভাষণের বক্তব্য সাধারণত লিখে থাকে বিজয়ী পক্ষ। মে মাসের শেষের দিকে বা জুনের প্রথম সপ্তাহে রানির ভাষণের ওপর পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে, যেটাকে সাধারণত নতুন সরকারের ওপর আস্থা ভোট হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। বেশির ভাগ এমপি রানির নীতি-সংক্রান্ত ওই ভাষণের বিরুদ্ধে ভোট দিলে বিরোধী পক্ষ আরেকটি ভোটের জন্য দুই সপ্তাহ সময় পাবে। সেই ভোটেও বেশির ভাগ এমপি বিরুদ্ধে গেলে তখন আরেকটি নির্বাচন অবধারিত হয়ে উঠবে। তবে যুক্তরাজ্যে এর নজির নেই। অভাবনীয় এসব বিষয়ও বিবেচনায় নিয়ে মতামত জরিপকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনোত্তর সম্ভাব্য চারটি দৃশ্যকল্প ঠিক করেছে: ১. কনজারভেটিভ-লিবারেল ডেমোক্র্যাট জোট: শেষ মুহূর্তে জ্বলে উঠতে পারে কনজারভেটিভরা। ধারণার চেয়ে ভালো করতে পারে প্রচণ্ড চাপে থাকা লিবারেল ডেমোক্র্যাটরাও। তখন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বে বর্তমান সরকারই আবার ক্ষমতায় যেতে পারে। সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩২৬ আসন না জোগাড় হলে কনজারভেটিভরা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিকে জোটে ভেড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। ২. লেবার-লিবারেল ডেমোক্র্যাট জোট: সম্ভাবনা কম হলেও এটি হওয়া অসম্ভব নয়। বিশেষ করে লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা নিক ক্লেগ নিজের আসনে হারলে এমন সম্ভাবনা জোরালো হতে পারে। ক্লেগকে কনজারভেটিভপন্থী মনে করা হলেও, তাঁর দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং অনেক সাধারণ সদস্য মধ্য বামপন্থী লেবার নেতা এড মিলিব্যান্ডের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তাঁরা মিলিব্যান্ডের পক্ষ নিলে তিনিই হতে পারেন পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের লেবার পার্টির মতো ছোট বামপন্থী দলগুলোকেও তখন এই জোটের আওতাভুক্ত করা হতে পারে। ৩. লেবার সংখ্যালঘু সরকার: আলোচিত স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) সঙ্গে নির্বাচন-পরবর্তী কোনো ‘চুক্তি’র সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন মিলিব্যান্ড। যদিও মধ্য-বামপন্থী এই দলটিই হতে পারে মিলিব্যান্ডের সহজাত মিত্র, তার পরও তিনি তাদের সঙ্গে জোট করার পক্ষপাতী নন। কারণ একটাই: এসএনপি স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে। আর এর ঘোর বিরোধী লেবার নেতা মিলিব্যান্ড। অবশ্য এসএনপি ইচ্ছা করলে একটি লেবার সংখ্যালঘু সরকারের পক্ষে ভোট দিতে পারে। সেই পথ খোলা রেখেছেন মিলিব্যান্ড। কনজারভেটিভরা এর সুযোগ নিয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলছে, তার অর্থ, লেবাররা এসএনপিকে ‘খেসারত’ দিতে বাধ্য থাকবে। ৪. কনজারভেটিভ সংখ্যালঘু সরকার: দেখা গেল, কনজারভেটিভরা অধিকাংশ আসন পেল, কিন্তু সহজে বহুদলীয় জোট গঠন করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তারা ‘একলা চলো’ নীতি অনুসরণ করতে পারে। এটাই হতে পারে ক্যামেরনের জন্য অধিকতর নমনীয় বিকল্প। তবে কনজারভেটিভ বা লেবার যারাই সংখ্যালঘু সরকার গঠন করুক না কেন, তা কত দিন স্থায়ী হবে নিশ্চিত নয়। এমনকি কোনো আনুষ্ঠানিক সমঝোতার মাধ্যমে এমন সরকার গঠিত হলেও স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে। কারণ, বিরোধী দলে কনজারভেটিভ বা লেবার যারাই থাকবে, তারা রাজনীতির জল ঘোলা করতে মরিয়া হয়ে উঠবে। সূত্র: এএফপি। যুক্তরাজ্য: এক দেশ চার জাতি দাপ্তরিক নাম ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট ব্রিটেন অ্যান্ড নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এই সদস্যদেশ কার্যত চারটি ‘দেশের’ সমন্বয়ে গঠিত: ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড আয়তন: ২ লাখ ৪৩ হাজার বর্গকিলোমিটার (৯৩ হাজার ৮০০ বর্গমাইল) জনসংখ্যা: ৬ কোটি ৪১ লাখ (২০১৩ সালের হিসাব) রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান: সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। দুই কক্ষের পার্লামেন্ট। নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের সদস্যরা নির্বাচিত আর উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যরা মনোনীত

No comments:

Post a Comment