Tuesday, July 8, 2014

মোদির বড় চ্যালেঞ্জ জনমুখী বাজেট:প্রথম অালো

নরেন্দ্র মোদি যেদিন থেকে জিতব জিতব আশা জাগিয়ে ভোটের প্রচারে নামেন, সেই দিন থেকেই ভারতের শেয়ারবাজার ও মানি মার্কেট চনমনে।ডলারের তুলনায় রুপিও ক্রমশ দামি হয়ে উঠেছে। সন্দেহ নেই, দেশের বাজার, দেশের শিল্প মহল মোদি সরকারের ওপর ভরসা রাখছে। আগামী বৃহস্পতিবার মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যখন প্রথম বাজেট পেশ করবেন, এই ভরসার প্রতিফলন কতটা হয়, তা দেখার জন্য সব মহল মুখিয়ে আছে। গতকাল সোমবার লোকসভায়
সেই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। শিল্প মহলের প্রত্যাশা প্রবৃদ্ধিমুখী বাজেট, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা মূল্যবৃদ্ধির ছোবল থেকে সুরাহা, প্রধানমন্ত্রী নিজে নিজের কাছে গরিবদের দুর্দশা ঘোচাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নর্থ ব্লকের বিভিন্ন সূত্রের খবর, বাজেট তৈরির সময় অর্থমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিতে বলেছেন। প্রথমত, পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে বাজার ও শিল্প মহলে যে ফুরফুরে ভাব দেখা দিয়েছে, তা উবে যেতে দেওয়া চলবে না। এ জন্য প্রবৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, আগের সরকারের ‘নীতিপঙ্গু’ যে অবস্থার সমালোচনা বিজেপি এত দিন করেছে, বাজেটে তার প্রতিকারে যা কিছু করা প্রয়োজন, তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন বা রেলওয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প হস্তান্তরের ওপর। কিন্তু শিল্প ও বাজারবান্ধব বাজেটকে কীভাবে জনমুখী করা যায়, সেটাই হলো বড় প্রশ্ন। মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেছে, ‘আচ্ছে দিন আনেবালে হ্যায়’ স্লোগানে ভর দিয়ে। গতকাল লোকসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে মূল্যবৃদ্ধির দরুন সরকারকে সেই ‘আচ্ছে দিন’ নিয়ে যথেচ্ছ কটাক্ষ শুনতে হলো। সে নয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। কিন্তু ঘটনা হলো, আলু-পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘুম কেড়েছে মোদি সরকারের। মূল্যবৃদ্ধি রুখতে সরকারের বাজেট প্রস্তাব যা-ই হোক না কেন, বাস্তবে তার প্রতিফলন কতটা হবে, সেটা বড় আগ্রহ। সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ পাঁচ লাখ রুপি পর্যন্ত আয়করে ছাড়ের দাবি জানিয়েছে। এক ধাক্কায় আড়াই গুণ ছাড় দেওয়া সম্ভব কি না, সেটা যেমন বড় প্রশ্ন, তেমনি এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই, মধ্যবিত্তের জন্য আয়করে ছাড় না দিলে শহুরে শিক্ষিত জনতা শুধু আশাহতই হবে না, জনমতও সরকারের বিরুদ্ধে যাবে। আয়কর বা প্রত্যক্ষ করের সঙ্গে গোটা কর কাঠামো আরও স্বচ্ছ ও যুক্তিপূর্ণ করা হবে। একই সঙ্গে নজর দেওয়া হবে বিদেশি সংস্থাগুলোর আস্থা অর্জনে। ইউপিএর আমলে ভোডাফোনের সঙ্গে কর-বিরোধের মতো ঘটনা যাতে এই আমলে না ঘটে, সেই বার্তা অরুণ জেটলির ভাষণে থাকবে। নর্থ ব্লকের এক সূত্রের কথায়, বাজেটে মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলা সরকারকে করতেই হবে। পরিস্থিতি কঠিন। ভালো দিন এত তাড়াতাড়ি হয়তো আসবে না, কিন্তু মানুষের ধারণা অনুযায়ী খারাপ দিন যেন না আসে।

No comments:

Post a Comment