জ্জামান খান কামালও গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, হামলা করেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। সেখানে ছাত্রলীগ ছিল না। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওরা বিএনপির কেউ নয়। ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। সব মিলিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে ওই সশস্ত্র ‘পেটোয়া বাহিনীর’ সদস্যদের নিয়ে। তাহলে ওরা কারা- সে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশ্য রাস্তায় দিনদুপুরে শত শত মানুষের সামনে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী সশস্ত্র মহড়ায় অংশ নেওয়া যুবকরা বকশীবাজার, পলাশীসহ আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত মুখ। আর পুলিশের অনেক কর্মকর্তার সঙ্গেও রয়েছে তাদের সদ্ভাব। কিন্তু তাদের পরিচয় কেউ প্রকাশ করতে রাজি নয়। বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বুধবারের ঘটনায় অস্ত্র হাতে যে যুবকের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা। তাঁর আশপাশে অবস্থান নেওয়া যুবকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা-কর্মী। এর বাইরেও যেসব অস্ত্রধারী ক্যামেরার লেন্স এড়িয়ে থাকতে পেরেছে, অথচ তাদের সদম্ভ উপস্থিতি নজর কেড়েছে অনেকের, তাদের বেশির ভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের পদধারী ছাত্রলীগ নেতা। আর লাঠি হাতে বেদম পেটানো ও রাস্তায় প্রতিপক্ষকে ফেলে পা দিয়ে মাড়ানোর কাজে নেতৃত্বদানকারীরাও ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী। অথচ সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের। সেখানে যুবলীগ-ছাত্রলীগসংশ্লিষ্ট কারো নাম নেই। আর প্রকাশিত ছবি কাদের তা পুলিশ কর্মকর্তারাও জানেন না বলে দাবি করেছেন। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, বিএনপির অঙ্গসংগঠনের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেনি। বরং সকাল থেকেই তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে ছাত্রলীগ প্রতিহত করেছে মাত্র। গণমাধ্যমে যে অস্ত্রধারীর ছবি বেরিয়েছে তিনি ছাত্রলীগের কেউ নন বলেও দাবি করেন ছাত্রলীগ সভাপতি। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবি পুলিশ বিশ্লেষণ করছে। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজও পর্যালোচনা চলছে। মামলা তদন্তের পাশাপাশি পুলিশ অস্ত্রধারী ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করার কাজ করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে গোয়েন্দা পুলিশ। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বকশীবাজারে পিস্তল হাতে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে যে যুবককে তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা ফয়জুল ইসলাম ফয়েজ। তাঁর বাড়ি ফেনীতে। থাকেন ঢাকা কলেজের সাউথ হলের ৩২৩ নম্বর কক্ষে। রসায়ন বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করলেও ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজনেই তিনি এখনো হলে অবস্থান করেন বলে ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছে। ফারুক হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ফয়জুল ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক। যদিও এ কমিটি স্থগিত রয়েছে। তিনি শতাধিক কর্মীসহ বকশীবাজারে মহড়ায় অংশ নেন। সশস্ত্র হামলায় নেতৃত্বদানের যে ছবি গণমাধ্যমে ছাপা হয়েছে তাতে কালো সোয়েটার পরা অবস্থায় দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র মিজানুর রহমান পিকুলকে। তিনি এসএম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ছাত্রলীগের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার সভাপতি রিফাত জামান, কেন্দ্রীয় গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক শাহাবুদ্দিন চঞ্চল, কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক কে এম তান্নুসহ পরিচিত অনেক ছাত্রলীগ নেতাকেই বেপরোয়া ভূমিকায় দেখা গেছে ওই সংঘর্ষের সময়। তবে পদধারী ছাত্রলীগ নেতাদের পাশাপাশি হামলার সময় অনেক পরিচিত কর্মীর দেখা মিলেছে, যাদের কারো হাতে অস্ত্র, কারো হাতে লাঠি-রড ছিল। গতকাল অবশ্য ছাত্রলীগের ওই নেতাদের প্রকাশ্যে দেখা মেলেনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও মারমুখী হননি, এমন নেতারাই গতকাল ‘ছাত্রলীগ জড়িত নয়’ বলে দাবি করে বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য দিয়েছেন, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দোষ দিলেন বিএনপিকে : বকশীবাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের সশস্ত্র উপস্থিতি ও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসকে দেখতে যান। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপিই অরাজকতা করেছে, তাদের অভ্যাস এমনই। হাসপাতালের মতো নিরাপদ স্থানেও তারা হামলা করেছে। এমপিদের মধ্যে অত্যন্ত ভদ্র ছবি বিশ্বাসকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোথায় হামলা করেছে? বিএনপিই তো একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এমপিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হলেও পুলিশ তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। আদালতের মতো নিরাপদ স্থানে হাজার হাজার নেতা-কর্মী আসার কী প্রয়োজন ছিল? তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিচারকাজ ভণ্ডুল করা।’ হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা পুরোপুরি নাকচ করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, এ-সংক্রান্ত মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Friday, December 26, 2014
