Friday, May 22, 2015

তৃণমূল শেষ না করেই কেন্দ্রীয় সম্মেলন আওয়ামী লীগের:যুগান্তর

আগামী ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, তৃণমূলের সম্মেলন শেষ করে নির্ধারিত সময়েই কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তিন বছর মেয়াদের এই কমিটি গত আড়াই বছরে সম্মেলন সম্পন্ন করতে পেরেছে ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৪টির। এ অবস্থায় আগামী ছয় মাসে বাকি ২৯টি জেলার সম্মেলন শেষ করে নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন করা নিয়ে আশ
ংকা থেকেই যাচ্ছে। এদিকে আড়াই বছর পরেও দলটির প্রেসিডিয়ামের তিনটি সদস্য পদ ফাঁকা রয়ে গেছে। সম্মেলনের কয়েকদিন পরেই প্রেসিডিয়ামের দুটি সদস্য পদসহ কয়েকটি পদ ফাঁকা রেখেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। কিন্তু এর মধ্যে সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য জোহরা তাজউদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন এবং পরবর্তীতে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দল থেকে বহিষ্কৃত হন।    ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ সম্মেলন সম্পন্ন হয়। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ তিন বছর। সে হিসাবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে এর মেয়াদ। ৬ মে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথের দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনানুষ্ঠানিক আলাপে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আসন্ন ডিসেম্বরেই কেন্দ্রীয় সংসদের সম্মেলন করতে চান তারা। আর তৃণমূলের (জেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড) সম্মেলন শেষ করেই তা করা হবে। সে লক্ষ্যেই দ্রুত গতিতে জেলাগুলোর সম্মেলন হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অবশ্য এর আগে একাধিকবার তিনি গণমাধ্যমের সামনে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যেও তৃণমূল সম্মেলন শেষ করে নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্নের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রথা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয় ওয়ার্ড পর্যায় থেকে। শহরে ওয়ার্ড শেষ করে থানা, আবার গ্রামাঞ্চলে ওয়ার্ড শেষ করে ইউনিয়ন তারপর থানার সম্মেলন হয়। একটি জেলার সবগুলো থানার সম্মেলন সম্পন্ন হওয়ার পরই জেলা সম্মেলন করা হয়। আর সাতটি মহানগরের কমিটির মর্যাদাও জেলা কমিটির সমমানের। আওয়ামী লীগের দফতর সূত্রে জানা যায়, বুধবার সর্বশেষ জামালপুর জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন সম্পন্ন জেলা হিসেবে এটি ৪৪তম। এখনও বাকি ২৯ জেলার সম্মেলন। হাতে সময় আছে মাত্র সাড়ে ছয় মাস। নিকট ভবিষ্যতে কোনো জেলার সম্মেলনের তারিখও নির্ধারিত হয়নি। সে বিবেচনায় যেখানে আড়াই বছরে ৪৪টি জেলার সম্মেলন হয়েছে, বাকি ছয় মাসে ২৯টি জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করা অনেকটাই দুরূহ বলে মনে করছেন সচেতন মহল। আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তৃণমূল সম্মেলন শেষ করেই কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন হবে বলে যুগান্তরকে জানান। অবশ্য খালিদ মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, তৃণমূলের সম্মেলন শেষ না হলেও কেন্দ্রীয় সম্মেলন করা যায়। দলের গঠনতন্ত্রে এ প্রসঙ্গে যে নির্দেশনা দেয়া আছে সে আলোকেই দল চলবে, কেননা সংগঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। যদিও নির্ধারিত সময়েই জেলা সম্মেলন শেষ হওয়ার বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, দ্রুতগতিতে জেলা সম্মেলন চলছে। যেগুলো এখনও বাকি আছে সেগুলোর অধিকাংশ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত। আগামী ৩-৪ মাসের মধ্যেই বাকি সবগুলো জেলার সম্মেলন শেষ হবে। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলে সম্মেলন শেষ করেই কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দলের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আগামী-ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে উল্লেখ করে যুগান্তরকে বলেন, এখনও হাতে যে সময় আছে তাতে খুব সহজে এবং অনায়াসেই তৃণমূল সম্মেলন শেষ করে কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন করা যাবে। কেননা যে ৪৪টি জেলার সম্মেলন হয়েছে, আসলে সেগুলো হয়েছে গত ছয় মাসে। ইতিমধ্যে সবগুলো জেলা সম্মেলন শেষ হতে পারত দাবি করে তিনি বলেন, সাধারণত, অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত যে সময়টায় সম্মেলনের কাজ চলে সে সময়টাতে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির কারণে সম্মেলনের কাজ অনেকটা বিঘ্নিত হয়েছে। কিন্তু গত ছয় মাসে যে গতিতে সম্মেলন হয়েছে তাতে বাকি জেলাগুলোর সম্মেলন ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করে নির্ধারিত সময়ে অনায়াসেই কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে।  

No comments:

Post a Comment