Wednesday, October 22, 2014

প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কোচিং সেন্টার বন্ধ:প্রথম অালো

এমবিবিএস ও বিডিএসে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের গুজবের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার থেকে ২৪ অক্টোবর শুক্রবার পর্যন্ত মেডিকেলে ভর্তি কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। গত সোমবার মন্ত্রণালয় এ-সম্পর্কিত একটি নির্দেশ জারি করে। আগামী শুক্রবার মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ওঠে। স্বাস্থ্য মন্ত
্রণালয় থেকে জারি হওয়া ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘অভিযোগ আছে’ কোচিং সেন্টার থেকে বা অনলাইনে হুবহু প্রশ্ন সরবরাহের কথা বলে একটি চক্র শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকাপয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই ভর্তি পরীক্ষায় স্বচ্ছতা আনতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল। চিঠিটি স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র্যাবের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল হাসান বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁসের গুজব তাঁদের কানেও এসেছে। র্যাব খোঁজখবর রাখছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শিক্ষা বিভাগের পরিচালক এ বি এম আবদুল হান্নান বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁসের কোনো খবর নেই। তিনি শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে গতকাল দিনভর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছিল। ঢাকার বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার প্রশ্নপত্র আগেভাগে পাইয়ে দেওয়ার কথা বলছে। একই গুজব শোনা গেছে রাজশাহীতেও। নগরের রাজারহাতায় এক অভিভাবক একটি ফটোস্ট্যাট মেশিনের দোকানে প্রশ্নের ফটোকপির বিনিময়ে পাঁচ-সাত লাখ টাকার চেক দিতে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। ওই অভিভাবকের মেয়ে এ বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। রংপুর থেকে এক চিকিৎসক জানান, তাঁর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার্থী ভাইকে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে ৯০টি প্রশ্ন সরবরাহের কথা জানিয়েছে একটি চক্র। তারা পরীক্ষার আগের দিন শুধু প্রশ্নই সরবরাহ করবে না, উত্তরও মুখস্থ করিয়ে দেবে বলে কথা দিয়েছে। পরীক্ষা চলার সময় ওই চক্র ছাত্রের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র ও সনদ তাদের কাছে জমা রাখার শর্ত দিয়েছে। তবে ভর্তির পর টাকা নেবে এই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। দিনভর এসব গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরীক্ষার আগে খোঁজখবর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষার দিন হলে যেন কেউ কোনো মুঠোফোন, ঘড়ি, ক্যালকুলেটরসহ কোনো যন্ত্রপাতি নিয়ে ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার কথা বলেছে। প্রায় প্রতিবছরই এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর ছাপাখানার কর্মচারী শাহেনশাহ ঠাকুর ছাপাখানা থেকে প্রশ্ন নিয়ে বেরোনোর সময় আটক হন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি জানান, একটি কোচিং সেন্টারকে দেওয়ার জন্য তিনি প্রশ্ন চুরি করেছিলেন।

No comments:

Post a Comment