Monday, September 8, 2014

ইবি ছাত্রলীগ নেতা এখন অস্ত্র প্রশিক্ষক:নয়াদিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সজিবুল ইসলাম সজিব এবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে আলোচনায় এসেছেন। এই নেতার বিরুদ্ধে ইতঃপূর্বে ক্যাম্পাসে অস্ত্রবাজি, আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ থাকলেও এবার এর চেয়েও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সিনেমার শুটিং স্টাইলে এই ছাত্রলীগ নেতাকে আওয়ামীপন্থী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও বিসিএস ক্যাডারকে আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে দেখা গেছে। আগ্ন
েয়াস্ত্র প্রশিক্ষণের কছু ছবি সাংবাদিকরা পেয়েছেন। ছবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের এক আওয়ামীপন্থী শিক্ষক এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের এক সহসভাপতি ও বিসিএস ক্যাডারকে আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গেছে। সূত্র মতে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকার নির্জন ঝোপঝাড়, বাগান, ক্ষেত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচীর সংলগ্ন মফিজ লেকের নির্জন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ নেতা সজিবের নিয়মিত অস্ত্র প্রশিক্ষণ চলে। ছাত্রলীগের এই নেতার অস্ত্র প্রশিক্ষণের বেশ কিছু ছবিতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ নেতা সজিবের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক শিক্ষক মতিয়ার রহমান। তিনি বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র এই ছাত্রলীগ নেতার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। এ ধরনের আরো একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে সজিবের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সফলতার সাথে নাইন এম এম পিস্তল থেকে গুলি ছুড়ছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সাবেক শিক্ষক আজিজুর রহমান মামুন। বর্তমানে তিনি বিসিএস ক্যাডার (ইকোনমি) পদে কর্মরত রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ থেকে পাস করা এই সাবেক ছাত্রনেতার বাড়ি গাজীপুর জেলায়। তিনি ৩২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রশিক্ষণরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। ছবিগুলোতে সজিবের অস্ত্র বাহক ছাত্রলীগ কর্মী সালাউদ্দিনকেও দেখা গেছে। তিনি ইবির আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।  আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণের ছবির বিষয়ে জানতে চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক মতিয়ার রহমানের নিকট ফোন করলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কিসের ছবি? পরে ছবির বর্ণনা শুনার পর বলেন, সেটি তো খেলনা অস্ত্র। ছোট বাচ্চারা এ ধরনের পিস্তল নিয়ে খেলাধুলা করে। আমিও সজিবের সাথে খেলনা পিস্তল দেখছিলাম। তখন আমার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো সাতজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।’  তবে বিসিএস কর্মকর্তা আজিজুল হক মামুনের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি বর্তমানে সাভার লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণরত রয়েছেন। অস্ত্র প্রশিক্ষক ছাত্রলীগ নেতা অবশ্য অভিযোগের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, সাংবাদিকদের কাছে যদি অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়ার ছবি থাকে তা হলে সে ব্যাপারে জানতে চাওয়ার কী আছে? জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা সজিব ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে টিন দিয়ে ঘেরা নির্মাণাধীন দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের অভ্যন্তরে এবং মেডিক্যাল সেন্টারের পেছনে লেকের ঝোপঝাড়ে প্রায়ই অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। কাস চলাকালে কিংবা বিকেলের নির্জন সময়গুলোকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়টি ক্যাম্পাসে ওপেন সিক্রেট বলে জানা গেছে। প্রায়ই এসব স্থান থেকে গুলির শব্দ কানে ভেসে আসে বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

No comments:

Post a Comment