Tuesday, December 30, 2014

গ্যাসের চাপ ক্রমেই কমছে তিতাস ও নরসিংদী কূপে:নয়াদিগন্ত

গ্যাসের চাহিদা দেশে যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে ততই কমে আসছে গ্যাস উৎপাদিত কূপগুলোর সরবরাহের চাপ। জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ ঠিক রাখতে হলে পুরনো কূপগুলোর সরবরাহ পাইপলাইনের স্বাভাবিক চাপ এক হাজার পিএসআইজি ধরে রাখতে কম্প্রেসার স্থাপন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিতাস লোকেশন সি ও নরসিংদী ফিল্ডে ওয়েলহেড কম্প্রেসার স্থাপন না হলে আগামী পাঁচ থেকে সাত বছর পর জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে গ্যাস ফিল্ডস কো
ম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) সূত্র জানিয়েছে।  সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এখন জাপান ভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইকার ৭২৯ কোটি টাকা ঋণ সহায়তায় সরকার গ্যাসের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে কম্প্রেসার স্থাপনের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তিতাস লোকেশন-সি ও নরসিংদী ফিল্ডে অবস্থিত কূপগুলোর ওয়েল হেড চাপ প্রতিবছর হ্রাস পাচ্ছে। এ জন্য স্থান দু’টিতে দ্রুত কম্প্রেসার স্থাপন না করলে কূপগুলোতে উৎপাদিত গ্যাস এক হাজার পিএসআইজি চাপে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশন-সি ও নরসিংদী গ্যাসফিল্ডের ওয়েলহেড চাপ (উৎপাদন) বৃদ্ধি করতেই কম্প্রেসার স্থাপন করা হবে। চাপ বাড়াতে না পারলে তিতাস লোকেশন সিতে আগামী তিন থেকে চার বছর পর এবং নরসিংদী গ্যাস ফিল্ডে পাঁচ থেকে সাত বছর পরে উৎপাদিত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।  এ প্রকল্পের মাধ্যমে তিতাস লোকেশন-সিতে অবস্থিত কূপগুলো থেকে দৈনিক ১৪ কোটি ঘনফুট ও নরসিংদী ফিল্ড থেকে তিন কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ তিতাস ফিল্ডের লোকেশন সিতে প্রতিটি দৈনিক ৯ কোটি ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি এবং নরসিংদী ফিল্ডে প্রতিটি দৈনিক এক কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন আরো তিনটিসহ মোট ছয়টি কম্প্রেসার স্থাপন করতে হবে।  প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেশে দৈনিক মোট গ্যাসের চাহিদা দুই হাজার ৭০০ কোটি ঘনফুট। এর বিপরীতে এখন গড়ে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহকৃত এ গ্যাস দেশের মোট জ্বালানি চাহিদার ৭৫ শতাংশ পূরণ করছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪২ শতাংশ, শিল্পকারখানায় ২০ শতাংশ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১৬ শতাংশ, বাসাবাড়িতে ১২ শতাংশ, সার উৎপাদনে ৭ শতাংশ, সিএনজিতে ৫ শতাংশ ও বাণিজ্যিকভাবে ২ শতাংশ গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে। হিসাব অনুযায়ী এই বিভাজনে ঠিকমতো গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে না।  কম্প্রেসার স্থাপনের প্রস্তাবনায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিজিএফসিএল বলছে, চলতি অর্থবছর প্রকল্পটির কাজ শুরু করা গেলেও আর কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হলে আগামী ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য গত ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকারের সাথে জাইকার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।  পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট উইং সূত্র জানায়, তিতাস গ্যাসফিল্পের লোকেশন-সি ও নরসিংদী গ্যাসফিল্ডের ওয়েলহেড চাপ বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সরবরাহের পাইপলাইনে স্বাভাবিক চাপ ধরে রাখতে ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্পটি। এই দু’টি গ্যাস ফিল্ড হতে নির্ধারিত চাপে জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখার ফলে বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভবপর হবে।

No comments:

Post a Comment