ওরা সবাই ছাত্রলীগ!:কালের কন্ঠ
জ্জামান খান কামালও গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, হামলা করেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। সেখানে ছাত্রলীগ ছিল না। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওরা বিএনপির কেউ নয়। ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। সব মিলিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে ওই সশস্ত্র ‘পেটোয়া বাহিনীর’ সদস্যদের নিয়ে। তাহলে ওরা কারা- সে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশ্য রাস্তায় দিনদুপুরে শত শত মানুষের সামনে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী সশস্ত্র মহড়ায় অংশ নেওয়া যুবকরা বকশীবাজার, পলাশীসহ আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত মুখ। আর পুলিশের অনেক কর্মকর্তার সঙ্গেও রয়েছে তাদের সদ্ভাব। কিন্তু তাদের পরিচয় কেউ প্রকাশ করতে রাজি নয়। বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বুধবারের ঘটনায় অস্ত্র হাতে যে যুবকের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা। তাঁর আশপাশে অবস্থান নেওয়া যুবকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা-কর্মী। এর বাইরেও যেসব অস্ত্রধারী ক্যামেরার লেন্স এড়িয়ে থাকতে পেরেছে, অথচ তাদের সদম্ভ উপস্থিতি নজর কেড়েছে অনেকের, তাদের বেশির ভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের পদধারী ছাত্রলীগ নেতা। আর লাঠি হাতে বেদম পেটানো ও রাস্তায় প্রতিপক্ষকে ফেলে পা দিয়ে মাড়ানোর কাজে নেতৃত্বদানকারীরাও ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী। অথচ সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের। সেখানে যুবলীগ-ছাত্রলীগসংশ্লিষ্ট কারো নাম নেই। আর প্রকাশিত ছবি কাদের তা পুলিশ কর্মকর্তারাও জানেন না বলে দাবি করেছেন। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, বিএনপির অঙ্গসংগঠনের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেনি। বরং সকাল থেকেই তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে ছাত্রলীগ প্রতিহত করেছে মাত্র। গণমাধ্যমে যে অস্ত্রধারীর ছবি বেরিয়েছে তিনি ছাত্রলীগের কেউ নন বলেও দাবি করেন ছাত্রলীগ সভাপতি। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবি পুলিশ বিশ্লেষণ করছে। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজও পর্যালোচনা চলছে। মামলা তদন্তের পাশাপাশি পুলিশ অস্ত্রধারী ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করার কাজ করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে গোয়েন্দা পুলিশ। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বকশীবাজারে পিস্তল হাতে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে যে যুবককে তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা ফয়জুল ইসলাম ফয়েজ। তাঁর বাড়ি ফেনীতে। থাকেন ঢাকা কলেজের সাউথ হলের ৩২৩ নম্বর কক্ষে। রসায়ন বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করলেও ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজনেই তিনি এখনো হলে অবস্থান করেন বলে ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছে। ফারুক হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ফয়জুল ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক। যদিও এ কমিটি স্থগিত রয়েছে। তিনি শতাধিক কর্মীসহ বকশীবাজারে মহড়ায় অংশ নেন। সশস্ত্র হামলায় নেতৃত্বদানের যে ছবি গণমাধ্যমে ছাপা হয়েছে তাতে কালো সোয়েটার পরা অবস্থায় দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র মিজানুর রহমান পিকুলকে। তিনি এসএম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ছাত্রলীগের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার সভাপতি রিফাত জামান, কেন্দ্রীয় গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক শাহাবুদ্দিন চঞ্চল, কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক কে এম তান্নুসহ পরিচিত অনেক ছাত্রলীগ নেতাকেই বেপরোয়া ভূমিকায় দেখা গেছে ওই সংঘর্ষের সময়। তবে পদধারী ছাত্রলীগ নেতাদের পাশাপাশি হামলার সময় অনেক পরিচিত কর্মীর দেখা মিলেছে, যাদের কারো হাতে অস্ত্র, কারো হাতে লাঠি-রড ছিল। গতকাল অবশ্য ছাত্রলীগের ওই নেতাদের প্রকাশ্যে দেখা মেলেনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও মারমুখী হননি, এমন নেতারাই গতকাল ‘ছাত্রলীগ জড়িত নয়’ বলে দাবি করে বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য দিয়েছেন, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দোষ দিলেন বিএনপিকে : বকশীবাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের সশস্ত্র উপস্থিতি ও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসকে দেখতে যান। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপিই অরাজকতা করেছে, তাদের অভ্যাস এমনই। হাসপাতালের মতো নিরাপদ স্থানেও তারা হামলা করেছে। এমপিদের মধ্যে অত্যন্ত ভদ্র ছবি বিশ্বাসকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোথায় হামলা করেছে? বিএনপিই তো একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এমপিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হলেও পুলিশ তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। আদালতের মতো নিরাপদ স্থানে হাজার হাজার নেতা-কর্মী আসার কী প্রয়োজন ছিল? তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিচারকাজ ভণ্ডুল করা।’ হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা পুরোপুরি নাকচ করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, এ-সংক্রান্ত মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment